বজ্রপাত থেকে বাঁচতে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের ১৯ নির্দেশনা

প্রতি বছরই দেশে এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত বজ্রপাত হয়। এতে বেশিরভাগ প্রাণ হারান মাঠে কাজ করতে যাওয়া কৃষক ও জেলেরা। এবছরও বজ্রপাতে প্রাণহানি হচ্ছে। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার দেশের ছয় জেলায় বজ্রপাতে আটজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হন আরও বেশ কয়েকজন। এ অবস্থায় আতঙ্কিত না হয়ে বজ্রপাত থেকে বাঁচতে বেশ কিছু জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
জরুরি নির্দেশনাগুলো হলো-
১/ এপ্রিল-জুন মাসে বজ্রবৃষ্টি বেশি হয়। বজ্রঝড় সাধারণত ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট স্থায়ী হয়। এ সময়টুকু ঘরে অবস্থান করুন।
২/ ঘন কালো মেঘ দেখা দিলে ঘরের বাহির হবেন না। অতি জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যেতে হলে রাবারের জুতা পরে বাইরে বের হতে পারেন।
৩/ বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা, খোলা মাঠ অথবা উঁচু স্থানে থাকবেন না।
৪/ বজ্রপাতের সময় ধানক্ষেত বা খোলামাঠে যদি থাকেন, তাহলে পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙুল দিয়ে নিচু হয়ে বসে পড়ুন।
৫/ যত দ্রুত সম্ভব দালান বা কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন। টিনের চালা যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন।
৬/ উঁচু গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার বা ধাতব খুঁটি, মোবাইল টাওয়ার ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন।
৭/ কালো মেঘ দেখা দিলে নদী, পুকুর, ডোবা বা জলাশয় থেকে দূরে থাকুন।
৮/ যদি কেউ গাড়ির ভেতর অবস্থান করেন, তাহলে গাড়ির ধাতব অংশের সঙ্গে শরীরের সংযোগ রাখা যাবে না। সম্ভব হলে গাড়িটি নিয়ে কোনো কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন।
৯/ বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি ও বারান্দায় থাকবেন না। জানালা বন্ধ রাখুন এবং ঘরের ভেতরে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম থেকে দূরে থাকুন।
১০/ বজ্রপাতের সময় মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ল্যান্ডফোন, টিভি ও ফ্রিজসহ সব বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন এবং এগুলো বন্ধ রাখুন।
১১/ বজ্রপাতের সময় ধাতব হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করবেন না। জরুরি প্রয়োজনে প্লাস্টিক বা কাঠের হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করতে পারবেন।
১২/ বজ্রপাতের সময় শিশুদের খোলা মাঠে খেলাধুলা থেকে বিরত রাখুন এবং নিজেরাও বিরত থাকুন।
১৩/ বজ্রপাতের সময় ছাউনিবিহীন নৌকায় মাছ ধরতে যাবেন না, তবে এ সময় সমুদ্র বা নদীতে থাকলে মাছ ধরা বন্ধ রেখে নৌকার ছাউনির নিচে অবস্থান করুন।
১৪/ বজ্রপাত ও ঝাড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির ধাতব রেলিং ও পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না।
১৫/ প্রতিটি বিল্ডিংয়ে বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন নিশ্চিত করুন।
১৬/ খোলা স্থানে অনেকে একত্রে থাকাকালীন বজ্রপাত শুরু হলে প্রত্যেকে ৫০ থেকে ১০০ ফুট দূরে দূরে সরে যান।
১৭/ কোনো বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে সবাই এক কক্ষে না থেকে আলাদা আলাদা কক্ষে অবস্থা নিন।
১৮/ বজ্রপাতে কেউ আহত হলে বৈদ্যুতিক শকে আহতদের মতো করেই চিকিৎসা করতে হবে। প্রয়োজনে দ্রুত চিকিৎসককে ডাকতে হবে বা হাসপাতালে নিতে হবে।
১৯/ বজ্রপাতে আহত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস ও হ্রদ স্পন্দন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
এসব নির্দেশনাগুলো দেশের মানুষকে মেনে চলার পরামর্শও দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
(ঢাকাটাইমস/২৮এপ্রিল/পিআর/ইএস)

মন্তব্য করুন