১১ দাবি নিয়ে প্রকাশ্যে এল ঢাবি ইসলামী ছাত্রী সংস্থা

দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) দেখা যায়নি জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ছাত্রী সংস্থার। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নির্যাতন-নি‌পীড়‌নের কার‌ণে ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি বলে দাবি সংগঠনটির নেতাদের।

সেই ইসলামী ছাত্রী সংস্থা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ১১ দফা দাবি নিয়ে প্রকাশ্যে এল।

নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য মৌলিক সমস্যা সমাধানের দাবিতে ঢাবি উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে তারা।

গতকাল বুধবার সংগঠনটির ঢাবি শাখার সভানেত্রী সাবিকুন্নাহার তামান্না ও সেক্রেটারি আফসানা আক্তার সাত সদস্যের একটি দল নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয় সংলগ্ন আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদকে হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন।

পরে সাংবাদিকদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আফসানা আক্তার একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানান।

এত দিন প্রকাশ্যে না আসার কারণ হিসেবে সভানেত্রী সাবিকুন্নাহার তামান্না বলেন, 'ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নির্যাতন-নিপীড়নের কার‌ণে দীর্ঘ‌দিন ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রীয় নি‌র্দেশনার আলোকে ক‌্যাম্পা‌সে আমরা কাজ শুরু করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, এই সময়ের মা‌ঝে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী সংস্থার প্রাথমিক কাঠামো গঠন সম্ভব হয়েছে।’

বর্তমা‌নে ঢাবি শাখা ছাত্রী সংস্থার সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে সভানেত্রী ও সেক্রেটারির মাধ্যমে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চালু করবেন জানান তারা।

ইসলামি ছাত্রী সংস্থা বাংলাদেশের প্রাচীন ও বৃহৎ ছাত্রী সংগঠন বলে দাবি করে ঢাবি শাখার সেক্রেটারি আফসানা আক্তার বলেন, '১৯৭৮ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আমাদের সংগঠন ছাত্রীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। অতী‌তে ডাকসুতেও অংশ নেয় ছাত্রী সংস্থা। দীর্ঘদিন ধরে আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের জন্য কাজ করেছি। আজকের এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা নতুন পরিসরে কাজ শুরু করেছি।'

ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও সম্মানজনক পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে ঢাবি প্রশাসন দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেবে বলে তারা আশা করেন- এমনটাই জানান সেক্রেটারি আফসানা আক্তার। বলেন, ‘সামনের দিনে নারীদের ন্যায্য দাবি ও অধিকার আদায়ে এই ভূমিকা অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।'

উপাচার্যের কাছে জানানো দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা জোরদারকরণ ও যৌন হয়রানিমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ। পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের সহজলভ্যতা, পর্যাপ্ত কমনরুম, নামাজরুম ও ওজুখানার ব্যবস্থা করা। হলভিত্তিক প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা এবং মাতৃত্বকালীন সময়ে সহযোগিতা প্রদান। আবাসন সংকট নিরসন এবং অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জরুরি প্রয়োজনে হলে প্রবেশের অনুমতি প্রদান।

এর আগে ৫ আগস্টের পর উপাচার‌্যের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়ে ঢাকা ক্যাম্পাসে আলোচনায় আসে জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবির।

(ঢাকাটাইমস/২৯মে/মোআ)