চেনা রূপে ফিরেছে ঈদ উদযাপন

ওমর ফারুক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৩ মে ২০২২, ১৩:১১ | প্রকাশিত : ০৩ মে ২০২২, ১২:৫৩

করোনাভাইরাস মহামারির বিপত্তি কাটিয়ে দুই বছর পর দেশে চেনা রূপে ফিরেছে ঈদ উদযাপন। এবার কোনো বিধিনিষেধ না থাকায় ঈদগাহ ময়দান ও মসজিদে হয়েছে ঈদের জামাত। এতে বিপুল মানুষের অংশগ্রহণ দেখা গেছে। নামাজ শেষে কোলাকুলি এবং কুশল বিনিময়ের মাধ্যমে মুসলামানদের ঈদ উদযাপন শুরু হয়েছে। যদিও সকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিতে বিঘ্ন হয়েছে ঈদের জামাত।

বিগত বছরগুলোতে করোনা মহামারির কারণে ছিলো নানারকম বিধিনিষেধ। জনসমাগম না করা, দূরত্ব বজায় রাখা, করমর্দন-কোলাকুলি থেকে বিরত থাকা ও মাস্ক পরিধানসহ ছিলো নানান স্বাস্থ্যগত নির্দেশনা। যার ফলে ঈদ উদযাপন ছিলো অনেকটাই মলিন।

তবে এবছর করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় ছিলো না কোনো বিধিনিষেধ। মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে পালন করেছে ঈদ। নামাজ শেষে সবাই মেতে উঠেন কুশল বিনিময়া এবং কোলাকুলিতে। ঈদ উদযাপনে বাধা না থাকায় খুশি সবাই।

এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আখলাকুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, গত দুবছর করোনার কারণে নানারকম কড়াকড়ি ছিলো। চাইলেও মন খুলে ঈদ উদযাপন করতে পারিনি। এবার তো আর করোনার ভয় নেই। তাই আনন্দেই সবার সঙ্গে ঈদ পালন করছি।

একই কথা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলামের। তিনি বলেন, গতোবার তো অনেক বিধিনষেধ ছিল। কাউকে বাসায় দাওয়াত দিতে বা দাওয়াত নিতেও দ্বিধা ছিলো। কিন্তু এখন আর সেসব সমস্যা নেই।

করোনার মহামারির পর এবারই বিধিনিষেধহীন ঈদ উদযাপন করছে দেশবাসী। তবে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন।

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ও জাতীয় ঈদগাগে বিপুল মানুষের অংশগ্রহণে এবার ঈদের জামাত হয়েছে। ঈদগাহে জায়গার সংকুলান না হওয়ার অনেক মানুষকে রাস্তায় সারি বেঁধে নামাজে দাঁড়াতে দেখা গেছে।

শুধু এখানেই নয়, সারাদেশের মসজিদ ও ঈদগাহে মুসুল্লিরা নামাজ পড়েছেন। মসজিদ ও ঈদগাহগুলোতে শ্রেণি-পেশা-আর্থিক অবস্থান ভুলে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সবাই নামাজ আদায় করলেন। নামাজ শেষে একই সঙ্গে শোনা হলো খুতবা। এরপর দোয়া ও মঙ্গল কামনায় মুনাজাত শেষে বুকে বুক মিলিয়ে প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হন সবাই।

জাতীয় ঈদগাহে সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের প্রধান জামাত হয়। এতে ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি রুহুল আমীন। খুতবা শেষে মোনাজাতে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দোয়া, দেশের মানুষের সুস্থতা কামনা করা হয়।

সারাদেশে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন খতিব। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার আহ্বান এসেছে তার কাছ থেকে।

জাতীয় ঈদগাহে নামাজের আগে বক্তব্যে এই আহ্বান জানান জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ রুহুল আমিন।

খতিব বলেন, এ দেশ শান্তি-সম্প্রীতির দেশ। এদেশে সব ধর্মের মানুষ সম্প্রীতি নিয়ে বসবাস করে। শান্তি-সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়, আমরা এমন উস্কানিমূলক বক্তব্য পরিহার করব। এধরনের বক্তব্য দেব না।

অপরদিকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত হয় ঈদের প্রধান জামাত। এতে ইমামের দায়িত্ব পালন করেন হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান (সিনিয়র পেশ ইমাম, বায়তুল মোকাররম জাতীয় সজিদ)।

এরপর সকাল ৮টা, সকাল ৯টা, সকাল ১০টায় ও বেলা পৌনে এগারোটায় পর্যায়ক্রমে আরও চারটি জামাত হয়।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পৃথক দুই বাণীতে বাংলাদেশ, মুসলিম উম্মাহ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও বিশ্বশান্তির জন্য প্রার্থনা করেছেন।

ঈদকে মুসলিম উম্মাহর সর্বোচ্চ ধর্মীয় উৎসব হিসেবে উল্লেখ করে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেওয়া তার বাণীতে রাষ্ট্রপতি সকলের প্রতি যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উৎসব উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধির কামনা করেন।

তিনি বলেন, ‘ঈদ শান্তি, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের অনুপম শিক্ষা দেয়। হিংসা-বিদ্বেষ ও হানাহানি ভুলে মানুষ সাম্য, মৈত্রী ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ঈদ ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলের জীবনে আনন্দের বার্তা বয়ে নিয়ে আসে। ঈদের আনন্দ আমাদের সবার।’

(ঢাকাটাইমস/০৩মে/ওএফ/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :