নগরকান্দায় পাঁচ নবজাতকের বাড়ি গিয়ে জন্মসনদ তৈরি করে দিলেন ইউএনও

সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:৪৯

শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন। এই দিনটিতে বাসায় শুয়ে বসে না থেকে ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিয়ে মানবসেবায় কাজে লাগালেন ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈনুল হক। তিনি উপহার আর মিষ্টি নিয়ে পাঁচটি দম্পতির পরিবারে জন্ম নেওয়া নতুন অতিথি নবজাতকদের উপজেলার নাগরিক (সিটিজেন) হিসেবে বরণ করে নিতে হাজির হন তাদের বাড়িতে।

এ সময় নবজাতকদের কোলে নিয়ে আদরও করেন। আর নবজাতকের মা-বাবাকে মিষ্টি খাইয়ে উপহারের প্যাকেট হাতে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। সেই সঙ্গে নবজাতকদের জন্মসনদ তৈরি করে দেন।

নবজাতকদের জন্ম নিবন্ধন করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে সাথে নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ব্যতিক্রমী এ কর্মসূচি পালন করেন তিনি। তার এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন নবজাতকদের পরিবারসহ স্থানীয়রা। জন্মসনদ পাওয়া নবজাতকরা হলো, নগরকান্দা পৌর এলাকার মানিক মিয়ার শিশু কন্যা আবানিয়া আইজা, গাংজগদিয়া গ্রামের প্রদীপ মালোর কন্যা অমৃত মালো, হৃদয় মালোর পুত্র কুশ মালো, মধ্যজগদিয়া গ্রামের আকাশ চন্দ্র দাসের কন্যা দীপিকা দাস ও ফুলসুতি ইউনিয়নের সলিথা গ্রামের মো. হাফিজুর রহমানের পুত্র জিহাদ মাতুব্বর।

জানা গেছে, নবজাতকের জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্মনিবন্ধন করার সরকারি বাধ্যবাধকতা থাকলেও সেক্ষেত্রে অভিভাবকদের মধ্যে অনীহা ও উদাসিনতা রয়েছে। দেখা যায়, বয়স বাড়ার পর অভিভাবকরা স্কুলে ভর্তির প্রয়োজনে সন্তানের জন্মনিবন্ধন করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন ও ইউপি কার্যালয়ে ছুটাছুটি করেন। ততদিনে অনেক শিশুর বয়স ৫-৬ বছর পার হয়ে যায়। তখন নানা কারণে সংশ্লিষ্টদের অনুমাননির্ভর তারিখে হলেও নিবন্ধন করে সনদ দিতে হয়। আর যেসব শিশুরা স্কুলে ভর্তি হয় না, তারা জন্মনিবন্ধনের বাইরে থেকে যায় । এমন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে ইউএনও এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

নবজাতক আবানিয়া আইজার বাবা মানিক মিয়া বলেন, আমি প্রথম কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছি। নতুন অতিথির আগমন উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে আমার পরিবারের মধ্যে আনন্দ বইছে। এরই মধ্যে শুক্রবার সকালে হঠাৎ ইউএনও স্যার কন্যার জন্য উপহার ও আমাদের জন্য মিষ্টি নিয়ে বাড়িতে হাজির হন। তিনি আমার মেয়েকে কোলে করে আদর করেন। পাশাপশি আমার কন্যার জন্মনিবন্ধনও করে দিয়ে যান। এতে আমাদের মধ্যে আলাদা একটা বাড়তি আনন্দ লাগছে। এমন উদ্যোগ আগে কখনো দেখিনি। ইউএনও স্যারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।

আরেক নবজাতক জিহাদ মাতুব্বরের মো. হাফিজুর মাতুব্বর বলেন বলেন, আগে জন্মনিবন্ধন করতে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গিয়ে ঝামেলা পোহাতে হতো। আর এখন আমার ছেলের জন্মের পর ইউএনও স্যার মিষ্টি ও উপহার নিয়ে এসে নিজেই জন্মনিবন্ধন করে দিয়ে গেলেন। এটা সত্যিই অবাক করেছে আমাকে। এমনটি কখনো দেখিনি। অপর নবজাতক দীপিকার দাসের মা সবিতা রানী বলেন, আমার মেয়ের জন্মের পর ইউএনও স্যার প্রথম মিষ্টি ও উপহার নিয়ে এসেছেন। আমাদের জন্য এটি পরম পাওয়া।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মঈনুল হক বলেন, ৪৫ দিনের কম বয়সী নবজাতকের জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম সেবাগ্রহিতার দোর-গোড়ায় পৌঁছে দিতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে নবজাতকের বাড়িতে গিয়ে জন্মনিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হবে। আমাদের এই সেবা কার্যক্রম চলমান থাকবে।

(ঢাকাটাইমস/০৩ফেব্রুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :