বেসামাল বাজার, সরকারের নজর নির্বাচনে

হাসান মেহেদী, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:১৫| আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:২৭
অ- অ+

রাজধানীসহ সারা দেশে নিত্যপণ্যের বাজারে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সরকার যখন নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত তখন নিত্যপণ্যের বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীরা জিম্মি করে ফেলছে ভোক্তাদের। বেসামাল হয়ে উঠেছে বাজার সিন্ডিকেট।

রাজধানীর সব পাইকারি ও খুচরা বাজারের চিত্রই এমন দেখা যাচ্ছে।

শুক্রবার ছুটির দিনে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই ক্রেতাদের ভিড়। তবে তাদের সবারই চোখেমুখে চাপা ক্ষোভ আর হতাশা বিরাজ করছে। পণ্যের অতিরিক্ত দাম চাওয়ায় মাঝেমধ্যে বিক্রেতাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায়ও জড়ান অনেকে।

যাত্রাবাড়ী আড়তের ব্যবসায়ী মো. বাবলা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘হরতাল অবরোধের মধ্যে ঢাকায় গাড়ি ঢোকানো কষ্ট হয়ে যায়। বেশি ভাড়া দিয়ে আমরা মাল (সবজি) আনি। তাই বেশি দামেই বেচতে হয়।’

শফিকুল নামের আরেক ব্যবসায়ী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সব জিনিসেরই দাম একটু বেশি থাকে। আমরা বেশি দামে কিনি তাই বেশি দরে বেচি। সরকার তো আমাগো কম দামে মাল কিনতে সাহায্য করে না।’

তিনি বলেন, ‘খামারিরা দাম কম রাখলেও আমাদের বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা দিতে হয়।’

কেরানিগঞ্জের জিনজিরা বাজারে দেখা গেছে, মাঝারি আকারের একটি লাউ ৬০-৭০ টাকা বিক্রি করা হয়। অথচ দুদিন আগেই এ ধরনের লাউয়ের দাম ছিল ৪০-৫০ টাকার মধ্যে।

বাজারগুলোতে শীতকালীন শাকসবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম কমেনি। প্রতিটি বাঁধাকপির পাইকারি মূল্য ১৫-২৫ টাকা, খুচরা মূল্য ৪০-৬০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি পাইকারি দরে ২০-৩০ টাকা হলেও খুচরা মূল্য ৪০-৬০ টাকা। খুচরা মূল্যে শিম বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১০০-১২০ টাকা, কাচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৫০ টাকা দরে। শুক্রবারের কাচাবাজারের সঙ্গে গত সপ্তাহের তুলনা করলে দেখা যায়, প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে ১০-২০ টাকারও বেশি। তবে নতুন করে ডাম বাড়েনি চাল, আটা, ডাল, চিনিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের।

কেরানিগঞ্জের বাসিন্দা সোলাইমান হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সরকার এখন নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত, আমাদের কথা ভাবার সময় কারো নেই। সরকার যদি সিন্ডিকেট ভেঙে জিনিসপত্রের দাম কমাতো তাহলে আমাদের কাছে ভোট চাওয়া লাগতো না। আমরা সবাই এই সরকারকেই ভোট দিতাম।’

ওয়ারী এলাকায় রাস্তায় সবজি বিক্রি করা সাইদুল ঢাকা টামসকে বলেন, ‘আমরা এখনো শাকসবজির দাম বাড়াই নাই। সব খরচ বাদ দিয়ে কম দামেই শাকসবজি বেচি। বেশি দাম চাইলে মানুষ মাল (সবজি) না নিয়ে কম দামে যেখানে পায় সেখানে চলে যায় ‘

সবজি কিনতে আসা ওরারীর ওয়ার স্ট্রিট এলাকার বাসিন্দা শম্পা রানী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘কয়দিন ধরে নতুন নতুন শাকসবজি পাওয়া যাচ্ছে। তবে দাম অনেক বেশি। এই যে সব জিনিসের দাম বাড়ছে সেইদিকে সরকারের নজর আসে না।’

বাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মোটা ও মাঝারি মানের চালের দাম। মোটা চালের কেজি ৫২ থেকে ৫৪ টাকা। মাঝারি মানের চাল ৫৯ থেকে ৬০ টাকা এবং সরু চালের মধ্যে মিনিকেট মানভেদে ৬৫ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কয়েকজন মুদি দোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মাসের তুলনায় কেজিতে আটার দাম বেড়েছে ১০ টাকা এবং ময়দায় বেড়েছে ৫ টাকা। এছাড়া আলুর দাম বেড়েছে কেজিতে ৫-১০ টাকা।’

এদিকে বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমলেও দেশে কমেনি। খুচরা বাজারে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৫০-১৬০ টাকা এবং ১ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৮-১৮০ টাকা রাখা হচ্ছে।

বাজার দর বাড়ার কারণ জানতে চাইলে একাধিক খুচরা ব্যবসায়ি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সবাই ব্যস্ত। সবার নজর নির্বাচনের দিকে। এই সুযোগে বড় বড় ব্যবসায়ি সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। দেশে এখন চাল-ডাল থেকে শুরু করে সব নিত্যপণ্যেরই দাম বেশি।’

(ঢাকাটাইমস/১ডিসেম্বর/এইচএম/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পোপ হলেন উত্তর আমেরিকান রবার্ট প্রিভোস্ট, বিশ্ব নেতাদের অভিনন্দন
আ.লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনার সামনে রাতভর অবস্থানের পর সকালেও বিক্ষোভ
এলাকাবাসীর বিক্ষোভ-অবস্থানের মধ্যে অভিযানের সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর গ্রেপ্তার সাবেক মেয়র আইভী
মানবিক করিডরের নামে কোনো কিছু জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না, মির্জা ফখরুলের হুঁশিয়ারি 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা