সাতক্ষীরায় মৎস্যজীবী হত্যায় গ্রামবাসীর বিক্ষোভ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ আগস্ট ২০২০, ১৯:৫০

সাতক্ষীরার তালা সদরের জেয়ালানলতা গ্রামের মৎস্যজীবী লুৎফর নিকারীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে সরদার মশিয়ার রহমান ও তার বাহিনীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সাতক্ষীরা শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে গ্রামবাসী। বুধবার বেলা ১১টায় শহরের খুলনা রোড মোড় এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেন হাজার হাজার সাধারণ মানুষ।

সরদার মশিয়ার ও তার বাহিনীর ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠে গোটা এলাকা। সেখান থেকে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াতের কাছে ময়নাতদন্তের সঠিক রিপোর্টের দাবিতে গ্রামবাসীর পক্ষে স্মারকলিপি তুলে দেন আবু হায়াত নিকারী।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন- রুহুল আমিন নিকারী, আবু হায়াত নিকারী, সালেহা বেগমসহ আরও অনেকে।

তারা বলেন, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান সরদার মশিয়ার ও সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে লুৎফর নিকারী প্রাণ হারিয়েছে। এই সন্ত্রাসীরা তালার সাধারণ খেঁটে খাওয়া মানুষকে অতিষ্ট করে তুলেছে। আমরা এই সন্ত্রাসী বাহিনীর বিচার চাই।

খুলনা রোড মোড় থেকে বিক্ষোভ নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হাজির হন এসব মানুষ। এরপর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে খুনিদের শাস্তির দাবি জানান।

এরপর জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের মাধ্যমে খুনি বাহিনীর দৃষ্টান্তুমূলক শাস্তি ও দলীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন গ্রামবাসীর পক্ষে রুহুল আমিন নিকারী।

এ সময় জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন। তিনি বলেন, স্মারকলিপিটি দ্রুত সময়ের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর নিকট পাঠানো হবে। এছাড়া ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। এরপর শহরের প্রধান প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিলসহ হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে প্রেসক্লাবে হাজির হন গ্রামবাসী।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, হত্যার ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এক সময়ের দক্ষিণাঞ্চলের ত্রাস পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক প্রধান মৃণাল বাবুর সহচর ও যার পরিচিতি সন্ত্রাসী মৃনালের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে তিনিসহ এই গং জোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। হত্যাকাণ্ডটি স্ট্রোকে মারা গেছে বলে রূপ দিতে তৎপর এই চক্র। এই চক্রের কেউই আওয়ামী লীগের লোক নয়। তবে বর্তমানে আওয়ামী লীগের হাইব্রিড হয়ে জনগণকে অতিষ্ট করে তুলেছে। সরদার মশিয়ার রহমানের ভাই তালা সদরের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সরদার জাকির হোসেনসহ একত্রে তালা উপজেলাজুড়ে সন্ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করে চলেছে। সরদার জাকিরও পূর্বে জাতীয় পার্টি, তারপর বিএনপি এখন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি পদ পেয়েছেন। নৌকার টিকিটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এই পরিবারের বাবা ও ভাইয়েরা কেউ জামায়াত নেতা, কেউ জাতীয় পার্টি নেতা, আবার কেউ আওয়ামী লীগ নেতা সেজে বসে আছেন। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে চলেছে। ক্ষমতা পেয়ে সাধারণ জনগণের উপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।

তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তিনবার নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমারের ওপরও চলে এই বাহিনীর আক্রমণ। তালা সদরের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম নজরুল ইসলামের ওপরও ইতিপূর্বে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে সরদার মশিয়ার ও তার বাহিনী। তালার কিসমতঘোনা এলাকার কেষ্ট ঋষিকেও মারপিট করেছে। সরদার জাকির ইতোপূর্বে তালা থানার একজন এসআইকেও মারপিট করে। পুলিশের পক্ষ থেকেও এ ঘটনায় মামলা হয়।

প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে তালা উপজেলার নলবুনিয়া বিলের সরকারি খালে মাছ ধরার সময় সেলিম নিকারীকে আটক করে মারপিট করে সরদার মশিয়ার, তার সহযোগী তুহিন শেখ ও রনি। সেলিম নিকারীকে বাঁচাতে গেলে বাবা লুৎফর নিকারীকে মারপিট করে তারা। ঘটনাস্থলেই নিহত হন মৎস্যজীবী লুৎফর নিকারী।

(ঢাকাটাইমস/১৯আগস্ট/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :