শিল্প খাতে শ্রমিকদের প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করতে হবে: আইবিসি

দেশের বিভিন্ন শিল্প খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার ক্রমাগত বাড়ছে। গার্মেন্টস শিল্পেও প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন প্রযুক্তি যুক্ত হচ্ছে। এতে শ্রমিকদের কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। এ অবস্থায় সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়কারী এই খাত হুমকির মধ্যে পড়তে পারে। এ থেকে উত্তরণের জন্য গার্মেন্টস শ্রমিকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে মহান মে দিবস উপলক্ষে ‘গার্মেন্টস শিল্পের প্রযুক্তি ব্যবহার শ্রমিকদের জন্য হুমকি নাকি সুযোগের নতুন দ্বার উন্মোচন’ শীর্ষক এক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। সংলাপের আয়োজন করে ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি)।
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের কর্মসূচি শাখার উপপরিচালক মাহমুদুল হাসান খান।
তিনি বলেন, গার্মেন্টস শিল্প বর্তমানে রাজনৈতিক অস্থিরতা, মুদ্রাস্ফীতি, ব্র্যান্ডস-বায়ারদের আচরণে পরিবর্তন, নিম্নতম মজুরি, অধিক উৎপাদন খরচ, কারখানার নিরাপত্তা সমস্যা ও পরিবেশগত ঝুঁকি, দক্ষ শ্রমিকের অভাব, জলবায়ু পরিবর্তন ও অতি-উষ্ণতা, পোশাকের বৈচিত্র্যের অভাব, নিজস্ব কাঁচামালের শিল্পের অপ্রতুলতা এবং শ্রম আইন সংশোধনসহ নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।
মাহমুদুল হাসান বলেন, যেকোনো শিল্প খাতে যখন নতুন প্রযুক্তি আসে, তখন তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে বর্তমানে দেশের প্রায় ২৫৩টি কারখানা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে অর্ডার সম্পন্ন করছে।
প্রযুক্তির কারণে গার্মেন্টস শিল্পে শ্রমিকের সংখ্যা কীভাবে কমছে তা তুলে ধরে মাহমুদুল হাসান খান বলেন, আগে তৈরি পোশাক খাতের কাটিং সেকশনে ১৫০ থেকে ২০০ জন শ্রমিক লাগত, কিন্তু এখন স্বয়ংক্রিয় কাটিং মেশিন ব্যবহার করে ৬০-৭০ জন শ্রমিক কাজ করছে। থ্রি-ডি প্রিন্টিংয়ের মতো প্রযুক্তি প্যাটার্ন ডিজাইনে প্রয়োজনীয় শ্রমিকের সংখ্যা ১০- ১২ জন থেকে ১- ২ জনে নামিয়ে এনেছে। স্প্রেডিং এ স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির ব্যবহারে ১০ থেকে ১২ জনের কাজ ২ থেকে ৩ জন করছে।
ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) এর একটি সমীক্ষার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির কারণে বাংলাদেশের পাঁচটি সেক্টরের প্রায় ৫৩ দশমিক ৮ লাখ শ্রমিক চাকরি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে যার মধ্যে তৈরি পোশাক শিল্প অন্যতম।
সংলাপে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি জেড এম কামরুল আনামের সভাপতিত্বে ও আইবিসি সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ বাদলের সঞ্চালনা করেন।
(ঢাকাটাইমস/৩০এপ্রিল/এমআই/ইএস)

মন্তব্য করুন