স্কুলে এঁটো থালা মাজতে হতো ৬ বছরের শিশুর, অভিযোগ করায় বহিষ্কার
চীনের একটি স্কুলে মাত্র ৬ বছর বয়সি এটি শিশুকে দিয়ে তিন সপ্তাহ ধরে থালা-বাসন মাজতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিশুটির বাবার দাবি এ বিষয়ে তিনি স্কুলে অভিযোগ দায়ের করার পর, তার মেয়েকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
চীনা সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিন্ডারগার্টেনে প্রতিদিন অন্তত ২৫টি শিশুর এঁটো বাসন মাজতে হত শিশুটিকে। ২১ দিন ধরে এ জঘন্য কাজ চললেও, প্রথমে বিষয়টি জানতেই পারেনি শিশুটির পরিবার।
সম্প্রতি চীনা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ওয়েইবোতে এক ভিডিও বার্তায় এই গুরুতর অভিযোগ করেছেন মেয়েটির বাবা ইউ।
ইউ জানান, তার মেয়ে রোজ ঘামে ভিজে বাড়ি ফিরত। স্কুল থেকে ফিরে সবসময় অত্যন্ত ক্লান্ত থাকত সে। একদিন মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে শিশুটি তাকে জানিয়েছিল, সে আর কিন্ডারগার্টেনে যেতে চায় না। তার বাবা-মা অবাক হয়ে জানতে চেয়েছিলেন, স্কুলে কি কিছু ঘটেছে? এ সময় ছোট্ট মেয়েটি জানিয়েছিল, প্রতিদিন স্কুলে গিয়ে থালা-বাসন মাজতে মাজতে সে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে। অন্য বাচ্চারা যখন খেলাধুলো করে, তখন তাকে একা একা বাসন মাজতে হয়।
ইউ আরও বলেন, তার শিশুকন্যাকে স্কুলে বাসন মাজানো হচ্ছে জনতে পেরে চমকে গিয়েছিলেন তিনি। তবে তার চমকের আরও বাকি ছিল। কিন্ডারগার্টেনে গিয়ে এই বিষয় নিয়ে অভিযোগ জানান তিনি। মেয়ের শিক্ষক ইউকে পরিস্কার জানিয়েছিলেন, তার মেয়ে বড্ড বেশি ‘প্রাণবন্ত’, তাকে কিছুতেই শান্ত করা যায় না। একমাত্র ক্লান্ত হয়ে গেলেই সে ঘুমিয়ে পড়ে। আর নিয়মিত বাসন মাজলে তার মেয়ে মানসিক এবং শারীরিকভাবে শক্তিশালী হবে।
স্বাভাবিকভাবেই কিন্ডারগার্টেনের এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হননি ইউ। তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। এরপর থেকেই স্কুলে তার মেয়েকে নানাভাবে হেনস্থা করা শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত তাকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয় বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, স্কুল থেকে বহিষ্কারের বিষয়টি আগে থেকে তাদেকে জানানোও হয়নি। আগে থেকে কোনও নোটিশ দেওয়া হয়নি। শিশুটির দাদা-দাদি শিশুটিকে স্কুল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসতে গেলে তাদের জানানো হয়, তাদের নাতনিকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে।
এদিকে কিন্ডারগার্টেন কর্তৃপক্ষ বলেছে, ইউ তাদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করছেন। তাই ইউয়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
কিন্ডারগার্টেন কর্তৃপক্ষ আরও দাবি করেছে, কখনই শিশুদের প্রতি কোনো অবৈধ বা অনুপযুক্ত আচরণ করা হয়নি। কোনও শিক্ষার্থী যদি স্কুলের নিয়ম না মানে, তাহলে তাকে বহিষ্কারের অধিকার আছে স্কুলের।
এ ঘটনায় স্থানীয় শিক্ষা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করবে।
(ঢাকাটাইমস/০৩ডিসেম্বর/এমআর)