কারফিউ ভেঙে ‘মার্চ টু ঢাকা’,  যেমন ছিল ৫ আগস্ট ঢাকার সকাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১২:১৬| আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১৪:০৯
অ- অ+

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সকাল। দেশের আকাশে আলো ফোটার আগেই বাস্তবতা বদলে যায়—বাংলাদেশ ছিল কার্যত বিচ্ছিন্ন এক রাষ্ট্র। রাত থেকেই বন্ধ ছিল মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট। সকাল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায়, ঢাকা ও আশপাশের জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাব। রাজধানীসহ সারাদেশে কার্যত অবরুদ্ধ পরিবেশ। এরপরও হাজারো মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে। মানুষের ঢল নামে বিভিন্ন মহাসড়ক ও প্রবেশপথে। শুরুর মুহূর্তেই স্পষ্ট হয়—কারফিউ মানছে না জনগণ।

ওইদিন সকাল থেকেই ঢাকার মহাখালী, বনানী, গুলশান, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর, রামপুরাসহ প্রায় প্রতিটি রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে কাঁটাতার দিয়ে ব্যারিকেড বসিয়ে রাস্তায় অবস্থান নিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

আগে থেকে যাদের কাছে কারফিউ পাশ ছিল, তারাও ওইদিন সকালে ঢাকার রাস্তায় বের হয়ে নানা ভোগান্তিতে পড়েন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর জেরার মুখে।

তবে সবচেয়ে বেশি কড়া পাহারা বসানো হয়েছিল ঢাকার প্রবেশমুখগুলোয়, বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী, গাবতলী আর আব্দুল্লাহপুরের মতো এলাকাগুলোতে। বিভিন্ন আবাসিক এলাকার গলির মুখেও বসানো হয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাহারা।

মাইকিং করে কাউকে ঘর থেকে বের না হওয়ার অনুরোধও জানাতে দেখা গিয়েছিল পুলিশকে। তবে বেলা গড়ানোর সাথে সাথে পরিস্থিতি বদলে যেতে শুরু করে। কারফিউ ভেঙে রাস্তায় নেমে আসতে দেখা যায় ছাত্র-জনতা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষকে।

ক্রমেই বদলে যেতে শুরু করে ঢাকার পরিস্থিতি। রাস্তায় নামতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে সকাল ১১টার দিকে ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ হয়ে যায়।

কাঁটাতারের ব্যারিকেড, থমথমে সকাল

কোটা সংস্কারের দাবিতে টানা ৩৩ দিনের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পর ৩ আগস্ট ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের একদফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

তাদের ঘোষণা ছিল ৫ আগস্ট সোমবার সারাদেশে বিক্ষোভ ও গণঅবস্থান এবং মঙ্গলবার ৬ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালন করবেন তারা।

তবে হঠাৎই ৪ আগস্ট বিকালে এক বিবৃতিতে সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ এক বিবৃতিতে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ৬ আগস্টের পরিবর্তে ৫ আগস্ট করার ঘোষণা দেন। এতে সারাদেশের মানুষকে অংশ নেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়।

ছাত্রদের ঘোষণার পরই ৪ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টা থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ ঘোষণা করে সরকার।

ঢাকায় বিক্ষোভকারীদের প্রবেশ ঠেকাতে রবিবার রাত থেকেই ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয় নিরাপত্তা চেকপোস্ট। প্রবেশমুখ তো আছেই, সেই সাথে গণভবন, বঙ্গভবন, শাহবাগ, মহাখালী, উত্তরা, গুলশান, রামপুরা, বনানীর বিভিন্ন রাস্তায় কাঁটাতারের বেষ্টনী বসানো হয়।

সবচেয়ে বেশি কাঁটাতারের বেষ্টনী বসানো হয়েছিল বিজয় সরণি, ফার্মগেট, শাহবাগ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশপাশের এলাকায়।

যে কারণে ঢাকার রাস্তায় ৫ আগস্ট ভোর থেকে যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধই ছিল। শহরজুড়ে কিছু অ্যাম্বুলেন্স ও গণমাধ্যমের কিছু গাড়ি দেখা গেছে। সংবাদ সংগ্রহে কারফিউ পাশ নিয়ে সকাল সাড়ে আটটায় রামপুরা ব্রিজের ওপর গেলে সেখানে বিবিসি বাংলার গাড়ি থামান সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

ঠিক ২০০ গজ সামনে বনশ্রী রাস্তায় সেনাবাহিনীর কাঁটাতারের আরো একটি চেকপোস্টেও একইভাবে গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এমন তিন দফা চেকপোস্ট পেরিয়ে সকাল পৌনে নয়টার দিকে যখন বনশ্রী ই-ব্লকের দিকে গিয়ে দেখা যায় প্রধান গলি থেকেই ভেতরে গুলি ছুড়ছিল পুলিশ।

বাংলাদেশের জুলাই-আগস্টের পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর বা ওএইচসিএইচআর যে তথ্যানুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে, সে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মার্চ অন ঢাকা’ থামাতে, বিক্ষোভকারীদের শহরের কেন্দ্রস্থলে পৌঁছাতে বাধা দিতে তখনো পুলিশ অনেক জায়গায় বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রাণঘাতী গুলি চালাচ্ছিল।

কারফিউ ভেঙে রাস্তায় ছাত্র-জনতা

সকাল ১০টার পর থেকেই পরিস্থিতি একটু একটু করে বদলে যেতে শুরু করে। কারফিউ ভেঙে রাস্তায় নামতে শুরু করেন তরুণ বয়েসীরা, যাদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী।

জুলাই আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ছিল ঢাকার উত্তরা।

ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ১১টা। উত্তরার বিএনএস সেন্টারের সামনে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা।

উত্তরা থেকে বিমানবন্দরে প্রধান সড়কে কয়েক স্তরে রাস্তার ওপর কাঁটাতারের ব্যারিকেড বসিয়ে অবস্থান নেয় সেনাবাহিনী।

বিএনএস ভবনের পাশের গলি দিয়ে ১১টার দিকে মূল রাস্তায় উঠে আসেন বিক্ষোভকারীরা। সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করছিলেন।

তখন উত্তরার বিএনএস সেন্টার এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে গণভবন অভিমুখে যাত্রা শুরু করে ছাত্র-জনতা। আশপাশের বিভিন্ন গলি দিয়ে প্রধান সড়কে আসতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা।

কারো হাতে লাঠি, কারো হাতে ছোট লাঠির মাথায় জাতীয় পতাকা। সেনাবাহিনীর সদস্যরা তখন মিছিলটিকে সামনের দিকে না আগাতে অনুরোধ জানাচ্ছিলেন মাইকে।

কিন্তু ছাত্ররা সামরিক বাহিনীর নির্দেশ উপেক্ষা করেই একটু একটু করে মিছিল নিয়ে সামনে আসতে শুরু করে।

মিছিলটিকে থামাতে এক পর্যায়ে ফাঁকা গুলি শুরু করে সেনাবাহিনী।

তখন মিছিলের সামনের অংশ রাস্তার ওপর বসে অবস্থান নেয়।

মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে আবারো মিছিলটি সামনে এগিয়ে যেতে শুরু করে। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর ব্যারিকেড ভেঙে মিছিলটি যাত্রা শুরু করে গণভবন অভিমুখে। দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে উত্তরা এলাকায় বিবিসি বাংলার সংবাদদাতারা দেখতে পান লাঠিসোটা হাতে ছাত্র-জনতার মিছিল একের পর এক সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যাচ্ছিল সামনে।

উত্তরা থেকে গণভবনমুখী দীর্ঘ সেই মিছিলে পথে পথে ছাত্রদের সাথে যোগ দেয় মায়েরা, বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ।

অনেক গৃহবধূ বা মায়েরা নেমেছিলেন লাঠি হাতে। স্লোগান তুলেছিলেন ‘দফা এক-দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র কেমন ছিল?

ভোর থেকেই ঢাকার অন্যান্য জায়গার চেয়ে তুলনামূলক বেশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া পাহারা থাকার কারণে সকাল ১০টা পর্যন্ত অনেকটা শান্ত ছিল শাহবাগ মোড় এলাকা।

সকাল ১০টার পর কয়েকশো শিক্ষার্থী জড়ো হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায়। তখন সেখানে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে গুলি, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।

পাশের চানখাঁরপুল এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়।

সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল, এর মধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ র‍্যালি বের করেন শিক্ষকদের একটি অংশ। সে সময় তাদের সাথে যোগ দেন বেশ কিছু শিক্ষার্থীও।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শাহবাগ সংলগ্ন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের উল্টো দিকের গলিতে জড়ো হন শত শত বিক্ষোভকারী।

তবে সকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে কড়াকড়ি অবস্থান ছিল তা একটু একটু করে বদলাতে শুরু করে দুপুর একটার দিকে।

বেলা একটার দিকে কয়েকশো শিক্ষার্থী জড়ো হন শাহবাগের মোড়ে।

এর কিছুক্ষণ পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা থেকে মিছিল আসতে শুরু করে শাহবাগ মোড়ের দিকে।

আগে থেকে সেখানে অবস্থান নেওয়া পুলিশ সদস্যের একটি দল শাহবাগ মোড় ছেড়ে অবস্থান নেন থানার সামনে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া অবস্থান সেসময় আর দেখা যায়নি।

এরপরই ধীরে ধীরে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে আরো অনেকেই জড়ো হতে শুরু করেন শাহবাগ এলাকায়।

যেভাবে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে

জুলাইয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলনের অন্যতম হটস্পট ছিল ঢাকার রামপুরা-বনশ্রী এলাকা। ওই সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে অনেকে নিহত ও আহত হয়েছিলেন।

যে কারণে ৫ আগস্ট ভোর থেকেই রামপুরা-বনশ্রী ও বাড্ডা এলাকায় শক্ত নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে রেখেছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই এলাকায় খুব সকালে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কড়া অবস্থানের কারণে ঘর থেকে বিক্ষোভকারীরা মূল সড়কে আসতে পারেনি সকাল ১০টা পর্যন্ত।

সকাল দশটার পর থেকে বনশ্রীর ভেতরের রাস্তাগুলোতে ছাত্র-জনতা জড়ো হতে শুরু করে। আস্তে আস্তে মানুষের সংখ্যাও বাড়তে শুরু করে।

এর কিছুক্ষণের মধ্যেই হঠাৎই সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। সকাল ১১টার পর বনশ্রীর প্রতিটি গলি থেকে অসংখ্য নারী-পুরুষ, ছাত্র-ছাত্রী হাতে লাঠিসোটা নিয়ে রামপুরা ব্রিজের দিকে আসতে শুরু করে।

তখন ওই এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি ছিল সেনাবাহিনীর কড়া পাহারা। কিন্তু মিছিলে মানুষের ঢল দেখে সেখান থেকে কিছুটা সরে যায় পুলিশ।

এরপর কয়েকটি বড় মিছিল রামপুরা ব্রিজের ওপর যখন পৌঁছায় তখন ঘড়ির কাঁটায় দুপুর একটা।

ততক্ষণে শোনা যাচ্ছিল দুপুর দুইটায় টেলিভিশনে ভাষণ দেবেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ জামান। যে কারণে রামপুরা ব্রিজের ওপর বড় একটি মিছিল পৌঁছালে সেখানে দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের সেখানেই অবস্থান করতে বলেন।

পৌনে দুইটার দিকে সেনাসদস্যদের ঘিরে উল্লাস করতে দেখা যায়। অনেকেই রাস্তার ওপরেই সিজদায় লুটিয়ে পড়ছিলেন।

কেউ কেউ দুই হাত তুলে মোনাজাতে কাঁদছিলেন।

যদিও তখনও পর্যন্ত কেউ নিশ্চিত করে বলেনি যে, বাংলাদেশের ১৫ বছরের শাসন ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করেছেন শেখ হাসিনা।

ঢাকার বিভিন্ন জায়গায়ই দুপুরের আগেই শেখ হাসিনা পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাস্তায় নেমে আসেন লাখ লাখ মানুষ।

গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জনতার ঢল

দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর আসতে শুরু করে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা।

তখন রাজধানী ঢাকার রাস্তায় নেমে আসেন শিক্ষার্থী, নারী-পুরুষসহ সাধারণ মানুষ।

বিকাল তিনটার দিকে প্রথমে গণভবন, পরে তেজগাঁওয়ের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে পিজিআর, এসএসএফসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সরে গেলে সেখানে দলে দলে মানুষ প্রবেশ করে।

সেদিন অনেকেই গণভবনের ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর করেছেন। চেয়ার-টেবিল, আসবাবপত্র, পশু-পাখি, খাবার আর ব্যবহার্য জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায় হাজার হাজার মানুষ।

কারো হাতে গণভবনের পুকুরের মাছ দেখা যায়। অনেককে সে সময় গণভবনের ভেতরেই বিজয় মিছিল করতে দেখা যায়।

বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে হঠাৎই তেজগাঁওয়ের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পিজিআরসহ সব বাহিনী একে একে কার্যালয় ছাড়তে থাকেন।

সাধারণ মানুষের জন্য তারা এই কার্যালয়ের গেট পুরোপুরি খুলে দিলে ঢল নামে হাজারো মানুষের।

কার্যালয়ের ছাদে পতাকা তুলে বিজয় উল্লাসে নামেন অনেকে। সেখানে ছাত্র, শিশু, বৃদ্ধ, যুবক— সব বয়সের মানুষ ছিলেন।

ছাত্র-জনতার একটি অংশ অবস্থান নেয় জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায়। গণভবনের মতো সংসদ ভবনের ভেতর থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায় বহু মানুষ।

অনেককে সংসদ ভবনের অধিবেশন কক্ষে বসে ছবি তুলতে দেখা যায়।

এসময় পথে পথে সশস্ত্র বাহিনীকে ঘিরে উল্লাস করতে দেখা যায় সাধারণ মানুষের অনেককেই।

সে সময় আগুন দেওয়া হয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কার্যালয়ে এবং থানায়। ভাঙচুর চালানো হয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘরে।

বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশ তখন অবস্থান নেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আর গণভবনের মাঝামাঝি বিজয় সরণি এলাকায়। সেখানে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের বিশাল একটি প্রতিকৃতি ভেঙ্গে ফেলতে দেখা যায়। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় রং ছিটিয়ে, স্লোগান দিয়ে, বাঁশি বাজিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন লাখো মানুষ।

(ঢাকাটাইমস/৫ আগস্ট/এলএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নিরবের হাত ধরে পথচলা শুরু ইভা চৌধুরীর
জাবির ৬৪ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার, সনদ বাতিল ৭৩ জনের
ঝিনাইদহে সাপের কামড়ে একজনের মৃত্যু
মির্জাপুরে ছাত্রলীগ ও কৃষক লীগের দুই নেতা গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা