ভোলায় ক্যাপসিক্যামে ভাগ্য বদল চরাঞ্চলবাসীর

ইকরামুল আলম, ভোলা
| আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:২১ | প্রকাশিত : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৮:১১

ভোলায় বিদেশি সবজি ক্যাপসিক্যাম চাষে চরাঞ্চলের কৃষকদের ভাগ্য বদল হতে শুরু হয়েছে। মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলগুলোতে মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় এ সবজি আবাদে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। ফলে বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ক্যাপসিক্যাম আবাদ হয়েছে দ্বিগুণ। তাই বিদেশি এ সবজি চাষ করে ভাগ্য বদল করেছেন অনেক চাষি। তবে ক্যাপসিক্যাম চাষে সরকারি সহযোগিতা পেলে চরাঞ্চলগুলোতে এ সবজির বিপ্লব ঘটানো সম্ভব বলে মনে করছেন চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর ভোলা জেলায় ক্যাপসিক্যাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪ হেক্টর। আর আবাদ হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি, অর্থাৎ ৩০ হেক্টর। এর মধ্যে ভোলা সদর উপজেলায় ১৫ হেক্টর ও দৌলতখান উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে ক্যাপসিক্যামের আবাদ হয়েছে।

চরাঞ্চলের কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ভোলা সদরের মাঝের চরে প্রায় ৬-৭ বছর আগে কাচিয়া ইউনিয়নের মনির পাঠান নামে এক কৃষক প্রথমে ১০ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ক্যাপসিক্যাম চাষ করেন। আর পরীক্ষামূলক চাষেই সফলতা পেয়েছেন তিনি। এর পরের বছরই তিনি বড় পরিসরে ক্যাপসিক্যাম চাষ শুরু করেন এবং সফল হন। এরপর থেকে তার দেখাদেখি অন্য চাষিরাও ক্যাপসিক্যাম চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

ক্যাপসিক্যাম চাষে তেমন কোনো পোকা-মাকড়ের আক্রমণ না থাকা ও অধিক লাভজনক হওয়ায় স্বাবলম্বী হচ্ছেন কৃষকরা। আর দিনদিনই বাড়ছে চাষিদের সংখ্যা। ভোলার মাঝের চরে বর্তমানে দেড় থেকে দুইশ’ চাষি ক্যাপসিক্যাম চাষ করছেন। এ বছরও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ব্যাপক ফলন হয়েছে। আর পাইকারি বাজারেও এর ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকরা।

ভোলা সদরের কাচিয়া মাঝের চরের ক্যাপসিক্যাম চাষি হান্নান জানান, এ বছর তিনি প্রায় দুই একর জমিতে ক্যাপসিক্যাম চাষ করেছেন। এতে তার প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্যাপসিক্যাম বিক্রি করেছেন। ক্ষেতে আরো যে ফসল আছে তাতে আরো ৫ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন।

একই এলাকার চাষি হাসেম কেরানী জানান, এই বিদেশি সবজি চাষ করে অনেক লাভ হয় শুনে তিনি এবছর তিন একর জমিতে ক্যাপসিক্যাম চাষ করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, বীজ, সার-ওষুধ ও জমির লগ্নিসহ সব মিলিয়ে ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনি সাত লাখ টাকার ক্যাপসিক্যাম বিক্রি করেছেন। আরো সাত লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন।

ক্যাপসিক্যাম চাষি সিদ্দিক জানান, আগে ভোলার এ চরে ২৫-৩০ জন চাষি এ সবজি চাষ করতেন। এখন এখানে দেড় থেকে দুইশ’ চাষি রয়েছে। দিনদিন এ বিদেশি সবজির চাষে কৃষকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরো জানান, এটি লাভজনক একটি ফসল।

হাসেম নামে এক বেপারী জানান, আমরা এ সবজি ক্ষেত থেকে তুলে প্যাকেট করে ঢাকার পাইকারি বাজারে বিক্রি করি। পাইকারি বাজারের এ সবজির চাহিদা অনেক। প্রতি কেজি বর্তমানে দেড় থেকে দুইশ’ টাকায় বিক্রি হয়।

তিনি আরো জানান, ঢাকার থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় এমনকি বিদেশেও এ সবজি রপ্তানি করা হয়। এছাড়াও এ সবজি চাষ করে অনেক কৃষক তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন।

ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ জানান, মাঠ পর্যায়ে আমাদের কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সময়োপযোগী সঠিক পরামর্শ দেওয়ার ফলে ভোলা জেলায় প্রতি বছরের মত এবারও ক্যাপসিক্যামের ব্যাপক ফলন হয়েছে। এবছর ক্ষেতে কোন প্রকার পোকা পাকর আক্রমণ নেই। তাই চাষিরা আগের চেয়ে অনেক লাভবান হবে বলে আমরা আশা করছি। এ সবজি চাষ করে চরাঞ্চলের অনেক মানুষ তাদের ভাগ্য বদল করেছেন বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

(ঢাকাটাইমস/৩ফেব্রুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

মির্জাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল

রিভিউয়ের মাধ্যমে হোল্ডিং ট্যাক্স সহনীয় পর্যায় নিয়ে আসা হবে: সিসিক মেয়র

এসএসসির ফলাফলে গোপালগঞ্জ জেলায় তৃতীয় রাবেয়া-আলী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ

নড়াইলে বজ্রপাতে স্কুলছাত্র ও গাভীর মৃত্যু

টানা দ্বিতীয়বার ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন মিরাজুল ইসলাম

সালথায় ১২ কেজি গাঁজাসহ তিন মাদককারবারি গ্রেপ্তার

সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে সিরাজদিখান রিপোর্টার্স ইউনিটির মানববন্ধন 

সোনারগাঁয়ে দুই কোটি টাকার ইয়াবাসহ কারবারি গ্রেপ্তার

এসএসসিতে যশোর বোর্ডে সেরা সাতক্ষীরা

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটি

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :