বাবার মতো জীবন উৎসর্গ করে পথে নেমেছি: শেখ হাসিনা

​​​​​​​নিজস্ব প্রতিবেদেক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:১৯| আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ২০:০৮
অ- অ+

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমিও আমার বাবার মতো জীবন উৎসর্গ করে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পথে নেমেছি। আমার একমাত্র শক্তির উৎস দেশের জনগণ।

সোমবার ধানমন্ডি কলাবাগান মাঠে নির্বাচনি জনসভায় এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। এই জনসভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু দেশ গড়ায় হাত দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা গড়ে তুলেছিলেন। ১৯৭২ সালে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৭২ ডলার। মাত্র তিন বছর ৭মাসে ২৭৭ মার্কিন ডলার মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু৭৫- পর ক্ষমতা দখল করে অস্ত্র হাতে নিয়ে যারা ক্ষমতায় এসেছিল তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করলেও দেশের মানুষের ভাগ্য তারা পরিবর্তন করেননি। বঙ্গবন্ধু এদেশের প্রবৃদ্ধি নয় ভাগে উন্নতি করেছিলেন, যা অন্য কোনো সরকার আজও পর্যন্ত করতে পারেনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশটাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়। শুরু হয় দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি। ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ, জয় বাংলা বলা নিষিদ্ধ করা। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ চেতনাকে সম্পূর্ণ জলাঞ্জলি দিয়ে দেওয়া। এরশাদ জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে নিলেও দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় আর বৃদ্ধি করতে পারেনি। প্রতি বছর যা আরও কমতে থাকে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ক্ষমতা দখল করে দেশের মানুষের ভাগ্য বদল না করলেও ক্ষমতা দখলকারীদের ভাগ্য বদল করে। ক্ষমতার দখল করে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দল গঠন হয় সেটি হলো বিএনপি। স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা আল বদর বাহিনী করেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে, দেশের মা-বোনদের নির্যাতন করেছে, ঘরবাড়ি জ্বালিয়েছে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু সংবিধান বাতিল করে তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দেয় জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের কোনো দিন বিচার হবে না বলে আইন জারি করে। তাদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেন জিয়াউর রহমান।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি যখন দেশে ফিরে আসি তখন বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না, মামলা করতে গেলেও মামলা নেওয়া হয়নি। বাবা-মা ভাই বোন হত্যার বিচার পাওয়ার অধিকারটুকুও ছিল না। এভাবেই মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়। আইনের শাসন পদদলিত করে বিচারহীনতার কালচার শুরু করেছিল বিএনপি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যেদিন আমি দেশে ফিরে আসি, তখন হাজারো মানুষের মধ্যে আমার চেনা মুখগুলো আমি খুঁজলেও কামাল-জামাল কারো চেনা মুখগুলো আমি খুঁজে পাই না। তবে আমি দেশের হাজার হাজার মানুষ পেয়েছিলাম আমার পাশে। তখন আমি বলেছিলাম এই বাংলাদেশের মানুষেই আমার পরিবার। এদের মাঝেই খুঁজে পাবো আমার পরিবারের ভালোবাসা স্নেহ মর্যাদা। আমার একমাত্র শক্তি দেশের জনগণ। আমিও আমার বাবার মতো জীবন উৎসর্গ করে পথে নেমেছি মানুষের জন্য কাজ করতে।

‘আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। বারবার আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হলেও কোনো অস্ত্র গোলাবারুদ আমাকে বাধা দিয়ে রাখতে পারেনি। আমার একটা প্রত্যয় ছিল এ দেশের মানুষের জন্য আমি কাজ করবো। সবার খাদ্য-চিকিৎসা-বাসস্থানের ব্যবস্থা করে একটি উন্নত জীবন দেব। সেটা আমরা করতে পেরেছি, এখনও আমাদের এই কাজ চলমান আছে।’ বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির কারণে ২০০৮ সালে জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। সেই নির্বাচনে ২৩৩ আসন পেয়ে সরকার গঠন করেছি আর বিএনপি পেয়েছিল ৩০টা। ২০১৮ সালে নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে। তারেক জিয়া দেয় নমিনেশন, গুলশান থেকে ফখরুল দেয় নমিনেশন, পল্টন অফিস থেকে রিজভী দেয়। ওইভাবে নমিনেশন বিক্রির ফলে তাদের নির্বাচন ভেস্তে যায়। আর তারা দোষ দেয় আওয়ামী লীগের।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। কারণ তারা ভোট চুরি করতে পারবে না। ভোট চুরি করতে পারবে না বলেই নির্বাচন বানচাল করতে চায় বিএনপি। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে, নির্বাচন বানচাল করবে এতো সাহস তাদের নেই। বিএনপি শুধু মানুষ হত্যা, খুন, গুম, জ্বালাও-পোড়াও করতে পারে। ২০১৩-১৪ সালে আগুনে মানুষ পুড়িয়েছে, কিন্তু নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি। নৌকায় মার্কায় ভোট দিলে আগুন সন্ত্রাসের প্রতিবাদ হয়।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা মানুষের হৃদয় জয় করে তাদের ভোট পাই, চুরির প্রয়োজন হয় না। তারা (জিয়া-এরশাদ) ভোট চুরি করে, এটা আমার কথা না। হাইকোর্টের রায় আছে— জিয়ার ক্ষমতা দখল অবৈধ, এরশাদের ক্ষমতা দখল অবৈধ।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বক্তব্যের শুরুতেই নতুন বছরে সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।

(ঢাকাটাইমস/০১জানুয়ারি/জেএ/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এপ্রিলের ২৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ২৬০ কোটি ৭৬ লাখ ডলার
নির্ধারিত সময়ের দুই মাস আগেই সব দেনা পরিশোধ করল পেট্রোবাংলা
ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব: অর্থ উপদেষ্টা
উপদেষ্টাদের সঙ্গে পুলিশের মতবিনিময়, বিভিন্ন প্রস্তাব বাস্তবায়নের আশ্বাস
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা