যানজটমুক্ত গাজীপুর, প্রশংসায় ভাসছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এবছর যানজটমুক্ত পরিবেশে গাজীপুর পার হয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যেতে পেরেছেন উত্তরবঙ্গগামী লাখ লাখ যাত্রী।
ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ঈদের অনেক আগে থেকেই নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করতে থাকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। তাদের সেই পরিকল্পনা সফল বাস্তবায়ন হয়েছে এ বছরের ঈদযাত্রায়।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, গাজীপুর বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম উৎপাদন কেন্দ্র। দেশের অধিকাংশ গার্মেন্টস, ওষুধ কারখানা ও অন্যান্য উল্লেখ্যযোগ্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের অবস্থান গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে হওয়ায় প্রায় ৬৫ লাখ লোকের কাঙ্ক্ষিত নাগরিক ও পুলিশি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে নিরলসভাবে আমরা কাজ করছি। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ট্রাফিক বিভাগ। তারা নিয়মিতভাবে জাতীয় মহাসড়ক, আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং অসংখ্য শাখা সড়কে সুশৃঙ্খলভাবে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করে। মেট্রোপলিটন এলাকার টঙ্গী ব্রিজ হতে রাজেন্দ্রপুর অংশে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রতি দিন গড়ে প্রায় ৫০-৬০ হাজার বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এছাড়াও অন্যান্য মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে চব্বিশ ঘণ্টা নিরবচ্ছিনভাবে বিপুলসংখ্যক গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহনকারী যানবাহন চলাচল করে। যানবাহনের শৃঙ্খলা আনয়নে জিএমপি ট্রাফিক বিভাগের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সড়কের উন্নয়ন প্রকল্পের চলমান নির্মাণ কাজ বিশেষ করে আব্দুল্লাহপুর থেকে রাজেন্দ্রপুর পর্যন্ত ২৭ কি. মি. এবং উলুখোলা থেকে মিরের বাজার, ভোগড়া বাইপাস হয়ে জিরানী বাজার পর্যন্ত ২৯ কি. মি.। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ভবিষ্যতের জন্য সহায়ক হলেও বর্তমানে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করছে। চলমান নির্মাণ কাজের জন্য স্টেশনকেন্দ্রিক রাস্তার প্রশস্ততা হ্রাস, খানা-খন্দের সৃষ্টি, রোড ডিভাইডার না থাকা, বর্ষাকালে ড্রেনেজ সিস্টেম যথাযথভাবে কার্যকরী না হওয়ায় নিচু অংশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় ধীরগতি ও যানজট দুঃসহনীয় পর্যায়ে নিয়ে যায়। তদুপরি সড়ক যানজট মুক্ত করতে এবং শৃঙ্খলা আনয়নে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। সকলের চেষ্টায় ঘরমুখী যাত্রীদের আমরা নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে কাজ করছি।
ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা পর্যন্ত চলাচলকারী আলম এশিয়া পরিবহনের চালক মিন্নত আলী বলেন, বিগত ৭-৮ বছর যাবত ঈদযাত্রায় ভয়াবহ দুর্ভোগ হয়েছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। তবে এবারই যানজটমুক্ত পরিবেশে গাজীপুর থেকে ঢাকায় যাতায়াত করতে পেরেছি। যাত্রী এবং পরিবহন সংশ্লিষ্ট সবাই খুশি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে সামিউল আলম নামে একজন বাসিন্দা বলেন, চাইলেই যানজটমুক্ত মহাসড়ক সম্ভব তা দেখিয়ে দিয়েছে জিএমপি।
জিএমপি অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে মারুফ হোসেন নামে একজন লিখেছেন, মহাখালী থেকে মাওনা মাত্র ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিটে এসেছি। গত কোরবানির ঈদে যেখানে সময় লেগেছিল প্রায় ৫ ঘণ্টা।
গাজীপুর থেকে প্রতিদিন ঢাকায় গিয়ে অফিস করেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সালাউদ্দিন মাহমুদ। তিনি জানান, এ বছর পবিত্র রমজান মাসে যানজটমুক্ত পরিবেশে ঢাকায় গিয়ে অফিস করতে পেরেছি। কয়েক বছর আগে যা কল্পনাও করা যেত না। রাস্তায় বিপুলসংখ্যক ট্রাফিক পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি যানজট নিরসনে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) আলমগীর হোসেন জানান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন এরিয়ায় বিদ্যমান সড়ক ও মহাসড়ক ময়মনসিংহ বিভাগের প্রবেশদ্বারের পাশাপাশি সিলেট, চট্টগ্রাম, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অধিকাংশ জেলার গণপরিবহন ও পন্য পরিবহনের চলাচলের মাধ্যম এবং বিপুলসংখ্যক অন্যান্য জেলার কর্মজীবী লোকের আবাসস্থল হওয়ায় ঈদের সময় জিএমপি ট্রাফিক এরিয়া বাংলাদেশের অন্যতম ব্যস্ত ইউনিটে পরিণত হয়। ফলশ্রুতিতে, আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরে জিএমপি এরিয়ায় যানজট সহনীয় পর্যায় ও সড়ক মহাসড়কের শৃঙ্খলা বজায় রাখাই ট্রাফিক বিভাগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। আমরা সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি।
(ঢাকাটাইমস/২১এপ্রিল/এলএ)

মন্তব্য করুন