রাইসির মৃত্যু ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট

আলী রেজা
 | প্রকাশিত : ২৫ মে ২০২৪, ১৪:২৩

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে চলছে নানা বিশ্লেষণ। এটি দুর্ঘটনা না কি নাশকতা- এ নিয়েও চলছে নানা আলোচনা। তবে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে দেশটির সামরিক বাহিনী এখন পর্যন্ত নাশকতার কোনো প্রমাণ পায়নি। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধে ইরানের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপের কারণে সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে আলোচিত ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। ফিলিস্তিনের পক্ষে বক্তৃতা-বিবৃতি ও পরোক্ষ সমর্থন দিয়েই যখন মুসলিম দেশগুলো তাদের দায়িত্ব শেষ করছিল তখন ইরান সরাসরি ইসরাইলের বিরুদ্ধে আক্রমণ করে বসে। এতে হামাস তথা ফিলিস্তিনি জনগণ মানসিক শক্তি পায়। যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তি যখন ইসরাইলের প্রতি সমর্থন দেখায় তখন প্রতিপক্ষ স্বাভাবিকভাবেই দুর্বল থাকে। ইরান পাশে দাঁড়ানোর ফলে সে দুর্বলতায় কিছুটা হলেও শক্তি সঞ্চার হয়েছিল হামাসের মনে। ইরানি প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যু ইসরাইলের জন্য যেমন কিছুটা স্বস্তির কারণ, ফিলিস্তিনের জন্য তেমনি উদ্বেগের বিষয়। কারণ মধ্যপ্রাচ্য সংকটে রাইসি যে ভূমিকা নিয়েছিল রাইসির স্থলাভিষিক্ত প্রেসিডেন্ট সে ভূমিকা নাও নিতে পারে। যদিও ইরানের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্র নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না বলা হচ্ছে; কিন্তু ব্যক্তির পরিবর্তনের ফলে অনেককিছুই আর আগের মতো নাও থাকতে পারে।

ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আজারবাইজানের ভারজাগান নামক দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন ৬৩ বছর বয়সী ইব্রাহিম রাইসি। রাইসি তাঁর কট্টরপন্থি নীতির কারণে সারাবিশ্বেই আলোচিত ও সমালোচিত ছিলেন। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা ইমাম খামিনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি খামিনির সর্বাত্মক সমর্থন পেয়েছিলেন বলে মনে করে হয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেও তিনি নানা কারণে আলোচিত ছিলেন। ১৯৮৮ সালে ইরান সরকার ব্যাপকসংখ্যক রাজবন্দির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। ঐ ঘটনায় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে গণমাধ্যমসূত্রে জানা গেছে। তিনি প্রেসিডেন্ট হয়ে ইরানকে পারমাণবিক শক্তিতে সমৃদ্ধ করার কাছাকাছি নিয়ে যান। সর্বশেষে ইসরাইলের ওপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংকটেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। ইরান ইসরাইলে হামলা করেছিল বলে এই হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ইসরাইলের হাত থাকতে পারে বলে অনেকে অনুমান করেন। হাত থাকুক আর নাই থাকুক, মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে রাইসির মৃত্যুর প্রভাব পড়াটা স্বাভাবিক বলেই মনে হয়। প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুর ফলে ইরানের অভ্যন্তরেও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ও সংকট দেখা দিতে পারে। কারণ ইরানের উদারপন্থিগোষ্ঠী রাইসির কট্টরপন্থাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। ইরানের তরুণদের মধ্যে ধর্মীয় নেতাদের প্রতি বিরোধিতা চলমান আছে। তারা কট্টর ধর্মীয় শাসন থেকে দেশকে বের করে আনতে চান। এ অবস্থায় নতুন সরকার উদারপন্থা অবলম্বন করলে দেশের ভেতরে দুটি ভিন্ন আদর্শিক গোষ্ঠী তৈরি হতে পারে এবং তাদের মধ্যে সংঘাত দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে ইরানের সমর্থন আগের মতো না থাকলে ফিলিস্তিন একটি কট্টর সমর্থক হারাবে। এতে গাজার চলমান সংকট আরো বেশি মানবিক বিপর্যয়ের দিকে চলে যেতে পারে। সবকিছু নির্ভর করছে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে ইরানের পররাষ্ট্রনীতি পূর্বের মতো থাকা না থাকার ওপর।

প্রেসিডেন্ট রাইসি একটি বিতর্কিত নির্বাচনের মধ্য দিয়েই ক্ষমতায় এসেছিলেন। ফলে দেশের ভেতরে ও বাইরে তিনি নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি ছিলেন। তাঁর এমন মৃত্যুর ঘটনায় দেশের ভেতরের কোনো শক্তি কিংবা ইসরাইলের মতো বাইরের শক্তি জড়িত ছিল কি না- তা গবেষণার বিষয়। তবে দেশে-বিদেশে যারা তাঁর বিরোধীপক্ষ তারা স্বস্তি পেয়েছে। পরবর্তী সময়ের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণেই বেরিয়ে আসতে পারে এ মৃত্যু দুর্ঘটনা না কি নাশকতা। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ঐতিহাসিক বৈরিতার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, রাইসির মৃত্যুতে ইসরাইলের সবচেয়ে বড়ো পথের কাঁটা দূর হলো। এ বিবেচনা থেকেও রাইসির মৃত্যুতে ইসরায়েলের হাত আছে বলে মনে করতে পারেন অনেকে। তেমনটা হলে বিশ্বরাজনীতি সংঘাতের দিকেই এগিয়ে যাবে।

গত ২৫শে ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে দামেস্কে একজন সিনিয়র ইরানি জেনারেলকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ বছর এপ্রিলের শুরুতেই সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক শহরেই ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হন আইআরজিসি’র জ্যেষ্ঠ কমান্ডার মোহাম্মদ রেজা জাহেদি। এই হামলায় আরো ছয়জন শীর্ষকর্মকর্তা নিহত হন। এভাবে ইরান এবং ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীর সদস্যদের বিভিন্ন সময় আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলের এ অপতৎপরতার জবাব দিতে গিয়ে ইরান ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তারপর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঠিক এই সময়ে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানি প্রেসিডেন্টের মৃত্যুকে তাই অনেকেই স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছে না। তবে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ বলেছে তারা ইরানি স্বার্থের বিরুদ্ধে কার্যক্রম চালালেও রাষ্ট্রপ্রধানকে তারা কখনো তাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করেনি। এ বিষয়ের বিশেষজ্ঞগণও মনে করেন না যে, রাইসির মৃত্যুর পেছনে ইসরায়েলের হাত আছে। একজন প্রেসিডেন্টকে হত্যা করা মানে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়া। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ইসরায়েল আর কোনো যুদ্ধের ঝুঁকি নিবে বলেও মনে হয় না। এদিকে গাজা ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসন এখন অনেকটা নমনীয়। যুক্তরাষ্ট্রের ছাত্রসমাজ ও সাধারণ মানুষ গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণের বিরুদ্ধে দিন দিন সোচ্চার হচ্ছে। সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণকে আর হয়তো নির্বিচারে সমর্থন জানাবে না বাইডেন প্রশাসন। এ বাস্তবতায় রাইসির মৃত্যুর পেছনে ইসরায়েলের যুক্ত না থাকাই স্বাভাবিক। আর মোসাদ তো বলেছে, তারা শুধু সামরিক ব্যক্তি ও পারমাণবিক অবস্থানকেই আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করে থাকে। যাহোক, অধিকতর অনুসন্ধানে একদিন হয়তো জানা যাবে এটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা।

ইরানের নতুন নেতৃত্বের আদর্শিক অবস্থান কী হবে- তার ওপর নির্ভর করবে এ অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি। পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই এ অঞ্চলের অস্থিরতাকে পুঁজি করে নিজেদের অথনৈতিক স্বার্থ হাসিল করে আসছে। ইরানে যদি কোনোভাবে তারা নিজেদের তাবেদার সরকার গঠন করতে পারে তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতির চিত্র পাল্টে যেতে পারে। কারণ এ অঞ্চলে একমাত্র ইরানকেই তাদের আদর্শিক অবস্থান ধরে রাখার সক্ষমতা প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটে বন্ধুহীন ফিলিস্তিনের একমাত্র বিশ^স্ত বন্ধু হিসেবে দেখা গেছে ইরানকে। ফলে ইরানের নতুন নেতৃত্বের মধ্যে আদর্শিক পরিবর্তন ও যেকোনো ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করতে পারে হামাসবিরোধী গোষ্ঠী। ইতঃপূর্বে গাজা ইস্যুতে ইরানের মতো আর কোনো মুসলিম দেশকে সোচ্চার হতে দেখা যায়নি। বর্তমানে সৌদি আরব, লেবানন, সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেনসহ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিয়ে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকতে দেখা যাচ্ছে। একমাত্র ইরান ছিল ব্যতিক্রম। রাইসির মৃত্যু তাই এ অঞ্চলের ভবিষ্যৎকে কিছুটা হলেও অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিলো। প্রেসিডেন্ট রাইসির সঙ্গে তাঁর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আবদুল্লাহিয়ানও নিহত হয়েছেন। ফলে পররাষ্ট্র নীতিতে পরিবর্তন ঘটে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। পরাশক্তিগুলো ইরানে নিজেদের তাবেদার সরকার প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করলে তারা ব্যর্থ নাও হতে পারে। সুতরাং প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যু এমন এক সময় হলো যখন গাজা সংকট নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ।

ইসরায়েলি আক্রমণে গাজা এখন সত্যি সত্যি মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। গাজায় এই ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ নিয়েই ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। এই যুদ্ধাবস্থা বা উত্তেজনার জেরেই হামাস কিছুটা হালে পানি পেয়েছিল এবং ইসরায়েল হয়তো অধিকতর আক্রমণের ব্যাপারে সংযত হয়ে যেত। এই ভারসাম্যের কারণে যুদ্ধবিরতি ত্বরান্বিত হওয়া সম্ভব ছিল। এখন ইসরায়েলকে কড়া ভাষায় সতর্ক করে দেওয়ার মতো হিম্মত ইরানের নতুন নেতৃত্বের মধ্যে থাকবে কি না- সেটাই দেখার বিষয়। যুক্তরাষ্ট্র যদি ফিলিস্তিনের হামাস ও লেবাননের হিজবুল্লাহ- এই দুটি সংগঠনকে দুর্বল করে দিতে পারে তাহলে ইসরায়েলের নৃশংসতা থেকে মধ্যপ্রাচ্য কখনোই রেহাই পাবে না। ফলে ইরানের নতুন নেতৃত্বকে অনেককিছুই সামাল দিতে হবে। গত ৯ই মে ইমাম খামিনির পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল খারাজি বলেছেন- ইসরায়েল হামলা চালালে ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচির গতিপথ পাল্টে দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে হাঁটবে। প্রেসিডেন্ট রাইসি যেহেতু খামিনির আস্থাভাজন ছিলেন তাই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে হাঁটা তাঁর জন্য কঠিন হতো না। প্রায় তিন বছরের ক্ষমতাকালে ইব্রাহিম রাইসি ইরানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, ধর্মনীতি ও সামাজিক নীতিকে আগের চেয়ে অনেক বেশি রক্ষণশীল অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলেন। পূর্বসূরি হাসান রুহানির পর তিনি এই অঞ্চলে ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষের ভূমিকায় ঠেলে দিয়েছেন। ২০১৮ সালে ট্রাম্প সরকার ইরান চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার তিন বছর পর ক্ষমতায় বসে রাইসি ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়াকে গতিশীল করেন। রাইসি ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে অকুণ্ঠ সমর্থন করেন। এখন পরমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে নতুন নেতৃত্বের নতুন করে দেন-দরবার কতটা সফল হবে সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। পশ্চিমাদের সঙ্গে বৈরিতা সামাল দিয়ে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখাও ইরানের নতুন নেতৃত্বের জন্য একটি বড়ো চ্যালেঞ্জ হবে।

পরিশেষে যেটি আশঙ্কা হয় তা হলো ইরানের অভ্যন্তরীণ সরকার ব্যবস্থাও পাল্টে যেতে পারে। ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর বৃহত্তম শাখা ও দেশটির অর্থনীতির বড়ো অংশ নিয়ন্ত্রণ করে ‘আইআরজিসি’। এই সুযোগে তারাও অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করতে পারে। ৮৫ বছর বয়সী খামিনির সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে রাইসির নাম উঠে এসেছিল। কিন্তু এখন তাঁর মৃত্যুর কারণে খামিনির উত্তরসূরি নির্ধারণ নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। কারণ রাইসির মৃত্যুতে ইরানের একটি গোষ্ঠীকে উল্লাস করতে দেখা গেছে। ফলে রাইসির পরে ইরানের মসনদে যিনি বসবেন তিনি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটে রাইসির মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবেন কি না- তা দেখার জন্য আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

আলী রেজা: কলাম লেখক, পিএইচডি গবেষক, ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :