জয়পুরহাটে অবৈধ যানবাহনের ছড়াছড়ি, বাড়ছে যানজট, ভোগান্তি

জয়পুরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫:০৭ | প্রকাশিত : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪:৩৪

সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জয়পুরহাটে শ্যালো মেশিনচালিত অবৈধ ঝুঁকিপূর্ণ ভটভটি দিন দিন বেড়েই চলেছে। অদক্ষ চালকের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। অন্যান্য যানবাহন চলাচলে ঘটছে বিঘ্ন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৈধ যানবাহনের মালিক ও শ্রমিকরা। এসব ভটভটি থেকে দৈনিক চাঁদা তুলছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তাদের ইন্ধনেই এসব অবৈধ যানবাহন জেলা শহরের প্রধান সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাধারণ মানুষের মালামাল সরবরাহের সুবিধা ও কম খরচের পরিবহন হিসেবে ঝুঁকি নিয়ে চালানো হচ্ছে শ্যালো মেশিনচালিত নছিমন-করিমন-ভটভটি। এসব যান জেলা শহরের প্রধান সড়কগুলোতে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কিছুতেই মানছে না চালকরা। জয়পুরহাট শহরে গড়ে ওঠা নতুনহাটের গরু কেনাবেচায় হাটের আশপাশে পাড়া-মহল্লায় যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হয় এসব ভটভটি। এতে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের চলাচলেও ঘটছে চরম ভোগান্তি।

জেলায় ভটভটির সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও স্থানীয় ভটভটি মালিক শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার ভটভটি রয়েছে। অবৈধ এসব ভটভটি থেকে মালিক সমিতির নামে গাড়িপ্রতি প্রতিদিন ২০ থেকে ৫০ টাকা চাঁদা আদায় করছে প্রভাবশালীরা। এই চাঁদার অর্ধেক যাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের পকেটে। বাকি অর্ধেক যাচ্ছে প্রভাবশালীদের কাছ থেকে চাঁদার রসিদ বই কিনে নিয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে যারা চাঁদা তুলছে, তাদের পকেটে।

শহরের প্রফেসরপাড়া, নতুনহাট, দেওয়ানপাড়া, চিত্রাপাড়া, মুজিবনগর, সরদারপাড়া, জামালগঞ্জ রোড়, সরকারি কলেজ এলাকা, শেখপাড়াসহ হাটের আশপাশের বাসিন্দারা জানান, আবাসিক এলাকায় এই হাট গড়ে উঠেছে। হাটে আসা লক্করঝক্কর অবৈধ ঝুঁকিপূর্ণ নছিমন-করিমন-ভটভটি এসে পাড়ার অলিগলিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখে যানজটের সৃষ্টি করে। হাটের দিনগুলোতে বাড়ি থেকে বের হওয়া যায় না। বাচ্চারা স্কুল-কলেজে যেতে পারে না। হাটের আশপাশে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় এসব অবৈধ যানবাহন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে।

জয়পুরহাট জেলা পিকআপ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার সাহা বলেন, ‘অবৈধ এসব ভটভটি যারা চালায়, তাদের প্রশিক্ষণ, ড্রাইভিং লাইসেন্স কিছুই নাই। তারা সরকারকে কোনো রকম অর্থও দেয় না। আমরা রুট পারমিট, লাইসেন্স, ভ্যাট-ট্যাক্স সরকারকে দিয়ে পিকআপ চালাই। এই ভটভটির কারণে পিকআপ মালিকদের ব্যবসা একেবারে রাস্তায় পড়ে গেছে। অবৈধ এসব ভটভটি অপসারণ করা দরকার। না হলে আমরা পথে বসে যাব।’

জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বেদারুল ইসলাম বেদীন বলেন, ‘জয়পুরহাট শহরে যানজট একটি মারাত্মক সমস্যা। এর মধ্যে এসব অবৈধ ভটভটি পাড়া-মহল্লায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি করছে। এগুলোর বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে বহুবার ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও প্রভাবশালীদের কারণে বাস্তবায়ন হয়নি।’

জয়পুরহাট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নুরে আলম বলেন, যানজট নিরসনে ইতোমধ্যে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাটের দিনগুলোতে গরু নিয়ে জেলা শহরে চারটি রাস্তা দিয়ে ঢোকার কারণে যানজট তীব্র হয়। সেই চারটি পয়েন্টে এসব গাড়ি আটক করে ফেলব এবং গরুগুলোকে হেঁটে নিয়ে হাটে ঢুকবে। আশা করছি শহরের বাসিন্দারা যানজটের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে।’

(ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :