শুধু ওষুধ নয়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে ভেষজ মশলা

শরীরে ডায়াবেটিস বাসা বাঁধলেই জীবন থেকে অনেক কিছু এক নিমেষে বাদ চলে যায়। ঘরে ঘরে এখন ডায়াবেটিসের রোগী। দীর্ঘ দিন ধরে অতিরিক্ত মাত্রায় ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাওয়া-দাওয়া, ঘুম কম হওয়া, অবসাদ, উদ্বেগজনিত বিভিন্ন সমস্যার কারণে শর্করার মাত্রা ওঠানামা করতে শুরু করে। শরীরে বাসা বাঁধে ডায়াবেটিস রোগ।
সাধারণত, ডায়াবেটিস দানা বাঁধলে প্রথম অবস্থাতেই টের পাওয়া যায় না। রক্তপরীক্ষা করিয়ে তা বুঝে নিতে অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়। যে কোনও ক্রনিক অসুখের ক্ষেত্রে যত আগে অসুখের উপস্থিতি টের পাবেন, ততই ভাল।
ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো হলো: বারবার প্রস্রাবের বেগ, অত্যধিক পানির তৃষ্ণা, শরীরের ওজন কমে যাওয়া, চোখে কম দেখা, ক্লান্তি আসা, অতিরিক্ত খিদে পাওয়া, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, ক্ষত শুকাতে চায় না, বারবার ইনফেকশন, হাত-পা অসাড় হয়ে যায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করলেই সুস্থ জীবনযাপন করা যায়। টাইপ-২ ডায়াবেটিসে থাকে উঁচুমানের সুগার। শরীর যখন যথেষ্ট ইনসুলিন হরমোন নিঃসরণ করতে পারে না এবং তাই রক্তের সুগারও নামাতে পারে না অথবা ইনসুলিন কিছু নিঃসরণ হলেও শরীর যদি তা ব্যবহার করতে না পারে তখন হয় টাইপ-২ ডায়াবেটিস। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাবার জন্য নানা উপাদানই আছে।
পুষ্টিবিদদের মতে, ডায়াবিটিস থাকলে খাওয়াদাওয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। নিয়ম মেনে শরীরচর্চা, খাওয়াদাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ রাখার পাশাপাশি প্রতিদিনের ডায়েটে কিছু মশলা রাখলেও ডায়াবেটিস রোগকে জব্দ করা যায়।
মেথি
ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে মেথি বেশ কার্যকর। চার থেকে ছয় মাস দৈনিক ১০ গ্রাম মেথি খাওয়া এইচবিএ১সি এবং রক্তের শর্করার মাত্রা কমানো প্রক্রিয়া সহায়তা করে।‘ডায়াবেটিস অ্যান্ড মেটাবলিক ডিজঅর্ডার’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, খাদ্যাভ্যাসে দৈনিক ১০ গ্রাম মেথি বীজ খাওয়ার সঙ্গে ‘প্রিডায়াবেটিস’ হওয়া থেকে দূরে রাখতে পারে। সকালে মেথি ভেজানো জল হোক বা রান্নায় মেথি ফোড়ন, যে ভাবেই মেথি ব্যবহার করবেন, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে তাতেই।
দারচিনি
দারচিনির স্বাস্থ্যগুণ অনেক। অল্প দারচিনির গুঁড়ো যদি রোজ রান্নায় ব্যবহার করা যায়, তবে শরীরে অনেক বেশি সক্রিয় থাকে ইনসুলিন হরমোন। আর তাতেই নিয়ন্ত্রণে থাকে রক্তের শর্করার মাত্রা।কোন
আদা
প্রদাহ কমানোর ক্ষমতা থেকে জীবাণু নাশ, সবেতেই বেশ কার্যকর আদা। শরীরে ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করে আদার রস। আর ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক থাকলে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় রক্তের শর্করার মাত্রাও। ফলে রোজের রান্নায় অল্প করে আদা ব্যবহার করলে অনেকটাই যত্ন নেওয়া যায় ডায়াবিটিসের রোগীর। আদা দেওয়া চা খেলেও উপকার মেলে।
হলুদ
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, হলুদে থাকা কারকিউমিন নামক যৌগ রক্তের শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এ ক্ষেত্রে দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
জয়িত্রী
অ্যান্টি-অক্সিজ্যান্টে ভরপুর জয়িত্রীও কিন্তু রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। চায়ের মধ্যে জয়িত্রী মিশিয়ে খেলে ডায়াবেটিক রোগীরা উপকার পাবেন।
(ঢাকাটাইমস/২৮ মে/আরজেড)

মন্তব্য করুন