সীমান্তে সেনা উপস্থিতি কমাতে একমত ভারত-পাকিস্তান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৩ মে ২০২৫, ১০:৩৮| আপডেট : ১৩ মে ২০২৫, ১১:২৪
অ- অ+

পাকিস্তান ও ভারতের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা গত সপ্তাহে সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তে সেনা মোতায়েনের পরিমাণ কমাতে সম্মত হয়েছেন। দুই দেশের মধ্যে কয়েকদিন ধরে চলা শত্রুতা এবং বৃহত্তর সংঘাতের আশঙ্কার পর সোমবার এই আলোচনা শুরু হয়েছে। খবর ডনের।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উভয় দেশের সামরিক অভিযানের মহাপরিচালক (ডিজিএমও) বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে একটি পূর্বনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নেন যা প্রায় ৪৫ মিনিট স্থায়ী হয়। আলোচনাটি মূলত দুপুরের জন্য নির্ধারিত ছিল, কিন্তু বিকেল পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। কিছু সূত্রের মতে, বৈঠকের এজেন্ডা নিয়ে মতবিরোধের কারণে বিলম্ব হয়েছে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষের মতে, পাকিস্তানের মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লাহ এবং ভারতের লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই গুলিবর্ষণ বা কোনো আক্রমণাত্মক বা শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত না হওয়ার জন্য তাদের পারস্পরিক প্রতিশ্রুতি জোরদার করার পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন। বৈঠক সম্পর্কে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি।

যুদ্ধবিরতি পুনর্ব্যক্ত করার পাশাপাশি উভয় পক্ষ সীমান্ত এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় সৈন্য উপস্থিতি হ্রাস করার জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণে সম্মত হয়েছে বলে জানা গেছে, যা ৭ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত চার দিনের উত্তেজনার পর ভঙ্গুর শান্ত পরিবেশের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

পাকিস্তানি কর্মকর্তারা এই আলোচনাকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর আলোচনার প্রাথমিক পর্যায়ের ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, ডিজিএমওরা আরও আলোচনার জন্য ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরও একবার আলোচনায় বসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

শান্ত সময়ে পাকিস্তান এবং ভারত সাধারণত আন্তর্জাতিক সীমান্তে সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী- যথাক্রমে পাকিস্তান রেঞ্জার্স এবং ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করে, যখন নিয়মিত সেনাবাহিনী প্রয়োজনে দ্রুত মোতায়েন করার জন্য কাছাকাছি সেনানিবাসে থাকে। বিদ্যমান যুদ্ধের শর্তাবলি অনুসারে, হেলিকপ্টার সীমান্তের ১ কিলোমিটারের মধ্যে উড়তে নিষেধ করা হয়েছে এবং যুদ্ধবিমানগুলোকে কমপক্ষে ১০ কিলোমিটার দূরে থাকতে হবে।

তীব্র উত্তেজনার সময় উভয় দেশ যুদ্ধকালীন সংগঠন সক্রিয় করে, সীমান্তের কাছাকাছি আক্রমণাত্মক এবং প্রতিরক্ষামূলক ইউনিটগুলোকে পুনঃস্থাপন করে। উত্তেজনা বৃদ্ধির পর, প্রতিরক্ষামূলক বাহিনী সীমান্তে অবস্থান নেয়।

ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, কামান হামলা এবং বিমানঘাঁটিতে হামলার মতো তীব্র উত্তেজনার পর ১০ মে উভয় দেশ ‘পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি করতে সম্মত হওয়ার পর ডিজিএমওদের মধ্যে সর্বশেষ যোগাযোগ হলো।

২২ এপ্রিল ভারত-অধিকৃত কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার অজুহাতে ৭ মে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের আগ্রাসনের ফলে এই সহিংসতা শুরু হয়। পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুস'-এর মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানায়।

উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন মধ্যস্থতার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও চুক্তি কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই লঙ্ঘনের খবর পাওয়া গেছে। উভয় পক্ষই লঙ্ঘনের জন্য একে অপরকে দোষারোপ করেছে এবং সোমবারের বৈঠকের লক্ষ্য ছিল ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতিকে আরও জোরদার করা।

সোমবার রাতে সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখা ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে যে পাকিস্তানি বাহিনী যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি মেনে চলছে। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের বিষয়ে ভারতীয় অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে বলেছেন, ভারত প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ স্থগিত করেছে। তবে সতর্ক করে দিয়েছেন যে ভবিষ্যতের আচরণ পাকিস্তানের অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে বিচার করা হবে।

তিনি বলেন, “আমরা পাকিস্তানের প্রতিটি পদক্ষেপ এই মানদণ্ডে পরিমাপ করব যে পাকিস্তান ভবিষ্যতে কী ধরনের মনোভাব গ্রহণ করবে।

(ঢাকাটাইমস/১৩মে/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সোনার দাম কমে একদিন পরই বাড়লো, ভরি ১৬৯১৮৬
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত
গরমে কাঁচা আম খাওয়ার স্বাস্থ্যগুণ জানলে চমকে উঠবেন
মধ্যরাত থেকে গাজায় তীব্রতর হামলা, নিহত ৫১
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা