লাভজনক হওয়ায় পানচাষে ঝুঁকছেন চিরিরবন্দরের কৃষকরা

মানিক হোসেন, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর)
| আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২০, ১৪:৫০ | প্রকাশিত : ১৪ নভেম্বর ২০২০, ১৪:১৫

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে দিন দিন বাড়ছে পানচাষ। ধান, আলুসহ অন্যান্য ফসলের চেয়ে পানচাষ লাভজনক হওয়ায় অনেকেই ঝুঁকছেন পানচাষে। উপজেলার বেশকিছু গ্রামের মাঠে নিজ মেধা ও উদ্যোগে পানচাষ করে ব্যাপক সফলতা পাচ্ছেন কৃষকরা।

বিঘাপ্রতি পানের বরজে প্রায় এক লাখ টাকা খরচ করে পরবর্তী বছর থেকে প্রতি বছর লাভ করছেন দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। এখানকার উৎপাদিত পান উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে ৭৫ ভাগ পান সরবরাহ করা হচ্ছে আশপাশের বিভিন্ন জেলায়।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সাত একর জমিতে পানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার ইসুবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণনগর গ্রামেই ৮৫ ভাগ পানচাষ হয়েছে। বর্তমানে উপজেলার ১৮টি পরিবার এই পানচাষের সঙ্গে জড়িত।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবিঘা জমির পানের বরজে মাটির আইল, বেড়া, ছাউনি, শ্রমিক, পানের লতাসহ এক লাখ টাকা প্রাথমিক অবস্থায় খরচ হয়। পরের বছর থেকে খরচ খুবই সামান্য হয়। কারণ একটি পানের বরজ তৈরির পর মাটির আইল, বেড়া, ছাউনি সংস্কার ছাড়া ৪০-৪৫ বছর পর্যন্ত পানের বরজ অক্ষুণ থাকে। সেখান থেকে পান পাওয়া যায়। একটি পানের বরজ থেকে উৎপাদন বেশি হলে দুই পোয়া (১২৮টি) পর্যন্ত পান পাওয়া যায়। বড় পান পুরাতন এক পোয়া তিন হাজার টাকা থেকে চান হাজার টাকা, মাঝারি পান এক পোয়া এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে দুই হাজার ৫০০ এবং ছোট পান ৫০০ টাকা থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

পানচাষি লক্ষীকান্ত জানান, চিরিরবন্দরে দুই প্রকার পান চাষ হয়, মিষ্টি পান ও সাচি পান। তবে উপজেলায় মোট চাষের ৭০ ভাগই মিষ্টি পান।

পানচাষি দীনেশ চন্দ্র দত্ত বলেন, ‘পান চাষ করেই আমার সংসার চলে, আমি এবং আমার স্ত্রী দুইজনেই বরজে কাজ করি। এখান থেকেই আয় করে সংসারের খরচসহ সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালাই।’

পানের বরজে কাজ করা যুগেশ, সুচীল ও কমলেশ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন যাবত এখানকার পানের বরজে কাজ করে আসছি। এখানে কাজ করে যা উপার্জন করি, তা দিয়েই আমাদের সংসার চলে।’

পানচাষি সনাতন রায় জানান, দক্ষিণনগর গ্রামের পানচাষিরা বংশীয়ভাবে বাপ-দাদার পুরোনো পেশাকে আঁকড়ে ধরেই পানের বরজে পান চাষ শুরু করেন। গ্রাম কিংবা শহরে অতিথি আপ্যায়নে এখানকার পান সুস্বাদু হওয়ায় এ পানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে এই পানচাষে এলাকায় অনেকেই সাফল্য অর্জন করেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, চিরিরবন্দরের মাটি পান চাষের জন্য বেশ উপযুক্ত হওয়ায় এখানে দীর্ঘদিন ধরে প্রচুর পরিমাণে পানের চাষ হয়ে আসছে। বর্তমানে এই এলাকার পানচাষিরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পানের চাষ করেছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সকল প্রকার পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/১৪নভেম্বর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :