উত্তম কুমারের জন্য ৮৫ বছরেও অবিবাহিত এই অভিনেত্রী

বিনোদন ডেস্ক
  প্রকাশিত : ২৪ জুলাই ২০২২, ১১:০৬| আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২২, ১২:০০
অ- অ+

ভারতীয় বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি ও সর্বশ্রেষ্ঠ মহানায়ক হিসেবে বিবেচনা করা হয় উত্তম কুমারকে। মারা গেছেন ৪২ বছর আগে। এখনো তিনি বাঙালির ইমোশন। তিনি এমন একজন ব্যক্তিত্বের মানুষ ছিলেন, যাকে ভালো না বেসে থাকা যায় না।

এই মহানায়কের সঙ্গে সুচিত্রা সেনের জুটি ছিল বাংলা সিনেমার ইতিহাসে সেরা। মূল নায়িকা ছাড়াও সে সময় পার্শ্ব নায়িকা চরিত্রে যারা অভিনয় করতেন, তাদেরও ক্রাশ ছিলেন উত্তম কুমার। তেমনই এক অভিনেত্রীর নাম সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়।

এই সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় একসময় উত্তম কুমারের প্রেমে অন্ধ ছিলেন। কী পরিমাণ ভালোবেসেছিলেন তিনি মহানায়ককে? আজ সাবিত্রীর সেই অজানা তথ্যই জানাবো। সংসারের অভাব অনটন তাকে বাধ্য করেছিল ছবিতে অভিনয় করতে। পরে পূর্ববঙ্গের সেই মেয়েটির অপূর্ব অভিনয়েই মুগ্ধ হয়েছিল চলচ্চিত্র মহল।

সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের মতো সহজাত, স্বচ্ছন্দ অভিনেত্রী বাংলা ছবির জগতে বিরল। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত প্রণব মুখার্জী ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে একটি বেসামরিক বিনিয়োগ অনুষ্ঠানে সাবিত্রী চ্যাটার্জীকে ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার প্রদান করেছিলেন।

১৯৩৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের কুমিল্লার কামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। শৈশব কেটেছে কামালপুরেই। তার বাবা শশধর চট্টোপাধ্যায়, পেশায় রেলের স্টেশনমাস্টার ছিলেন। ১০ ভাইবোনের মধ্যে সাবিত্রী ছিলেন সবার ছোট। দেশভাগের পর তিনি এবং তার আরেক বোন কলকাতায় চলে যান। ছিলেন টালিগঞ্জে এক দিদির বাড়িতে।

কিন্তু তার বাবা শশধর চট্টোপাধ্যায় পর্যাপ্ত টাকা পাঠাতে পারতেন না সেই সময়ে। টাকার অভাবে খুব কষ্টে কাটছিল ১০ বছর বয়সী ছোট্ট মেয়েটার জীবন। এমনকি এও জানা গিয়েছিল যে, ভালো খাবারে জন্য কখনো কখনো আত্মীয়দের বাড়ি চলে যেতেন সাবিত্রী ও তার বোন।

এর পরই শুরু হয় তার অভিনয় জীবন। একপ্রকার খাদ্যাভাব ও ছোটবেলা থেকে সিনেমার প্রতি আকর্ষণই তাকে টেনে নিয়ে যায় অভিনয় জগতে। উত্তম কুমার থেকে শুরু করে বহু বড় বড় তারকার সঙ্গে অভিনয় করেছেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। তবে তার অভিনয়ের শুরুটা হয়েছিল নাটক দিয়ে।

সেই সময় ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় তার নতুন নাটক ‘নতুন ইহুদি’র জন্য একজন নতুন মুখ খুঁজছিলেন। ঠিক সেই সময়ে ভানুর পছন্দ হয়ে যায় সাবিত্রীকে। এরপর ‘নতুন ইহুদি’ নামের নাটক দিয়েই শুরু হয় তার অভিনয়ের পথে পথ চলা। পরবর্তীতে ছোটপর্দা থেকে বড়পর্দায় কাজ করতে শুরু করেন তিনি।

‘সহযাত্রী’ ছবি দিয়ে রুপালি পর্দায় হাতেখড়ি হয় সাবিত্রীর। ওই ছবিতে মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে পার্শ্ব নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে যান তিনি। এরপর ‘রাতভোর’, ‘নিশিপদ্ম’, ‘ধন্যি মেয়ে’ ইত্যাদি ছবিতে মহানায়কের পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।

একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে ধীরে ধীরে মহানায়ক উত্তম কুমারকে ভালোবেসে ফেলেন সাবিত্রী। এ কথা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘প্রেম খানিকটা ছিল, তবে বেশির ভাগটাই রটনা’। আসলে সেই সময়ে রটে গিয়েছিল যে মহানায়ক উত্তম কুমার সাবিত্রীকে বিয়ে করে বালিগঞ্জে ভাড়া ছিলেন। কিন্তু এটি কাল্পনিক।’

এরপর অভিনেত্রী জানান, তার বিয়ে বহুবার ভেঙে দিয়েছিলেন মহানায়ক, কিন্তু কেন তা জানা নেই। তবে কিছুটা পজেসিভনেস তো ছিলই সাবিত্রীর প্রতি উত্তম কুমারের। উত্তম কুমারের সঙ্গে গৌরী চট্টোপাধ্যায়ের কী কারণে সংসার ভেঙে যায় তা স্পষ্ট নয়। সবার মত সাবিত্রীও কষ্ট পেয়েছিলেন তখন। তার মনে তখন মহানায়কের প্রতি ভালোবাসাটা গাঢ় হচ্ছিল।

তাই তো ১৯৮০ সালে যখন মহানায়ক মারা গেলেন, তখন একেবারেই ভেঙে পড়েছিলেন সাবিত্রী। তখনই বড়পর্দা থেকে সরে আসেন। তবে এ কথা সত্যি যে, সাবিত্রী বিয়ে করেননি। টলিউডে গুঞ্জন, এর কারণ উত্তম কুমারই। তবে বর্তমানে বড়পর্দার পাশাপাশি ছোটপর্দায়ও চুটিয়ে অভিনয় করছেন বর্ষীয়ান এই অভিনেত্রী।

(ঢাকা টাইমস/২৪ জুলাই/এএইচ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মিরপুরে নাশকতার চেষ্টা, ককটেলসহ তিন ছাত্রলীগকর্মী গ্রেপ্তার
জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলায় ৪৫ জনের তদন্ত রিপোর্ট ১৫ অক্টোবর দাখিলের নির্দেশ
ঘাটাইলে পানিশূন্য পুকুরে প্রায় ৭ লাখ টাকার ঘাট নির্মাণ 
আইইউবিএটিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে আলোচনা ও স্মরণসভা 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা