সরেজমিন ট্রাফিকের ইফতার

এক হাতে ইফতারের পানির বোতল, আরেক হাতে যান চলাচলের ইশারা ডিসির

​​​​​​​লিটন মাহমুদ, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৫:০৮ | প্রকাশিত : ২৭ মার্চ ২০২৪, ২৩:১২
সড়কে দাঁড়িয়ে যান নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সহকর্মীকে নিয়ে ইফতার করছিলেন ট্রাফিকের রমনা বিভাগের ডিসি জয়নুল আবেদীন

ইফতারির বাকি ৮ মিনিট। সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে তাহাহুড়ো করে বাসায় পৌঁছতে ব্যস্ত নগরের মানুষ। এরমধ্যে হঠাৎই রাজধানীতে বৃষ্টির আগমন। এসময় চোখ আটকালো মিন্টো রোডের শহীদ ক্যাপ্টেন মুনসুর আলী সরণীর ট্রাফিক সিগন্যালে। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই এখানে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে রাস্তার একপাশ থেকে অন্যপাশে ছুটছেন ট্রাফিক পুলিশের চার সদস্য। চোখেমুখে সবারই ক্লান্তির ছাপ।

এরইমধ্যে পড়ল মাগরিবের আজান। মুহূর্তেই শহরজুড়ে শুরু হয় ইফতারের ব্যস্ততা। তখনও কাকরাইল-মগবাজার সড়কটিতে যানজট লেগে আছে। এমন পরিস্থিতিতে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ইফতারের সুযোগ দিয়ে সড়কের সিগন্যালে দাঁড়ালেন ট্রাফিক রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) জয়নুল আবেদীন। এসময় পাশ থেকে ইফতারির প্যাকেট ও পানির বোতল নিয়ে তার কাছে এলেন সহকারী শহর উপপরিদর্শক (এটিএসআই) মো. আমিনুল হক। তবে যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় শুধু পানি নিয়ে রোজা ভাঙলেন ডিসি। পানি পানের সঙ্গে সঙ্গে দিচ্ছিলেন গাড়িগুলোকে চলাচলের ইশারা।

কয়েক মিনিট পর শহীদ ক্যাপ্টেন মুনসুর আলী সরণীর ট্রাফিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে ইফতারের প্যাকেট হাতে নিলেন জয়নুল আবেদীন। ইফতার করতে করতে ঢাকা টাইমসের সঙ্গে আলাপ হয় এই পুলিশ কর্মকর্তার। জানান, বিকাল ৪টার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীতে গাড়ির চাপ বাড়ে। এজন্য প্রতিদিন এই সময়ে রমনা বিভাগের ট্রাফিক তদারকিতে রাস্তায় নামেন তিনি। বুধবার বেরিয়ে ইফতারের সময় এই ট্রাফিক সিগন্যালে অবস্থান নেন তিনি।

এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপের একপর্যায়ে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের কষ্টের কথা তুলে ধরলেন জয়নুল আবেদীন। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, ‘সারাবছর রোদ-বৃষ্টি, ঝড়, ধুলো-ধোঁয়া ও গাড়ির শব্দ মাথায় নিয়েই রাস্তায় দায়িত্ব পালন করে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। রমজান মাসেও এর ব্যতিক্রম হয় না। রোজা রেখে ট্রাফিক পুলিশদের এই চাপ নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এরপরও রাজধানীবাসীর সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে কাজ করেন তারা। ইফতারের সময় ইফতারও করেন সড়কে দাঁড়িয়েই।’

পুলিশ বাহিনীতে নিয়োজিতদের দায়িত্ববোধের বিষয়ও উঠে এসেছে এই কর্মকর্তার কথায়। সড়কে দায়িত্ব পালনের সঙ্গে ইফতার সেরে নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পুলিশে যারা কাজ করেন তাদের আন্তরিকতা ও পেশাদারত্বেরই বহিঃপ্রকাশ এটি। পুলিশে চাকরির মাধ্যমে সুনাগরিক হিসেবে নিজেদের আত্মঅহংকারের জায়গাও তৈরি হয়েছে। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই মানুষের সেবা দেওয়ার সঙ্গে নিজেদের ইফতারিটা করে নেই। এই কাজটা করে আমরা আনন্দই পাই, মানসিক তৃপ্তি খুঁজে পাই।’

জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আমরা প্রতিটি মুহূর্তেই একে অপরের উপর নির্ভরশীল। সমাজের প্রতিটি মানুষই প্রতি মুহূর্তে অন্যের কাঁধে ভর করে চলি। সেই দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে, তাদেরকে সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য সহযোগিতা করতে পেরে পুলিশ সদস্য হিসেবে আমরা গর্ববোধ করি।’

ট্রাফিক পুলিশে দায়িত্ব প্রসঙ্গে মতামত জানতে কথা হয় রেজওয়ান ভূঁইয়া নামে একজন পথচারির কাছে। তিনি বলেন, ‘ট্রাফিক পুলিশের জীবন ভিন্নধর্মী। কর্মব্যস্ত দিন শেষে সবাই যখন বাসায় ফিরতে ছুটাছুটি করেন, তখন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা ব্যস্ত থাকেন মানুষের চলাচলের পথ সহজ করে দিতে।’

(ঢাকাটাইমস/২৭মার্চ/এলএম/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

বৃষ্টি কামনায় মোহাম্মদপুরে জাপার উদ্যোগে ইসতিসকার নামাজ

রাজধানীর শনিরআখড়াসহ বেশ কিছু এলাকায় ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না আজ

মুগদায় আইডিয়াল শিক্ষার্থীকে পিষে মারল ময়লার গাড়ি, চালক আটক

পুরান ঢাকায় বাবার সঙ্গে অভিমান করে স্কুল শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যু: বিচার চায় সচেতন নাগরিক সমাজ

তীব্র তাপপ্রবাহে জনসাধারণের মাঝে পানি, খাবার স্যালাইন বিতরণ বিএনপির

মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেও নেতাকর্মীরা আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে: সালাম

ঢাকা মেডিকেলে এক কারাবন্দিকে মৃত ঘোষণা

ভাষানটেকে অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫, বাকি একজনও আশঙ্কাজনক

মুগদা-মান্ডা সড়কে অভিযান: ব্যক্তিগত সম্পত্তি ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ  

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :