এবার হজ ব্যবস্থাপনা ছিল বড় চ্যালেঞ্জ, এখন শান্তি লাগছে: ধর্ম উপদেষ্টা

ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, জুলাই বিপ্লব এবং সৌদি সরকারের নতুন নিয়ম-নীতির কারণে এবারের হজ ব্যবস্থাপনা ছিল সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় সবার সম্মিলিত দূরদর্শী কাজের মাধ্যমে সেটি মোকাবিলায় একটা শান্তির আবহ অনুভব করছেন বলে জানান উপদেষ্টা।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় আশকোনায় হাজি ক্যাম্পে হজ ব্যবস্থাপনার সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘জুলাই বিপ্লব এবং সৌদি সরকারের নতুন নিয়ম-নীতির কারণে এবারের হজ ব্যবস্থাপনা ছিল সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সমগ্র হজ ব্যবস্থাপনায় হজ উইংয়ের সচিব, উপসচিবসহ কর্মকর্তারা বন্ধের দিনও কাজ করেছেন। আমরা শুক্রবার, শনিবার এমনকি সরকারি বন্ধের দিনও অফিস খোলা রেখেছি। একটা দূরদর্শিতা নিয়ে আমাদের কর্মকর্তারা কাজ করেছেন। সবার সম্মিলিত দূরদর্শী কাজের মাধ্যমে একটা শান্তির আবহ অনুভব করছি।’
ধর্ম উপদেষ্টা জানান, হজের খরচ যৌক্তিকীকরণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করেছে মন্ত্রণালয়। যদিও হজের অধিকাংশ খরচ যেমন- ভিসা ফি, স্বাস্থ্যবীমা, জমজমের পানি, তাঁবুর খাবার ও মূল্য সৌদি কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে, তবুও বাংলাদেশ সরকার বিমান ও হোটেল ভাড়ার ক্ষেত্রে সফলভাবে দর কষাকষি করেছে। এর ফলে বিমানভাড়া গতবারের তুলনায় ২৬ হাজার ৯৮০ টাকা কমানো সম্ভব হয়েছে।
সাধারণ মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনায় যৌক্তিক হারে বাড়িভাড়া নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘এ বছর সৌদি রিয়ালের দাম বৃদ্ধি ও সার্ভিস চার্জ বেড়ে যাওয়ার পরও তুলনামূলক সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজ ঘোষণা করতে পেরেছি।’
হজযাত্রী ব্যবস্থাপনা নিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘প্রথমে প্রতিটি হজ এজেন্সির জন্য ২০০০ জনের ন্যূনতম কোটা নির্ধারণ করা হলেও আমাদের অনুরোধে তা এক হাজারে নামিয়ে আনা হয়। সরকার পরে ৭০টি লিড এজেন্সি গঠন করে।’
তিনি জানান, ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মিনা ও আরাফায় তাঁবু বরাদ্দ এবং ক্যাটারিং কোম্পানির সাথে চুক্তি সম্পন্ন করা হয়। এছাড়া সৌদি সরকারের নুসুক মাসার (Nusuk Masar) প্ল্যাটফর্মে বাড়িভাড়া ও পরিবহন সংক্রান্ত কাজ সময়মতো সম্পন্ন হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমেই হজযাত্রীদের ভিসার কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলেও তিনি জানান।
চলতি বছর হজ ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। লাব্বাইক নামের একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে, যা হজযাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করবে। পাশাপাশি হজযাত্রা নিরাপদ করতে ‘হজ প্রিপেইড কার্ড’ চালু করা হয়েছে, যা নগদ টাকার বিকল্প হিসেবে কাজ করবে।
সিম ব্যবহারের বিষয়েও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা। ‘গ্রামীণফোন’, ‘বাংলালিংক’ ও ‘রবি’ চালু করেছে বিশেষ রোমিং প্যাকেজ, যার মাধ্যমে হজযাত্রীরা নিজ দেশের সিম দিয়েই সৌদি আরবে যোগাযোগ করতে পারছেন।
চিকিৎসা সেবার প্রসঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, চলতি বছর মক্কা ও মদিনায় ২৯৩ সদস্যের চিকিৎসক ও প্রশাসনিক দল নিয়োজিত থাকবে। যথেষ্ট ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানো হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পয়েন্টে হজকর্মীও নিয়োজিত থাকবেন।
গত ২৯ এপ্রিল এবারের হজ ফ্লাইট শুরু হয়। আজ সকাল ১১টা পর্যন্ত ৭৪ হাজার ৩১৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে গেছেন। ১ জুনের মধ্যে সব হজযাত্রী সৌদি পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/২৯মে/এলএম/মোআ)

মন্তব্য করুন