ট্রলার ছিনতাই করতে বাবা-ছেলেকে হত্যা

বরিশাল ব্যূরো, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৭ জুলাই ২০২০, ২০:২৭
অ- অ+

ট্রলার ছিনতাই করতে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় চাঁই বিক্রি করতে আসা বাবা-ছেলেকে। নির্মম এ হত্যায় জড়িত তিনজন গ্রেপ্তারের পর হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এছাড়াও ছিনতাই করা ট্রলার মোবাইল সেটসহ বেশকিছু আলামত উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার বরিশাল জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- বাকেরগঞ্জের বাদশা হাওলাদার, একই উপজেলার গোমা এলাকার শাহীন খাঁ ও একই এলাকার সানি হাওলাদার। এদের মধ্যে বাদশা ঘটনার মূলহোতা ও তার বিরুদ্ধে বাকেরগঞ্জ থানায় দস্যুতা, চুরিসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। তাদের হত্যার শিকার বাবা ছেলে হলেন- পিরোজপুরের কলারদোনিয়া এলাকার বাসিন্দা বাবা মো. হেলালউদ্দিন (৫৫) ও ছেলে মো. ইয়াসিন হাওলাদার (২০)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তারদের দেয়া তথ্যানুযায়ী ট্রলার ছিনতাই করার জন্য বাবা-ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। ছিনতাই করা ট্রলার বিক্রি করতে গিয়েই ঢাকার সদরঘাট সংলগ্ন তেলঘাট এলাকা থেকে ঘাতকদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার জানান, গত ৩ জুলাই সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরলক্ষ্মী পাশা এলাকার একটি বাগানের মধ্যে থেকে অজ্ঞাতনামা ২০/২২ বছরের যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। পরের দিন ৪ জুলাই সকাল ৮টার দিকে একই এলাকার নদীর ধারে ভাসমান অবস্থায় ৫৫ বছরের অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রথমে তাদের পরিচয় অজ্ঞাত থাকলেও পরে নিশ্চিত হওয়া যায়, মরদেহ দুটি পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার কলার দোয়ানিয়া এলাকার মো. হেলাল উদ্দিন ও তার ছেলে ইয়াসিন হাওলাদারের।

তিনি জানান, বাবা-ছেলে উভয়ে মাছ ধরার চাঁই তৈরি করে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করত। গ্রেপ্তাররা তাদের হত্যা করে আনুমানিক চার লাখ টাকা মূল্যের মায়ের পরশ নামক একটি ট্রলার, নগদ টাকা-পয়সা, নিহত হেলালের ব্যবহৃত একটি মোবাইল নিয়ে পলায়ন করে। পরে জেলা পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ একটি টিম মোবাইল ফোনের সূত্রধরে ঘাতকদের অবস্থান নিশ্চিত হয়। পরে ঢাকা জেলা পুলিশের সহায়তায় ৬ জুলাই ঢাকার সদরঘাটের তেলঘাট এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এসপি সাইফুল ইসলাম আরো জানান, জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়- তারা হত্যার ৪/৫ দিন আগে থেকেই ভিকটিমদের ওপর নজর রাখে। ঘটনার দিন ৬০টি মাছ ধরার চাঁই কেনে। পরে চাঁইগুলো তাদের এলাকায় পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ করে। পূর্ব থেকেই পরিকল্পনা মতো বাদশা, শাহীন এবং সানি তাদের ট্রলারে উঠে। পরে তারা চরলক্ষ্মীপাশা এলাকায় পৌঁছে ট্রলার থামানো হয়। তীরে পৌঁছে ইয়াসিনকে টাকা দেয়ার কথা বলে ট্রলার থেকে নামিয়ে একটু দূরের বাগানের দিকে নিয়ে যায় সানি এবং শাহীন। ওই সময় পেছন থেকে ছুরি দিয়ে ইয়াসিনের গলা কাটে বাদশা। এ সময় সানি ও শাহীন তার দুই পা ধরে রেখে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে ঘাটে এসে বাবা হেলালকে শাহিন ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দেয়। পরে মূলহোতা বাদশা তার পেটের দুই পাশে ছুরি দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে নদীর পানিতে ডুবিয়ে দেয়। পরে বাবা ছেলের কাছে থাকা সাড়ে ৩ হাজার টাকা, একটি মোবাইল সেট, ট্রলার ও পরিধেয় কাপড় নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরবর্তীতে ঘাতকরা ট্রলারটি প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকায় বিক্রির সময় আটক হয়।

এদিকে, এ ঘটনায় গত ৪ জুলাই অজ্ঞাতদের আসামি করে হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী নাছিমা বেগম বাকেরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলার আসামি হিসেবে আসামিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাদের জেলে পাঠানো হয়েছে।

জেলা পুলিশের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাঈমুল হক, আনোয়ার সাঈদ ও ফরহাদ সরদার উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/৭জুলাই/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
টয়োটার ব্যবসা হারাচ্ছে নাভানা?
সারজিস বনাম নওশাদ: ভোটে কার পাল্লা ভারি?
মনোহরদীতে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ছাত্রদল নেতা গণধোলাইয়ের শিকার
গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদও জয় করব: নাহিদ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা