আলোচনায় নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা, কারা থাকবেন কারা বাদ পড়বেন?

জাফর আহমেদ, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১:৩৮ | প্রকাশিত : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:২৭

নির্বাচনকালীন সরকার গঠন নিয়ে চিন্তা করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকেরা। এই সরকারে কারা থাকবেন আর কারা বাদ পড়বেন—রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সর্বত্রই এখন এই আলোচনা।

আওয়ামী লীগ সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শেষে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে দেশ ফিরলেই নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের উদ্যোগ নেবেন।

সেই হিসাবে বলা যায়, অক্টোবর মাসেই নির্বাচনকালীন সরকারের একটি রূপরেখা তৈরি করা হবে। তফসিল ষোঘণার পরেই এই রূপরেখা অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে। এই সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহায়তা দেবে।

নির্বাচনকালীন ছোট আকারের এই সরকারের প্রধান থাকবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলো থেকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হবেন। তবে কারা সেই ছোট মন্ত্রী পরিষদে ঠাঁই পাবেন সেটি একান্তই সংসদ নেতার এখতিয়ার।

তবে কারা কারা সেই সরকারে ঠাঁই পেতে পারেন সেটির আভাস মিলেছে আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের সূত্র থেকে। তাতে দেখা যাচ্ছে, বর্তমান মন্ত্রিসভার অনেকেই যেমন বাদ পড়তে পারেন আবার যোগও দিতে পারেন বর্তমান মন্ত্রিসভায় না থাকা কেউ কেউ।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যাচ্ছে, নির্বাচনকালীন সরকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী মিলিয়ে ২৫ থেকে ৩০ জন সদস্য রাখার প্রাথমিক পরিকল্পনা আছে।

তবে এই সরকারের মন্ত্রিসভায় কতজন সদস্য থাকবেন, কে কে থাকবেন, কেমন হবে নির্বাচনকালীন সরকার—তা বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি-না তার ওপর অনেকটা নির্ভর করবে।

একেক জন মন্ত্রী একাধিক মন্ত্রণালয়ের রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনকালীন সময়ের এই সরকারে নতুন কোনো উপদেষ্টা থাকবে কি-না সেই ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

ক্ষমতাসীন দলের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু থাকবেন নির্বাচনকালীন সরকারে।

আরও থাকবেন সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী নির্বাচনকালীন সরকারে থাকতে পারেন।

এছাড়া আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুও থাকতে পারেন এই সরকারে। এই দুজন ২০১৪ সালেও নির্বাচনকালীন সরকারে ছিলেন।

জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদও নির্বাচনকালীন সরকারে থাকতে পারেন বলে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা কেউ কেউ ইঙ্গিত দিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের সূত্র বলছে, বিএনপি নির্বাচনে আসুক বা না আসুক একটা চাপ থাকবেই। তাই এমন ব্যক্তিদের নির্বচানকালীন সরকারে রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে যারা এই চাপ সামাল দিয়ে এগোতে পারবেন।

ফলে ধারনা করা হচ্ছে বর্তমান মন্ত্রিসভায় নেই এমন হেভিওয়েট আওয়ামী লীগ নেতা যারা এর আগে মন্ত্রী ছিলেন, তাদের কেউ কেউ নির্বাচনকালীন সরকারে ঠাঁই পাবেন। এমনটাই ধারণা দিচ্ছে আওয়ামী লীগের সূত্র।

বর্তমান সংসদের ২৪তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অক্টোবরে চলতি সংসদের আরেকটি অধিবেশন বসবে। সেটিই হবে শেষ অধিবেশন। এরপর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে।’

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতার এই বক্তব্যের সারকথা, সরকার ও আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের পথে এগোচ্ছে। অর্থাৎ একাদশ সংসদের ২৫তম তথা সবশেষ অধিবেশনের পর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হবে।

সরকারি দলের নীতিনির্ধারণী সূত্র বলছে, নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভার আকার নিয়ে প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই মন্ত্রিসভায় কতজন থাকতে পারেন সেই সিদ্ধান্ত আসতে পারে আগামী ২৬ অক্টোবরের যৌথসভায়। এরইমধ্যে এমন আভাসই দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি একাদশ সংসদের প্রথম বৈঠক বসে। সেই হিসাবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে। বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ বহাল রেখে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে এর পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

অর্থাৎ ১ নভেম্বর থেকে ৯০ দিনের নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হবে। ওই ক্ষণ গণনা শুরু হতে আর মাত্র বাকি ৪২ দিন। আবার ইসি মো. আনিছুর রহমান এরইমধ্যে জানিয়েছেন, নভেম্বরের প্রথমার্ধে তপসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। আর আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী মিলিয়ে ছিল ২৯ সদস্য। এর বাইরে ছিলেন ১০ জন উপদেষ্টা। ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নেতৃত্বে সর্বদলীয় এ মন্ত্রিসভা গঠন করেন। ওই মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে পাঁচজন মন্ত্রী ও দুজন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।

দশম সংসদের শেষ বৈঠক বসেছিল ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর। আর ৮ নভেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৮সেপ্টেম্বর/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

সরকারের জলবায়ু সংক্রান্ত পদক্ষেপ দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ঝুঁকি হ্রাস করেছে: প্রধানমন্ত্রী

মাদকের নতুন ডিজি মোস্তাফিজুর রহমান 

সহকারী শিক্ষক নিয়োগের দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫৪৫৬

কমলা ভাসিন অ্যাওয়ার্ডের জন্য বাংলাদেশিদের আবেদনের আহ্বান

কাদের সাহেবরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে: রিজভী

যুক্তরাষ্ট্র সামনের দিকে তাকাতে চায়, পেছনে নয়: ডোনাল্ড লু

অর্থমন্ত্রী করোনায় আক্রান্ত

মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা সড়কে দুর্ঘটনা কমাবে: রোড সেফটি কোয়ালিশন

মাতৃমৃত্যু রোধে বাংলাদেশ ‘অভাবনীয়’ উন্নতি করেছে: ইউএনএফপিএ

উদ্ভাবনে উপকৃত হবেন কৃষকরা, উৎপাদন বাড়বে ফসলের: কৃষিমন্ত্রী 

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :