সেনবাগে দলবেঁধে ধর্ষণ: মামলা তুলে নিতে গৃহবধূকে হুমকি

নোয়াখালী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৯:১৯

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ (৩২) হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন। একদিকে পাশবিক নির্যাতনের যন্ত্রণা, অন্য দিকে মামলা তুলে নিতে আসামিদের হুমকি প্রদান ও চাপ প্রয়োগে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি।

শনিবার বেলা ১১টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে কথা হয় চিকিৎসাধীন ওই নারীর সাথে। দেখা গেছে, দুজন নারী পুলিশের প্রহরায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গণধর্ষণের শিকার দুই সন্তানের জননী।

ওই নারী অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেনবাগ থানায় গণধর্ষণের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। পুলিশ ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত স্থানীয় বীজবাগ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বারসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। আসামি গ্রেপ্তার হওয়ার পর ইউপি মেম্বার ও মামলার অন্য আসামি পক্ষের লোকজন দফায় দফায় তার বাবার বাড়ি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন প্রকার হুমকি ও মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন। তাদের হুমকিতে নারী ও তার বাবার পরিবারের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তিনি তার সর্বনাশকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক নাবিলা চৌধুরী জানান, গণধর্ষণের শিকার নারী শুক্রবার বিকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে। ধর্ষণ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে শনিবার বিকালে নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল সরকারি মেডিকেল কলেজ পরীক্ষাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। ধর্ষণ ঘটনার সাত দিন পর পরীক্ষা করতে আসায় ধর্ষণ আলামত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

সেনবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল বাহার জানান, গণধর্ষণ মামলায় ১১ আসামির মধ্যে চারজন সরাসরি ধর্ষণ করেছে, একজন পাহারা দিয়েছে এবং বাকি ছয়জন ধর্ষণ ঘটনার শালিশ বৈঠক করে ধামাচাপা দেওয়া, ধর্ষিতার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া ও তাকে খারাপ নারী হিসেবে আখ্যা দিয়ে বেধড়ক পিটুনি দিয়ে আহত করার অপরাধে আসামি করা হয়েছে। পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৮-১০ দিন আগে পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে ওই গৃহবধূ সেনবাগ উপজেলার কাজীরখিল স্বামীর বাড়ি থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট এলাকায় বাবার বাড়িতে চলে যান। পরে ঝগড়ার বিষয়টি নারীর স্বামীর ঘনিষ্ট বন্ধু সেনবাগ উপজেলার কাজীরখিল গ্রামের দিদারকে অবগত করেন। দিদার গত ৫ সেপ্টেম্বর তাকে ফেনী পার্কে দেখা করতে বলেন। ওই দিন সকালে ফেনী পার্কে তার সাথে দেখা করেন গৃহবধূ। দিদার তাকে সারাদিন বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে রাতে স্বামীর বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে সেনবাগ উপজেলার কাজীরখিল গ্রামের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে দিদার ও তার তিন সহযোগী রাতভর নারীকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু বকর ছিদ্দিক শালিস বৈঠকে নারীর কাছ থেকে সাদা কাগজ স্বাক্ষর নিয়ে তাকে চরিত্রহীনা আখ্যা দিয়ে মেম্বারসহ ৩-৪ জন লাঠি দিয়ে বেদম পিটিয়ে আহত করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

(ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :