সুপারফুড ডিম দিনে কয়টি খাওয়া নিরাপদ

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪:০৮ | প্রকাশিত : ১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪:০০

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিনের জন্য চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ, সকলেই প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন। কারণ বেশিরভাগ পুষ্টিকর উপাদান প্রাকৃতিকভাবে যেসব খাবারে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো ডিম। যেমন- ডিমে আছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, ভিটামিন এ, ডি, বি এবং বি-টুয়েলভ্। এছাড়াও ডিমে আছে লুটেইন ও যিয়াস্যানথিন নাম দুটি প্রয়োজনীয় উপাদান যা বৃদ্ধ বয়সে চোখের ক্ষতি ঠেকাতে সাহায্য করে।

এছাড়া মিনারেল, ফসফরাস, আয়রন, জিংক, ম্যাঙ্গানিজসহ সব উন্নত পুষ্টি উপাদান থাকায় ডিমের গুরুত্ব অনেক। পেশির গঠনের জন্য ডিম অত্যন্ত উপযোগী। পেশি সুস্থ সবল রাখতে হলে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন প্রয়োজন শরীরে। সুপারফুড ডিম মস্তিষ্কের টিস্যু গঠন ও মেধা বিকাশে সহায়তা করে।

ডিম খেতে ভালবাসেন অনেকেই। তাই সকালের নাশতায় ডিম সিদ্ধ বা পোচ থেকে শুরু করে রাতে ডিম ভাজা বা ডিমের ঝোল, সর্বত্রই ডিমের ছড়াছড়ি। কিন্তু সব বয়সের মানুষের এতগুলো করে ডিম খাওয়া উচিত কি?

চিকিৎসকরা বলছেন, একজন দিনে কতগুলো করে ডিম খেতে পারবেন, তা নির্ভর করবে তার শারীরিক কী জটিলতা আছে, তার উপর। এক জন সুস্থ মানুষ সপ্তাহে সাত দিনই ডিম খেতে পারেন। কিন্তু যাদের উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরলের সমস্যা আছে, তাদের জন্য ডিম ক্ষতিকারক। কারণ, ডিমের কুসুম খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। এ ছাড়াও হজমের গোলমাল, গ্যাস, রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে, তাদেরও বেশি ডিম খাওয়া উচিত নয়।

উল্লিখিত শারীরিক সমস্যাগুলো না থাকলে কোনও ব্যক্তি একদিনে সর্বাধিক তিনটি ডিম খেতেই পারেন। এমনই মত চিকিৎসকদের। তবে এখন বিভিন্ন সংস্থা শরীরের বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধার কথা বুঝে বিশেষ ধরনের ডিম উৎপাদনের দিকে নজর দিচ্ছে। যদি কারও কোলেস্টেরল বেশি থাকে, তাদের জন্য ‘কোলেস্টেরল ফ্রি’ ডিম হচ্ছে, আবার কারও ডিমে অ্যালার্জি থাকলে তাদের জন্যও আলাদা ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

শিশু এবং তরুণদের জন্য অতিরিক্ত ভিটামিন এবং প্রোটিনযুক্ত ডিমও পাওয়া যায়। তাই কোলেস্টেরলের ভয়ে ডিম না খাওয়ার পুরনো চিন্তা এখন অনেকটাই কমেছে বলেও দাবি করছে কিছু কিছু সংস্থা। কিন্তু শারীরিক সমস্যা থাকলে ডিম খাওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া জরুরি বলে মত ডাক্তারদের একাংশের।

পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, ১০০ গ্রাম মুরগির ডিমে ২৫৫ মিলিগ্রাম আর হাঁসের ডিমে ৩৫৫ মিলিগ্রাম কোলেস্টরল থাকে। তাদের মতে, দু-একটা হাঁস-মুরগির ডিম খেলে এতে থাকা কোলেস্টরল স্বাভাবিকভাবে আমাদের রক্তের কোলেস্টরলের মাত্রাকে খুব একটা প্রভাবিত করে না।

পুষ্টিবিদদের মতে, ডায়াবেটিস কোনো মানুষ বা যার কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা রয়েছে অথবা যার স্থুলতার সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ডিমের কুসুম খাওয়ার ফলে সমস্যা বাড়তে পারে। তবে কোনো শিশু বা তরুণের ক্ষেত্রে দুটা ডিম বা ডিমের কুসুম খেলে কোনো সমস্যই হবে না।

ডিমের উপকারিতা নির্ভর করে ডিম কীভাবে রান্না করা হচ্ছে তার উপর। কীভাবে ডিম রান্না করা উচিত। ডিম রান্নার ব্যাপারে সবচেয়ে সহজ, পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত হলো ডিম সিদ্ধ করা বা পানিতে ডিম পোচ করা।

বেশিরভাগ পুষ্টিবিদ ডিম তেলে না ভেজে খাবার পরামর্শ দেন। কারণ ডিম যে তেলে বা মাখনজাতীয় চর্বিতে ভাজা হয়, তার মধ্যেকার স্যাচুরেটেড ফ্যাট কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।

কাঁচা ডিম বা হালকা করে রান্না ডিমও পুষ্টিযুক্ত, যদি সেই ডিম স্যালমোনেলা জাতীয় জীবাণুমুক্ত হয়- অর্থাৎ জীবাণু না থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা খামারিরা নিয়ে থাকেন। জীবাণু সংক্রমণের ব্যাপারে উদ্বেগ থাকলে ডিম রান্না করে খাওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।

যেভাবে ডিম সংরক্ষণ করবেন

কখনও এমন ডিম কিনবেন না যা ভাঙা বা ফাটা- কারণ সামান্য ফাটা থাকলেও সেখানে ধুলোবালি বা জীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে।

খাদ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো ডিম ফ্রিজে রাখুন - ডিম রাখার বিশেষ যে বাক্স ফ্রিজে থাকে সেখানে ডিম সবচেয়ে ভালো থাকে।

বাক্সের ভেতরে থাকলে ডিমের সাদা অংশ তিন সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো থাকে। কিন্তু ডিমের কুসুম ভালো থাকে তিনদিন। বরফে হিমায়িত অবস্থায় ডিমের সাদা ও কুসুম ভালো থাবে তিন মাস পর্যন্ত।

(ঢাকাটাইমস/১৯ ডিসেম্বর/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :