মাগুরা রাড়ীখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, আদালতে মামলা
মাগুরা মুহম্মদপুর উপজেলাধীন রাড়ীখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এমপিও নীতিমালা-২০২১ অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা উপেক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষায় ১০ এ ১০.৪ দিয়ে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে নিয়োগের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ১২ মে জেলার মুহম্মদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস কক্ষে দুপুরে নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে এ অনিয়ম ঘটে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় মো. সাজেদুল ইসলাম বাদী হয়ে মো. জিয়াউল হাসান (ডিজি প্রতিনিধি), মালা রানী বিশ্বাস (উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মহম্মদপুর মাগুরা), আব্দুস সালাম সরদার (সভাপতি ম্যানেজিং কমিটি), আবু হুরায়রা (নির্বাচিত প্রার্থী), মো. এ.কে নুরুজ্জামান (প্রধান শিক্ষক বিনোদপুর বি.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়) ও মো. আবুল কালাম আজাদকে (প্রধান শিক্ষক রাড়ীখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়) বিবাদী করে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
উক্ত পদে নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল সিট অনুযায়ী নম্বর বণ্টন-সনদপত্রে ১০, লিখিত ৩০ ও মৌখিক পরীক্ষায় ১০ মোট ৫০ নম্বর। কিন্তু আবু হুরায়রা নামে নির্বাচিত প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষায় ১০-এ ১০.৪ পেয়েছেন ।
উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বর্ণিত পদে শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে জানান, এমপিও নীতিমালা-২০২১ অনুযায়ী যে কোনো শিক্ষা বোর্ড হতে এইচএসসি. (ব্যবসায় শিক্ষা)/ সমমান । ৬ মাস মেয়াদি কম্পিউটার ডিপ্লোমাধারী অগ্রাধিকার পাবে।
তাহলে কেন শিক্ষাগত যোগ্যতা উপেক্ষা করে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি করিনি, সভাপতি আমাকে দিয়ে জোর করে করিয়েছে । আর এ কারণে আমাকে বহিষ্কার হতে হয়েছে।
কিভাবে ১০ এ ১০.৪ নম্বর পেল জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিয়োগ বোর্ডে আমি ছিলাম কাঠের পুতুল। আমার কিছুই করার ছিল না। কিছুই জানি না । সব কিছুই সভাপতির কারসাজি।
কিভাবে ১০ এ ১০.৪ নম্বর পেল ডিজি প্রতিনিধি জিয়াউল হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওটা আসলে প্রিন্টিং মিসটেক। ওটা হবে ২০ এর মধ্যে। লিখিত ৩০ মৌখিক ২০ মোট ৫০ নম্বরের পরীক্ষা । উক্ত পদে শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে তিনি বলেন, যে কোনো বিভাগে এইচএসসি পাস হলে হবে। অবৈধ্য অর্থ লেনদেনের বিযয়ে তিনি বলেন, লাখ লাখ টাকা কমিটিরা নেয়। আমাদেরকে সম্মানি দেয়। সম্মানি দেওয়ার সময় বলে ওই পরীক্ষার্থীকে অগ্রাধিকার দিবেন।
মাধ্যমিক শিক্ষা বিচার মালা রানী বলেন, ১০ এ ১০.৪ নম্বর দেয়ার তো কথা না। ঐখানে ১০ ছিল না। ছিল ১৪ । কিন্তু উনি নম্বর সিটে লিখে রেখেছিল ১০। কিন্তু আমরা তো ১৪ এর ওপর ভিত্তি করে নম্বর দিয়েছি। শিক্ষাগত যোগ্যতা উপেক্ষা করে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আইন-কানুন অনুযায়ী-ই নিয়োগ দিয়েছি।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জানান, প্রধান শিক্ষক যেভাবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন আমরা ৫ সদস্য বিশিষ্টি নিয়োগ কমিটির সমন্বয়ে রেজুলশেনের মাধ্যমে সেভাবেই নিয়োগ দিয়েছি। আর মৌখিক পরীক্ষায় ১০ এ ১০.৪ নম্বর আসলে প্রিন্টিং মিসটেক।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বর্ণিত নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি বাড়ি ও নিয়োগ প্রাপ্ত বিবাদীর বাড়ি একই গ্রামে এবং সম্পর্কে চাচা ভাতিজা হওয়ায় কাগজে-কলমে নিয়োগ পরীক্ষার তফসিল ঘোষণা করেন। ভাতিজাকে লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন জানিয়ে দেন। উক্ত বিদ্যালয়ের সভাপতি নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি হওয়ায় সুকৌশলে বেআইনিভাবে পরীক্ষার সময় বাদীর লেখা ১০ মিনিট বন্ধ করে রাখেন। তাছাড়াও বাদী সঠিক উত্তর লেখা সত্ত্বেও নিয়োগ বোর্ড কর্তৃপক্ষ বাদীকে প্রাপ্য নম্বর দেননি । নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও বাদীকে মৌখিক পরীক্ষায় অনুপস্থিত দেখানো হয়। মৌখিক পরীক্ষায় ভাতিজাকে ১০ এর মধ্যে ১০.৪ নম্বর দিয়ে উক্ত পদে নিয়োগ দেন।
(ঢাকাটাইমস/১৮অক্টোবর/এআর)