ইতালি বিএনপির সেই নেতার দেশবিরোধী প্রচারণা অব্যাহত
ইতালি বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহ তাইফুর রহমান ছোটন এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন দেশবিরোধী প্রচারণা।
শাহ তাইফুর রহমান ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বারবার বলেন, বাংলাদেশ করোনা পরিস্থিতিতে দোজখে পরিণত হয়েছে এবং বাংলাদেশে কোন প্রকার চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই।
এর আগে তিনি ইতালির মিডিয়ায় সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রায় দশ হাজার প্রবাসী রয়েছে যারা ইতালি আসতে চায়। কারণ, আমি ধারণা করি- দশ লাখের বেশি বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং সেখানে কোন প্রকার চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। বাংলাদেশ একটা দোজখে পরিণত হয়েছে। সেই দোজখ থেকে দশ হাজার প্রবাসী পালিয়ে ইতালি এসে বাঁচতে চায়। তাই ইতালির উচিত তাদের গ্রহণ করা। তা না করা হলে তারা দোজখে ছটফট করে মারা যাবে।
আর তার এ বক্তব্যের পরেই নড়ে চড়ে বসে ইতালি সরকার।
অনেকেই মনে করেন, বাংলাদেশ সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে গিয়ে ইতালিতে বসবাসকারী প্রায় দুই লাখ বাংলাদেশির ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছেন। ইতালিতে বাংলাদেশিদের সাময়িক সময়ের জন্য প্রবেশ নিষিদ্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে ইতালিপ্রবাসী বিএনপিপন্থী নেতা শাহ তাইফুর রহমান ছোটন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি গণমাধ্যমে বলেন, বৈশ্বিক করোনা সংকটের সময়ও বিএনপি নেতারা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন না করে দেশবিরোধী অপপ্রচার ও মিথ্যাচারে লিপ্ত রয়েছেন।
কাদের বলেন, সরকারের বিরোধিতা করতে গিয়ে বিএনপি দেশের বিরোধিতায় নেমেছে, মিথ্যাচার করছে। আর এসব কারণেই বিএনপি দিনদিন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।
‘ঢাকাটাইমসে’ইতালি বিএনপি নেতার সংবাদ প্রকাশের পর ওবায়দুল কাদের বলেন, সম্প্রতি ইতালিপ্রবাসী বিএনপির এক নেতার দেশবিরোধী অসত্য বক্তব্য প্রবাসীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি করেছে। ওই বিএনপি নেতা বলেছেন, বাংলাদেশে নাকি ১০ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত, দেশে কোনও চিকিৎসা নেই এবং এ কারণে ১০ হাজার মানুষ ইতালির পথে রয়েছে।
বিএনপি নেতার এমন বক্তব্যকে মিথ্যাচার আখ্যা দিয়ে এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বলেন, যারা ইতালি যাচ্ছে তাদের কাছে নাকি ভুয়া রিপোর্ট রয়েছে। বিএনপি নেতাদের এ ধরনের আজগুবি ও মিথ্যা বক্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে ছোট করা হচ্ছে। লাখ লাখ প্রবাসীকে অস্থিরতায় ফেলে দেওয়া এমন অসত্য তথ্য দিয়ে বিএনপি নেতার এ বক্তব্যে ইতালি প্রবাসীরাসহ পুরো জাতি ক্ষুব্ধ। দেশে-বিদেশে বিএনপি যে ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে লিপ্ত- তা আবারও প্রমাণ হলো।
এদিকে ইতালি বিএনপি নেতার দেশবিরোধী বক্তব্যে ইউরোপজুড়ে বইছে নিন্দার ঝড়। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিএনপির এ নেতাকে রাষ্ট্রদ্রোহী বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে। দেশদ্রোহী এমন বক্তব্য দেয়ায় পুরো জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে এবং তার এমন বক্তব্য প্রত্যাহার করার দাবি জানান ইউরোপপ্রবাসী বাংলাদেশিরা।
এ ব্যাপারে জার্মান আওয়ামী লীগের সভাপতি বসিরুল আলম চৌধুরী সাবু বলেন, ইতালি বিএনপি নেতার দেশবিরোধী বক্তব্যের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই।
তিনি আরো বলেন, জার্মান আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আগামী ২৭ জুলাই অনলাইনে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আ.লীগের নেতৃবৃন্দকে তিনি প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানান।
এছাড়া ইতালি বিএনপি নেতার দেশবিরোধী বক্তব্যের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছেন সর্ব ইউরোপিয়ান আ.লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক খোকন শরীফ, ফ্রান্স আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ কাশেম ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দিলওয়ার হোসেন কয়েস, নেদারল্যান্ডস আ.লীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন তপন ও সাধারণ সম্পাদক মুরাদ খান, জার্মান আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্বাস আলী চৌধুরী, সুইডেন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির ও সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আলী খান, বেলজিয়াম আ.লীগের সভাপতি শহিদুল হক ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর চৌধুরী রতন, পর্তুগাল আ.লীগের সভাপতি জহিরুল আলম জসিম ও সাধারণ সম্পাদক শওকত ওসমান, সুইজারল্যান্ড আ.লীগের সভাপতি তাজুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল খান, স্পেন আ.লীগের সভাপতি এস আর আই এস রবিন ও সাধারণ সম্পাদক রিজভি আলম, ডেনমার্ক আ.লীগের সভাপতি মোস্তফা মজুমদার বাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, ফিনল্যান্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালেহ আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম, গ্রিস আ.লীগের সভাপতি মান্নান মাতুব্বর ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল হাওলাদার, অস্ট্রিয়া আ.লীগের সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল কবির, নরওয়ে আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগের আহব্বায়ক বেলাল হোসেন ও সদস্য সচিব ইকবাল আহমেদ, মাল্টা আ.লীগের সভাপতি মশিয়ার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক কাওসার আমিন হাওলাদার, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল ও বিশেষজ্ঞ পরিষদ, ইউরোপ (নর্ডিক)-এর সভাপতি মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী হেদায়েতুল ইসলাম শেলী, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান প্রমুখ। তবে ইতালি আ.লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ না করায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
(ঢাকাটাইমস/২১জুলাই/এলএ)