আত্রাইয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আজিমের বাহারি স্বাদের আগুন পান

নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ)
| আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬:৫২ | প্রকাশিত : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬:৪১

‘যদি সুন্দর একটা মুখ পাইতাম মহেশখালীর পানের খিলি তারে বানাই খাওয়াইতাম’ কিংবা ‘পালের লাও পালের লাও পান খেয়ে যাও, ঘরে আছে ছোট বোনটি তারে নিয়ে যাও।’ পান নিয়ে এমন আরও অনেক গান, কবিতা, প্রবাদ আছে যা আমাদের সাহিত্য ভাণ্ডারকে করেছে সমৃদ্ধ।

এক সময় সদর ঘাটের পানের কথা শোনা গেলেও এখন নওগাঁর আত্রাই উপজেলার আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের বজ্রপুর বাজারে আজিম মামার মনকাড়া বাহারি স্বাদের আগুন পান দিন দিন উপজেলাবাসীর কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বাহারি রংয়ের মশলাযুক্ত এ পান মানুষের নজর কাড়ছে। প্রায় অর্ধশত পদের উপকরণ দিয়ে তৈরিকৃত মিষ্টিযুক্ত আগুন পানের স্বাদ নিতে তরুণ-তরুণীরা বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। মুখে দেওয়ার আগে পানে আগুন জ্বেলে দেওয়া হয় বলে এর নামকরণ হয়েছে আগুন পান।

বাঙালি অতিথিপরায়ণ জাতি। খাবারের পর পান দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন বাঙালি জাতির প্রাচীন ঐতিহ্য। সময়ের সঙ্গে হরেক রকম নামে নামকরণ হয়েছে পানের। যেমন: বেনারসি পান, শাহি পান, কাশ্মীরি পান, জামাই-বউ পান, প্রেমিক-প্রেমিকা পান, ভালোবাসার পান, হানিমুন পান আরও কত কী!

যে নামেই ডাকা হয় না কেন পান তো পানই। খেয়ে ঠোঁট লাল করাই এর উদ্দেশ্য। পানে এখন আর কেবল চুন, সুপারি আর খয়েরই ব্যবহৃত হয় না, মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়, মোরব্বা, খেজুর, কিচমিচ, খোরমা, তানশিন, তেরেঙ্গা, এলাচ, চমন বাহার, তরক, ইমাম, নারকেল, সেমাই, ঝুরা ইত্যাদি।

তবে আত্রাইয়ে আজকাল পরিচিতি পেয়েছে নতুন নামের পান। তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বয়স্ক লোক সবার কাছেই এ পান হয়ে উঠছে জনপ্রিয়। সেটা আগুন পান’। বজ্রপুরে পাওয়া যায় বলে সবাই বজ্রপুরের আজিম মামার আগুন পান নামেই পরিচিত এটি।

সরেজমিনে আজিম পান স্টলের মালিক আজিম হোসেনের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা যায়, প্রতি খিলি পানের দাম ১০টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। শাহজাদী ১০, বেনারশ ১৫, আর বোম্বে মাসালা খিলি বিক্রি হয় ৩০ টাকায় এবং পান ভেদে দাম ১০০ টাকা পর্যন্ত।

পানে কী মসলা ব্যবহার করেন এমন প্রশ্ন করতেই মুচকি হাসেন আজিম মামা। তারপর বলতে থাকেন দম না নিয়েই কয়েক ডজন স্বাদ বৃদ্ধিকারী মসলার নাম এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মোরব্বা, খেজুর, খোরমা, তানশিন, তেরেঙ্গা, চমন বাহার, এলাচ, নারিকেল, কিসমিস, সেমাই, ঝুড়া ইত্যাদি। তিনি বলেন, এসব মসলার সবক’টি দেশে পাওয়া যায় না। বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আর এই বাহারি মসলার স্বাদের কারণেই তার দোকানের বিশেষত্ব।

আজিম মামার পান স্টলে পান খেতে আসা বজ্রপুর গ্রামের মা ফার্মেসি মালিক মেহেদী হাসান রুবেলের সঙ্গে কথা বললে তিনি মৃদু হেসে জানালেন, আমি তো আজিম মামার দোকানের পান ছাড়া অন্য কারো দোকানের পান খাই না। আমি প্রায় ৬-৭ বছর ধরে এই দোকানের পান খেয়ে আসতেছি। তার বানানো পান আমার মুখে অন্য রকম একটা স্বাদ এনে দেয়।

পার্শ্ববর্তী বাগমারা উপজেলা থেকে ব্যক্তিগত কাজে বজ্রপুর বাজারে এসেছেন রফিকুল ইসলাম কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে আজিম মামার দোকানে এসেছেন আগুন পান কিনতে শাহাজাদী একটি পান মুখে দিয়েছেন এবং দুই খিলি পান কাগজে মুড়ে নিয়েছেন বাসায় নিয়ে যাবেন বলে। তিনি বলেন আমি যখনই বজ্রপুরে আসি আজিমের দোকানের বাহারি মসলা দিয়ে পান না খেলে আমার অপূর্ণতা থেকে যায়। আর দুই খিলি পান নিয়ে যাচ্ছি বাসায় গিয়ে খাবো।

(ঢাকাটাইমস/ ১১ফেব্রুয়ারি/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :