নির্বাচন পেছানোর সুযোগ আছে, তবে ২৮ জানুয়ারির বাইরে নয়: ইসি রাশেদা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবশ্যই সংবিধান অনুযায়ী হবে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, কোনো কারণে নির্বাচন পেছালেও সংবিধান অনুযায়ী তা ২৮ জানুয়ারির বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, আমাদের ঐকান্তিক চাওয়া হলো নির্বাচনে সব দলই অংশগ্রহণ করুক। আমরা এখনও আশাবাদী সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। তারা যদি নির্বাচনে আসে তাহলে আমরা অবশ্যই বিবেচনায় নেবো। তাদের জন্য স্পেস আছে। তবে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের মেয়াদকালের মধ্যেই আসতে হবে।
সোমবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বগুড়া বিয়াম ফাউন্ডেশনের অডিটোরিয়ামে রাজশাহী বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট ও নওগাঁ জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তাগণের সমন্বয়ে আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ইসি রাশেদা।
নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা আরো বলেন, আমাদের নিবন্ধিত দল ৪৪টি। এর মধ্যে ৩০টি দল নির্বাচনে এসেছে। তার মানে মেজরিটি অংশটাই কিন্তু আসছে। আইনে কিন্তু এরকম কিছু নাই যে সব দলই আসতে হবে। যারা উইলিং তারা আসবেন। আনউইলিং তাদের আমরা কিভাবে আনবো? আমরা তো চেষ্টা করেছি। আনউইলিং না আসলেই যে নির্বাচন হবে না, তা কিন্তু না। নির্বাচন কিন্তু আইনত বৈধভাবেই হয়ে যাবে। উনারা আসলে আমরা ওয়েলকাম করবো। অবশ্যই আমরা খুশি হবো।
নির্বাচনে কেন্দ্রগুলোতে সিসি ক্যামেরা রাখার প্রসঙ্গে ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, এ বিষয়ে আর কোনো কথা নেই আমাদের। কারণ সিসি ক্যামেরা দিলে ৪২ লাখ কক্ষে দিতে হবে। এক সাথে এতগুলো ক্যামেরা স্থাপনের সক্ষমতা কোনো কোম্পানির নেই।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসুক আর না আসুক নির্বাচনে সেনা বাহিনীর বিষয়ে আমাদের চিন্তা আছে যে আনবো। কারণ বিগত কয়েকটি নির্বাচন থেকে দেখছি যে সেনাবাহিনী আমাদের স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করে। এটা আমাদের মাথায় আছে। কিন্তু এটা এখনও ফরমালি জানানো হয়নি। আমরা প্রয়োজন বুঝে অবশ্যই সেনাবাহিনীকে নিয়োগ করার চেষ্টা করবো।
সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে ইসি রাশেদ সুলতানা বলেন, আইনে বাধার কারণে তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেয়া যাবে না। তারা শুধু স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবো। আইন ব্যত্যয় করে কাউকে কাউকে কিছু দিতে পারি না।
ইসি রাশেদা বলেন, আগে আরপিওতে যদি গণমাধ্যম কর্মীদের বাধা দেয়া হতো, তাদের ইকুপমেন্ট যদি নিয়ে নেয়া হতো এটা শাস্তির আওতায় ছিলো না। আমরা কিন্তু এটার শাস্তির আওতায় এনেছি। কেউ যদি আপনাদের বাধা দেয়, আপনাদের আঘাত করে, আপনাদের জিনিসপত্রে কেড়ে নেয়, আপনারা সাথে সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী অথবা মাঠে যারা ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করবেন তাদেরকে বলবেন। অবশ্যই এটার ব্যবস্থা হবে, শাস্তি হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এই প্রস্তুতি সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর। প্রস্তুতি সভায় বগুড়া ছাড়াও সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাটের জেলা রিটার্নিং অফিসার, পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, থানার অফিসার ইনচার্জরা উপস্থিত ছিলেন। বগুড়ার ৭ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৮ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৪। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৪ লাখ ৪ হাজার ৩২১ এবং নারী ভোটার ১৪ লাখ ২৪ হাজার ২৩ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৯৬৯টি। ভোট কক্ষ স্থায়ী ৫ হাজার ৮১৫টি ও অস্থায়ী ৪০৮ টি মিলে মোট ৬ হাজার ২২৩টি কক্ষে ভোট দেবেন জেলাবাসী।
(ঢাকাটাইমস/২৭নভেম্বর/এআর)