নিজে ঘুমায় ফুটপাতে, বিড়াল ঘুমায় রাজ প্রাসাদে!

সকাল সাড়ে ৯টা। রাজধানীর নিউ বেইলী রোডে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিপরীত পাশের ফুটপাতে শুয়ে আছেন ৩ জন। তারা সবাই একই পরিবারের। এর মধ্যে ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ পুরুষ, একজন পঞ্চাশোর্ধ্ব নারী। নারীর কোল ঘেঁষে শুয়ে আছে দুটি বিড়ালছানা ও তার তাদের ছোট্ট ছেলে। ঠিক তাদের পাশেই কাঠের তৈরি একটি ছোট্ট ঘরে আরামে ঘুমে বিভোর হয়ে আছে তাদের মার্জার বিড়ালটি। বিড়ালটির শুয়ে থাকা দেখে মনে হয় এ যেন এক রূপকথার রাজ্যে রাজকীয় প্রাসাদে আপন চিত্তে শুয়ে থাকা। অপর দিকে তাদের মালিকরা শুয়ে আছে ফুটপাতে। কিন্তু কোনো অভাব তারা বিড়ালটিকে বুঝতে দেন না।
ফুটপাতে শুয়ে থাকা মানুষগুলোর থাকার মতো কোনো ঘর নেই, নেই কোনো খাবারের নিশ্চয়তা। যখন যা পায় তাই তাদের খেতে হয় জীবন বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে। কিন্তু নিজের খাবার বা ঘর না থাকলে কী হবে, তার বিড়ালের কোনো কিছুর কমতি রাখেনি জীর্ন- শীর্ণ এই নারী।
বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’- বিখ্যাত এই লাইনটি বাঙালি লেখক সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের। লেখকের এই লেখনীতে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে সমাজে যার অবস্থান যেখানে তাকে সেখানেই মানায়।
কিন্তু যুগের পরিবর্তনে সময়ের পরিক্রমায় তার উল্টো চিত্র দেখা যায় হরহামেশাই। ভালোবাসার এই নিবিড় সম্পর্ক এখন ছড়িয়ে পড়েছে মনুষ্য থেকে বন্য প্রাণীতে। শখের প্রাণীকে বশ করে ঘরে তুলে এখন আদর যত্ন দিয়ে আগলে রাখা হচ্ছে। মনুষ্য পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পশু-প্রাণীদের লালন করা হচ্ছে। পূরণ করা হচ্ছে প্রিয় পশুটির সব চাহিদা। খাওয়া-দাওয়া, ঘুমের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে চারদেয়ালের মাঝেই। প্রিয় পোষ্যকে পরম বন্ধু করে আগলে রাখছে মানুষ। তারই বাস্তব উদাহরণ যেন এই ছবি।
(ঢাকাটাইমস/২৭নভেম্বর/এআর)

মন্তব্য করুন