বগুড়ায় শতাধিক দোকান উচ্ছেদ

বগুড়ায় রেলওয়ে কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট মার্কেটে অবৈধভাবে নির্মিত শতাধিক দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত চলা এক অভিযানে এসব দোকান উচ্ছেদ করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা পূর্ণেন্দু দেব।
অভিযান চলাকালে পুলিশের উপস্থিতিতে সেখানে রেলওয়ের এক কর্মচারী ও অবৈধ স্থাপনার বিষয়ে অভিযোগকারীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, বগুড়া শহরের স্টেশন রোডে রেলওয়ের জায়গা লিজ নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট। লিজকৃত ওই জায়গাটি সাব লিজ নেয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি। সেই সমিতির উদ্যোগে সেখানে নির্মাণ করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসেন আলী মার্কেট। এই মার্কেট নির্মাণের জন্য রেলওয়ের কাছে যে নকশা জমা দেওয়া হয় সেখানে পার্কিং জোনের জন্য ১২ হাজার ৬০০ বর্গফুট জায়গা রাখা ছিল। কিন্তু নির্মাণ শেষে দেখা যায় পার্কিংয়ের জন্য কোন জায়গাই রাখা হয়নি। পুরো জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হয় দোকান ঘর। একারণে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি মাহমুদুন নবী রাসেল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। ওই অভিযোগ তদন্ত করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের সত্যতা পাওয়ায় বুধবার সেখানে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।
রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা পূর্ণেন্দু দেব জানান, রেলওয়ে স্টেশনের দক্ষিণ পূর্ব দিকে অব্যবহৃত ১ লাখ ৯৫ হাজার বর্গফুট জায়গায় মার্কেট নির্মাণের জন্য ওই সংস্থার কর্মচারী কল্যাণ স্ট্রাটকে লিজ দেওয়া হয়। সেখানে বগুড়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের উদ্যোগে সহস্রাধিক দোকান নির্মাণের জন্য আব্দুল মান্নান আকন্দ নামে এক ঠিকাদারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর ২০১৭ সালে ওই মার্কেটের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। তারপর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি ও ঠিকাদারের পক্ষ থেকে যৌথভাবে দোকান বরাদ্দ দেওয়া শুরু হয়। প্রতিটি দোকানের জন্য ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা নেওয়া হয়। ওই মার্কেটের জন্য প্রণীত নকশায় গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য মার্কেটের সামনে ১২ হাজার ৬০০ বর্গফুট জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছিল। কিন্তু মার্কেটের নির্মাণ ঠিকাদার আব্দুল মান্নান আকন্দ সেই জায়গায় অবৈধভাবে শতাধিক দোকান নির্মাণ করেন। দোকানগুলো তাকে অপসারণের জন্য বলা হলেও তিনি তা শোনেননি। সে কারণে বুধবার সেগুলো উচ্ছেদ করা হয়।
সেখানে যারা ইতোমধ্যে ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করছে তাদের কি হবে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, রেলওয়ে ব্যবসায়ীদের কোন জায়গা লিজ প্রদান করেনি। জায়গা লিজ গ্রহণ করেছে কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট। তাদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। কাজেই ব্যবসায়ীরা তাদের সমস্যার বিষয়টি নিয়ে কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করতে পারে।
ঠিকাদার আব্দুল মান্নান আকন্দ বলেন, ২০১৭ সালে যখন জায়গাটি লিজ দেওয়া হয়েছিল তখন রেলওয়ের পক্ষ থেকে কোন নকশা তৈরি করা হয়েছিল না। দোকানগুলো নির্মাণের পর নকশা করা হয়। তার দাবি, উচ্ছেদ করা শতাধিক দোকানের মধ্যে মাত্র ২০ জনের কাছ থেকে বরাদ্দ বাবদ ৬ লাখ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, রেলওয়ে কর্মকর্তারা নকশা সংশোধনের আশ্বাস দিয়েছেন। নকশা সংশোধন হলে আগের জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকদের দোকান নির্মাণ করে দেওয়া হবে।
(ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/এলএ)

মন্তব্য করুন