বেতন নিয়ে ক্ষোভ, বিসিসিতে চার কর্মচারী আটকে গভীর রাতে দরবার

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগে দৈনিক মজুরির অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক চার কর্মচারীকে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) বিরুদ্ধে।
৩০ দিন ডিউটি করে ২২ দিনের বেতন পাওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে তারা পুরো মাসের বেতন দাবি করার পর আটকে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে অন্য কর্মচারীরা।
বুধবার দিনগত রাত ১০টার দিকে তাদের বিসিসির দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। তবে রাত সাড়ে ১২টায় বিসিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, চার কর্মচারী সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী বেতন নিতে চাচ্ছেন না। এ বিষয়টি নিয়ে বিসিসির অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মারধর করেন। গত রাত ২টায় দুপক্ষের মধ্যে বৈঠক চলে।
আটক কর্মচারীরা হলেন– কাওসার ও সেলিমসহ ৪ জন। বাকি দুজনের নাম জানা যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বুধবার (২৮ মে) বিসিসির কয়েক শ অস্থায়ী কর্মচারীর বেতন দেওয়া হয়। কিন্তু ৩০ দিন কাজ করলেও সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী ২২ দিনের বেতন দেওয়া হয় তাদের। এ কারণে বুধবার নগরীর ময়লা পরিষ্কার করেননি পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। ফলে নগরী ময়লা স্তূপে রূপ নিয়েছে।
বরিশাল সিটি করপোরেশন কর্মচারী ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ আলী আজিম বলেন, ‘তারা ৩০ দিন কাজ করে ২২ দিনের বেতন পাওয়ার কারণ জানতে রাত ১০টার দিকে বিসিসির প্রশাসক রায়হান কাওসারের কাছে যান। তখন প্রশাসক তাদের দ্বিতীয় তলার একটি রুমে আটকে রাখেন। এ ঘটনার খবর অন্য কর্মচারীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে রাত ১২টার দিকে জড়ো হই। ’
বিসিসির বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, রাতে ঝড়ের কারণে বেশ কয়েক জায়গার বৈদ্যুতিক লাইট নিভে যায়। সেই ত্রুটি মেরামতে তারা বের হতে চাইলে আন্দোলনরতরা বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে কাজে যেতে চাইলে ওই চার কর্মচারী মারধর করে। পরে ওই চারজনকে শনাক্ত করে আটকে রাখা হয়েছে।
বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী রাত সাড়ে ১২টায় বলেন, কর্মচারীদের সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী ২২ দিনের বেতন দেওয়া হয়। অথচ আটক চার কর্মচারী সরকারি নিয়ম না মেনে বিসিসির মধ্যে ঢুকে হট্টগোল ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করেছে। এ কারণে তাদের পুলিশে তুলে দেয়া হবে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে বিসিসি কর্তৃপক্ষ।
তিনি আরও বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত শ্রমিকদের মাসে ২২ দিনের বেশি সময়ের জন্য কোনোভাবে নিয়োজিত রাখা যাবে না। আর সেই নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের বেতন দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের কিছুই করণীয় নেই। কেউ কাজ না করলে সেটা তাদের ব্যাপার।
পরে মধ্যরাতে বিষয়টি সমাধানের জন্য বৈঠকে বসেন বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওসার। এসময় সিটি করপোরেশনের মধ্যে বিক্ষোভ করেন বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা।
(ঢাকাটাইমস/২৯মে/মোআ)

মন্তব্য করুন