জামালপুরে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বন্যা, দুর্ভোগ

জামালপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৫ জুলাই ২০২০, ২২:৪২

যমুনা নদীর পানি অবিরাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ভয়াবহ রূপ ধার করছে জামালপুরের বন্যা পরিস্থিতি। কয়েক জায়গায় সড়ক ও রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে জেলার ৫২ ইউনিয়নের ৫ লক্ষাধিক বানভাসী।

বানভাসীদের দুর্ভোগ কমাতে জেলা প্রশাসন ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখলেও চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল বলে দাবি করছেন জনপ্রতিনিধিরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, যমুনার পানি বৃদ্ধির হার তুলনামূলক কমতে থাকায় পানি আর না বাড়ার আশা করছেন তারা।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, আজ দুপুরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

যমুনা নদীর পানি দ্বিতীয় দফা বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ৬৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫২টি ইউনিয়নের ৫ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে নিম্ন আয়ের দিনমজুর ও শ্রমিকেরা। কাজ না থাকায় খাদ্য সংকটে রয়েছে তারা।

জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের দিনমজুর সোলায়মান হোসেন জানান, বন্যার পানি থাকায় কোনো জায়গায় কাজ পাচ্ছেন না তিনি। তাই পরিবার নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন পার করছেন তারা। এ পর্যন্ত কোনো ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগও করেন তিনি।

একই এলাকার আরেকজন দিনমজুর মোহাম্মদ আলী জানান, বন্যার অনেক আগে থেকেই তাদের উপার্জন অনেক কম। তার মধ্যে বন্যার কারণে কাজ নেই বললেই চলে। অনেকেই ত্রাণ পেয়েছে,। কিন্তু তারা এখনো কিছু পাননি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চিকাজানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ জানান, তিনি এ পর্যন্ত সাড়ে তিন মেট্রিক টন চাল পেয়েছেন। ৩০০ লোককে তিনি ত্রাণ সহায়তা দিতে পেরেছেন। তার ইউনিয়নের বাকি সাড়ে ৪ হাজার লোক বঞ্চিত হয়েছে। তিনি ত্রাণ তৎপরতা বৃদ্ধি করতে সরকারের কাছে আবেদন জানান।

একই চিত্র জেলার প্রায় সব কয়েকটি উপজেলায়।

তবে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, বর্তমান সময়ে যথেষ্ট পরিমাণ ত্রাণ জেলা প্রশাসনের কাছে মজুদ রয়েছে। পর্যায়ক্রমে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী ত্রাণেরর যোগ্য সকলকে সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

আর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ জানান- যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির হার তুলনামূলকভাবে কম। তাই তিনি আশা করছেন যমুনার পানি কিছুটা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার ভেতর যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি বা কমার বিষয়টির সার্বিক ধারণা পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

এদিকে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের রেললাইন বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জামালপুর- দেওয়ানগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষনা করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে বিপাকে পড়েছে ট্রেনের যাত্রীরা। দেওয়ানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার আব্দুল বাতেন জানান- বন্যার পানিতে রেললাইন তলিয়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে বন্যার পানি কমার পর আবার ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে আশা করছেন তিনি।

এছাড়া দেওয়ানগঞ্জের তারাটিয়া-সানন্দবাড়ি পাকা সড়কটি বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে যানবাহন চলাচল।

বন্যার পানির প্রবল তোড়ে জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার মহিষবাতান-মাহমুদপুর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের ৫০ মিটার ভেঙ্গে যাওয়ায় সেখানকার ১০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। সেখানকার বাসিন্দারা উচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :