সোনারগাঁয়ে নির্বাচনি সহিংসতায় যুবক নিহতের ঘটনায় ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ মার্চ ২০২৪, ১৭:৫১

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নির্বাচনি সহিংসতায় হৃদয় ভূইয়া নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এ ঘটনায় শনিবার রাতে নিহত হৃদয়ের বড় ভাই মো. ইকবাল হোসেন ভূইয়া বাদী হয়ে নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী আজিজ সরকারসহ ২১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত অনেককে আসামি করে মামলা করেন।

সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মহসিন ঢাকা টাইমসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। সংঘর্ষের ঘটনায় আরও একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এর আগে শনিবার উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হৃদয় নিহত এবং তার চাচাতো ভাই ওমর ফারুক গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার বিকালে পিরোজপুরের ৬৯ নম্বর দুধঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে নির্বাচনি ফল প্রকাশকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত হৃদয় ভূইয়া দুধঘাটা গ্রামের আমির আলী ভুঁইয়ার ছেলে। তিনি নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বী কায়সার আহম্মেদ রাজুর সমর্থক। ঘটনার পর ওই এলাকা পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, পিরোজপুর ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচনে শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইউপি সদস্য পদে দুধঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে মোরগ প্রতীকে আব্দুল আজিজ সরকার ও তালা প্রতীকে কায়সার আহম্মেদ রাজু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোটগ্রহণ শেষে আজিজ সরকার মোরগ প্রতীকে ৯২৯ ভোট ও তালা প্রতীকে কায়সার আহম্মেদ রাজু ৮১১ ভোট পান।

ফলাফল জানার পর ওই কেন্দ্রের প্রিজাইর্ডিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে পরাজিত প্রার্থী রাজু পুনরায় ভোট গণনার অনুরোধ করেন। পুনরায় ভোট গণনা করে রাজুর পক্ষে এক ভোট যুক্ত হয়। এ নিয়ে রাজুর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলে তিনি প্রিজাইর্ডিং কর্মকর্তাকে তৃতীয় দফায় ভোট গণনা করতে দাবি করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে রাজু কেন্দ্র হতে বের হয়ে বিষয়টি তার কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিলে নির্বাচনি দায়িত্বে থাকা লোকজনকে ব্যালট বাক্স নিয়ে উপজেলায় আসতে বাধা সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে পুলিশ, দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।

পরে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি, রাবার বুলেট, টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। এসময় কায়সার আহম্মেদ রাজুর সমর্থক হৃদয় ভূইয়া ও ওমর ফারুক গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়াও আপন, সাখোয়াত, মফিজুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, রাশেদ ও রিপনসহ ১২জন আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে হৃদয় ভূইয়া মারা যান।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) সাইফুল ইসলাম, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) খবিরউদ্দিন, কনস্টেবল মঞ্জু মিয়া, জুয়েল রানা, আব্দুস সালাম, কবির হোসেন, নূর মোহাম্মদ, আল আমিন আহত হন। পুলিশ সদস্যদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী আজিজ সরকার সহ ২১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত অনেককে আসামি করে মামলা দায়ের করেন নিহত হৃদয়ের বড় ভাই মো. ইকবাল হোসেন ভূইয়া। গতকাল থেকে পুরুষশূন্য দুধঘাটা এলাকা নারীদের কান্নায় ভারী হয়ে আছে।

উল্লেখ্য, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মুজিবুর রহমান গত বছরের ২০ মে ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হলে এ পদটি শূন্য হয়। ফলে শনিবার শূন্য পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

(ঢাকা টাইমস/১০মার্চ/প্রতিনিধি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :