টিকার বাইরে সিংহভাগ শিক্ষার্থী, নিবন্ধনে হচ্ছে বিশেষ অ্যাপ

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২১:৫৩ | প্রকাশিত : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২১:৫২

দেশে পাবলিকসহ সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই এখনো করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার বাইরে। তাদেরকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নিবন্ধনের আওতায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এজন্য একটি বিশেষ অ্যাপ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসির তথ্য মতে, দেশে বর্তমানে সব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ৩৯ লাখ। তাদের মধ্যে টিকা নিতে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করেছেন মাত্র ১৭ লাখ ৫০ হাজার। সেই হিসাবে অর্ধেক শিক্ষার্থীই এখনো টিকার জন্য নিবন্ধন করেননি। নিবন্ধিতদের মধ্যে মাত্র চার লাখ ৯০ হাজার জন প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন। আর পূর্ণ ডোজ টিকা নিয়েছেন মাত্র ৯০ হাজার শিক্ষার্থী। অর্থাৎ মোট শিক্ষার্থীর ৯০ ভাগেরও বেশি এখনো টিকা নেননি।

বর্তমানে দেশে পাবলিকসহ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ৫০টি এবং ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাদে বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় মোট শিক্ষার্থী সাড়ে ছয় লাখ। তাদের মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় তিন লাখ এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাড়ে তিন লাখের মতো শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন।

এর বাইরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত দুই হাজার ২৬০টি কলেজে মোট শিক্ষার্থী ২৯ লাখ ৭৫ হাজার ৮১৩ জন। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর বড় সাতটি কলেজে মোট শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এসব কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত হয়নি। অবশ্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি সশরীর বা অনলাইনে পরীক্ষা নিচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের অনেকে বলছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকা, অনলাইনে নিবন্ধন করতে সমস্যার কারণে তারা টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারেননি। এই জটিলতা কাটাতে ইউজিসিকে একটি অ্যাপ তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বৈঠকে শিক্ষার্থীদের টিকা সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা হয়েছে। তবে দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে পাঠদান বা বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খোলা এবং শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু করার লক্ষ্যে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকার নিবন্ধন শেষ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষ নিজ নিজ একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদন নিয়ে পাঠদান কার্যক্রম শুরু এবং আবাসিক হল খুলে দিতে পারবে।

শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ইউজিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৭ লাখ ৫০ হাজার শিক্ষার্থী মঙ্গলবার পর্যন্ত সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন সাড়ে চার লাখ শিক্ষার্থী। আর দুই ডোজ নিয়েছেন ৯০ হাজার শিক্ষার্থী। আর ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মীদের ভ্যাকসিন দেওয়া শেষ হয়েছে।

জন্মসনদ দিয়ে নিবন্ধন

এদিকে মঙ্গলবার রাজধানীর ইডেন কলেজে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে সব শিক্ষার্থীকে টিকার নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য যাদের এনআইড নেই তারা জন্মসনদ দিয়ে নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে শিক্ষার্থী হিসেবে ইউজিসির ওয়েবলিংকে প্রবেশ করে নিবন্ধন সম্পন্ন করার পর সুরক্ষা অ্যাপে টিকার নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন।

টিকার নিবন্ধনসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীর জন্য বিশেষ একটি অ্যাপের বিষয়ে ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, যেসব শিক্ষার্থী জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকার কারণে করোনার টিকা নিতে পারছেন না, তাদের টিকার আওতায় আনার জন্য ইউজিসি একটি অ্যাপ তৈরি করবে। সেখানে শিক্ষার্থীরা জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করবে। এরপর ইউজিসি সেসব তথ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। আর শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

(ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/ডিএম/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :