দালালদের ২৯ লাখ টাকা দিয়েও বাঁচতে পারলেন না রফিকুল
মাদারীপুরে দালাল ও মাফিয়াদের হাতে তিন দফায় সাড়ে ২৯ লাখ টাকা দিয়েও বাঁচতে পারলেন না রফিকুল। সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের শ্রীনদী গ্রামের চা বিক্রেতা হাবিব বেপারির ছেলে রফিকুল বেপারি (২২) ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর আশায় লিবিয়া হয়ে ইতালির উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন।
কিন্তু রফিকুল লিবিয়ায় মাফিয়া দালালদের নির্যাতনের শিকার হয়ে ইতালি পৌঁছানোর তিন দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টায় ইতালি থেকে মুঠোফোনে পরিবারের কাছে তার মৃত্যুর খবর আসে।
রফিকুলের মৃত্যুর সংবাদে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বাবা, মা ও বোনেরা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহত রফিকুলের বাড়ি গেলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে রফিকুলের বাবা হাবিব বেপারী বলেন, ‘আমার ছেলে রফিকুলকে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালির উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে নিয়ে যান পার্শবর্তী ধুরাইল ইউনিয়নের হোসেনের হাট এলাকার দালাল আলমগীর খাঁ। এসময় ধার-দেনা, সুদ ও বসত-ভিটার ঘর বন্ধক রেখে দালাল আলমগীরকে প্রথমে আমি নগদ সাড়ে ৯ লাখ টাকা দেই। পরে মাফিয়া দিয়ে ধরাইয়া আমার কাছ থেকে আরো ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। তারপরও আমার ছেলেকে লিবিয়া থেকে ইতালিতে পাঠায় নাই।’
তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে আমি অন্য দালাল কুদ্দুছের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা দিয়ে ইতালি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করি। আলমগীর দালালের লোকেরা আমার ছেলেকে লিবিয়ায় এতদিন শারীরিক নির্যাতন করেছে। তাদের নির্যাতনে আমার ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় ইতালি পৌঁছানোর পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আমি এই নির্মমতার বিচার চাই।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে শুনেছি একজন ইতালিতে মারা গেছেন। নিহতের পরিবার মামলা করলে আমলে নেওয়া হবে। কারণ মানবপাচার অপরাধ।
(ঢাকাটাইমস/২৭অক্টোবর/এসএম)