সোনাগাজীতে বাণিজ্যিকভাবে ক্যাপসিকামের চাষাবাদ শুরু

ফেনীর সোনাগাজীতে বাণিজ্যিকভাবে বিদেশী সবজি ক্যাপসিকামের চাষাবাদ শুরু হয়েছে। চলতি মৌসুমে সোনাগাজী উপজেলায় প্রায় এক হেক্টর জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও উপযুক্ত মাটি আর কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় বেশ কয়েকজন কৃষক বাণিজ্যিকভাবে এ সবজি চাষাবাদ করেছেন। দেশের অভিজাত হোটেল ও রেস্টুরেন্টে ক্যাপসিকামের ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। ভিটামিন সিসহ অন্যান্য পুষ্টিগুণে ভরা এ সবজি বিদেশে রপ্তানি করেও আয় করা সম্ভব।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চাষিরা আগ্রহী হওয়ায় চরচান্দিয়া ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এলাকায় আবু সাইদ রুবেল ও পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর চরচান্দিয়া এলাকায় শহিদুল্লাহ নামে দুজন কৃষকের জমিতে ক্যাপসিকাম চাষের প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকজন কৃষক ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাণিজ্যিকভাবেও এ সবজির চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সোনাগাজীতে এ ফসলের ভালো ফলনের প্রত্যাশা করছেন চাষিরা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর আশপাশের অনেক চাষি এ সবজির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে আগামী মৌসুমে চাষাবাদের প্রত্যাশা জানান।
চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ক্যাপসিক্যাম চাষি আবু সাঈদ রুবেল জানান, ক্যাপসিকাম সারা বিশ্বেই একটি জনপ্রিয় মূল্যবান সবজি। এটাকে দেশীয় ভাষায় মিষ্টি মরিচ বলেও ডাকা হয়। বাংলাদেশেও এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। ক্যাপসিকামের আকার ও আকৃতি বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তবে সাধারণত ফল গোলাকার হয়। দেশে এ সবজির প্রচলন বেশি না থাকলেও ক্রমেই এর কদর বাড়ছে।
গৃহিনী খাদিজা আক্তার সামান্তা জানান, সালাদ ও সবজি হিসেবে ক্যাপসিক্যাম বেশ সুস্বাদু। পরিবারের সদস্যরা খাবারের সঙ্গে ক্যাপসিক্যাম বেশ পছন্দ করেন।
স্থানীয় রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী আহমদ করিম জানান, রেস্টুরেন্টে সালাদসহ বিভিন্ন খাদ্য তৈরিতে ক্যাপসিক্যাম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। স্থানীয়ভাবে এ সবজির যোগান না থাকায় রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য জেলা থেকে এটি সরবরাহ করতে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। ফেনীতে এ সবজির উৎপাদন হলে স্থানীয় রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা কিছুটা স্বস্তি পাবে।
ক্যাপসিকাম চাষাবাদের বিষয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র নাথ বলেন, এক বিঘায় ক্যাপসিকামের ফলন প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কেজি পর্যন্ত হতে পারে। সবুজ ক্যাপসিকাম প্রতি কেজির বাজারমূল্য দেড়শ টাকা। আর লাল ও হলুদ রঙের ক্যাপসিকাম কেজি ৩৫০ টাকা দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ক্যাপসিকাম চাষিদের প্রতি বিঘায় খরচ পড়ে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘায় ফলন বিক্রি হয় প্রায় দেড় লাখ টাকা। ক্যাপসিকাম চাষে কৃষকের লাভ দ্বিগুণের চেয়েও বেশি।
সোনাগাজী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কাজী শফিউল ইসলাম জানান, ক্যাপসিকাম চাষাবাদের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রদর্শনী ও বীজ এবং সার দেওয়া হচ্ছে। সঠিকভাবে উৎপাদিত সবজির দাম পাওয়া গেলে এসব এলাকার কৃষকরা ক্যাপসিকাম চাষাবাদের দিকে ঝুঁকছে।
(ঢাকাটাইমস/২৩ফেব্রুয়ারি/এসএ)

মন্তব্য করুন