করোনায় মৃত্যুর হার বাড়াচ্ছে শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৮ এপ্রিল ২০২১, ২১:২৫| আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২১, ২১:২৮
অ- অ+
ফাইল ছবি

টানা তৃতীয় দিনের মতো করোনায় শতাধিক মৃত্যু দেখল বাংলাদেশ। চলতি এপ্রিল মাসে ১৮ দিনে করোনায় এক হাজার ৩৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর গত তিন দিনেই মৃত্যু হয়েছে ৩০৪ জনের। গত তিন দিনের মৃত্যুহার বিবেচনা করলে এই ভাইরাসে প্রতি ১৫ মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। আর এপ্রিল মাসের মৃত্যু হার বিবেচনা করলে প্রতি ১৮ মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। হঠাৎ করে মৃত্যুর হারের এই ঊর্ধ্বগতি শঙ্কিত করছে সবাইকে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে তিন হাজার ৬৯৮ জনের শরীরে। এ নিয়ে দেশে মোট সাত লাখ ১৮ হাজার ৯৫০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে কোভিড আক্রান্তের হার ১৯.০৬ শতাংশ। দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা সাত হাজারের উপরে চলে যাওয়ার পর চার হাজারের নিচে চলে আসা স্বস্তির খবর। তবে মৃত্যুর সংখ্যার ঊর্ধ্বগতি উদ্বেগের কারণ বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

রবিবার একটি অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, দেশে গত দেড় মাসে দশগুণ করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘করোনা ভয়াবহভাবে বাড়ছে। গত দেড় মাসে এক লাখ ৬০ হাজার জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, যা এর আগের দেড় মাসে ছিল মাত্র ১৫ হাজার জন।’

এদিকে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) যে তথ্য জানিয়েছে তা রীতিমতো আতঙ্কিত হওয়ার মতো। সংস্থাটি জানিয়েছে, হাসপাতালে ভর্তির পাঁচ দিনের মধ্যে দেশে ৪৮ শতাংশ করোনা রোগী মারা যাচ্ছে।

২৮ জানুয়ারি থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে তথ্য পর্যালোচনা করে আইইডিসিআর বলছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির হার ৪৪ শতাংশ। এ সময়ে আক্রান্ত রোগীদের প্রায় বড় অংশ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাকিরা (৩৩ শতাংশ) প্রাতিষ্ঠানিক বা হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। আর হাসপাতালে করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে ৪৮ শতাংশ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পাঁচ দিনের মধ্যে মারা গেছেন। আর পাঁচ থেকে ১০ দিনের ভেতরে মারা গেছেন ১৬ শতাংশ।

আইইডিসিআরের তথ্য বলছে, কোভিড-১৯ মহামারিতে গেল মার্চে মৃতের সংখ্যা ছিল ৬৩৮, যা এপ্রিলের প্রথম ১৫ দিনে এসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪১ এ। মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে ৩২ দশমিক ২ শতাংশ।

দেশে করোনা শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। এরপরের দুই মাস দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা তিন অংকের মধ্যে থাকলেও সেটা বাড়তে বাড়তে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। এরপর বেশ কিছুদিন দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা কমতে কমতে এক পর্যায়ে তিনশ'র ঘরে নেমে এসেছিল। তবে গত মার্চের শুরু থেকেই শনাক্তে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একই সাথে বাড়তে থাকে মৃত্যুর সংখ্যাও।

চিকিৎসক এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, হাসপাতালগুলোর ওপর যে হারে চাপ বাড়ছে, তাতে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা সেবা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেও সেই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মানুষ সতর্ক না হলে পুরো ঢাকাকে হাসপাতাল বানালেও সামাল দেয়া যাবে না।

এজন্য সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধির ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকারও চাচ্ছে মানুষকে সচেতন করে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের হার কমিয়ে আনতে। ইতিমধ্যে সরকারের ঘোষিত সর্বাত্মক লকডানের পাঁচ দিন কেটে গেছে। চলমান লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়তে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, অন্তত দুই সপ্তাহ কঠোর লকডাউন টিকিয়ে রাখতে পারলে করোনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে।

(ঢাকাটাইমস/১৮এপ্রিল/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মা-ছেলেমেয়েকে হত্যা: আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষার পর আর ‘স্বীকারোক্তি দেননি’ বাচ্চু মেম্বার
আজ হাসিনা-কামাল-মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনে দ্বিতীয় দিনের শুনানি
প্রথম প্রেমের স্পর্শ: পর্ব ১০- একটি অসমাপ্ত কবিতার ঘরে ফেরা
২৭ দিনে দেশে ফিরলেন ৭৩ হাজার ৪৯৩ হাজি, ১০ জুন পর্যন্ত ফিরতি ফ্লাইট
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা