সেলিম প্রধানের চালচলনে কি পরিবর্তন আছে? জেনে নিন কারাগারে তার রুটিন...

আশিক আহমেদ, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৩ মে ২০২১, ১২:৩৭
অ- অ+

ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়ার পর দেড় বছরের বেশি সময় ধরে কারান্তরীণ অনলাইন ক্যাসিনো সম্রাট হিসেবে পরিচিত সেলিম প্রধান। কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে বন্দিজীবন কাটছে তার। একসময় আয়েশি জীবনযাপন করলেও এখন কারাগারে সাধারণ বন্দিদের মতই দিন কাটছে ক্যাসিনোর এই মূল হোতার। অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা কামানো এই ক্যাসিনো কারবারির এখন দিন কাটাতে হচ্ছে কারাগারের দেয়া খাবার খেয়েই।

কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের একটি সূত্র জানায়, সেলিম প্রধান একজন সাধারণ বন্দি হিসেবে কারাগারে আছেন। কারাগারটিতে অনেক ভিআইপি বন্দি রয়েছে। এছাড়াও জঙ্গিসহ নানা ধরনের অপরাধে যুক্ত আসামিরাও আছেন। সবাই সেখানে নিয়ম মেনেই চলছেন। ফলে সেলিম প্রধানকে নিয়ে আলাদা কোনো নজরদারি নেই কারাগারের কর্মরত নিরাপত্তা রক্ষীদের।

কারাগারে কিভাবে দিন কাটছে সেলিমের জানাতে চাইলে সূত্রটি জানায়, কারাগার সকালেই ঘুম থেকে ওঠেন সেলিম প্রধান। পরে নিজের মতই করেই দিন পার করেন। কারাগারের ভিতরে আনুষ্ঠানিকতা বাদে বাকি সময় নিজের মতো করেই ঘুমান তিনি।

পরিবারের সদস্যরা কেউ দেখা দেখা করতে আসে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কারাগারের ওই সূত্রটি জানান, করোনার কারণে পরিবারের কেউই আসেন না কারাগারে তার খোঁজ নিতে। তবে প্রতি সপ্তাহে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে থাকেন এই ক্যাসিনো কারবারি।

কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের জেলার দেব দুলাল ঢাকাটাইমসকে বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী সরকারের যে খাবার মেন্যু সেখান থেকেই খাবার খান সেলিম প্রধান। তিনি প্রতিদিন সেহেরিতে ভাত, ডাল, ডিম সবজি খেয়ে থাকেন। এছাড়া ইফতারে ছোলা, পেঁয়াজি, মুড়ি এবং জিলাপি খান। কারাগারে একজন বন্দি যেভাবে থাকেন তিনিও সেভাবেই আছেন। তার ব্যাপারে আমাদের আলাদা কোনো নজরদারি নেই।

২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থাই এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে ব্যাংকক যাওয়ার সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সেলিম প্রধানকে আটক করে র‌্যাব-১। এরপর তার গুলশান, বনানীর বাসা ও অফিসে অভিযান চালিয়ে ২৯ লাখ টাকা, বিপুল বিদেশি মদ ও বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়।

সেখান থেকে সাতটি ল্যাপটপ ও দুটি হরিণের চামড়া জব্দ করার পাশাপাশি সেলিমের কর্মচারী আক্তারুজ্জামান ও রোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়। হরিণের চামড়া উদ্ধারের ঘটনায় ওই দিনই সেলিম প্রধানকে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।

পরদিন ১ অক্টোবর গুলশান থানায় তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও মুদ্রাপাচার প্রতিরোধ আইনে দুটি মামলা করে র‌্যাব।

এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষ থেকে আরও একটি মামলা করা হয়। মাদকের মামলায় ইতোমধ্যে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ। আর অর্থপাচারের মামলাটি এখন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) তদন্তাধীন রয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. মশিউর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে মাদকের মামলায় আমরা চার্জশিট দিয়েছি। আর অর্থপাচারের মামলাটি সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে।

এ ব্যাপারে সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবিরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলায় ইতোমধ্যে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয়া হয়েছে। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।

সেলিম প্রধান ‘প্রধান গ্রুপ’নামে একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের চেয়ারম্যান। এই গ্রুপের অধীনে পি২৪ গেইমিং নামের একটি কোম্পানি আছে, যারা রীতিমত ওয়েবসাইটে ঘোষণা দিয়ে ক্যাসিনো ও অনলাইন ক্যাসিনোর কারবার চালিয়ে আসছিল।

ঢাকাটাইমস/৩মে/এএ/এমআর

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
তেজগাঁও থেকে ছিনিয়ে নেওয়া সৌদি রিয়াল উদ্ধার, ছয়জন আটক
দ্বিতীয় পর্বের সপ্তম দিনের বৈঠক চলছে, এজেন্ডা নির্বাচনী এলাকা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার
আদানির বকেয়া পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ সরকার
২ জুলাই: দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণা চাকরি প্রত্যাশীদের
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা