ঈদের জন্য প্রস্তুত শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান

প্রতিবছরের মতো এবারও দেশের বৃহত্তম ঈদুল আজহার জামাতের জন্য প্রস্তুত কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। এবার শোলাকিয়ায় ১৯৭তম ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবারের মতো সকাল ৯টায় শুরু হবে ঈদ জামাত। মুসল্লিদের নিরাপত্তায় থাকছে বাড়তি ব্যবস্থা। এতে ইমামতি করবেন জেলা শহরের বড়বাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা হাফেজ মো. শোয়াইব বিন আব্দুর রউফ। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকছেন মাও হিফজুর রহমান খান, মাও আহমাদ উল্লাহ।
সরেজমিন শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, ঠিকঠাক করা হচ্ছে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। মাঠে দাগ কাটা, বালু ফেলা, অজুখানা, টয়লেট ও পানির লাইন সংস্কার, মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন টানানো ও মাইক স্থাপনসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বসানো হয়েছে ৫০টি সিসি ক্যামেরা। তাছাড়া সারা মাঠে ৪টি উঁচু অস্থায়ী টাওয়ার নির্মিত হয়েছে। তবে দু-দিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে কিশোরগঞ্জে। এ কারণে বৃষ্টির পানি যেন জমে না যায়, সেজন্য মাঠে ফেলা হচ্ছে বালু।
ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি জানিয়েছে, দূরদূরান্তের মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বহু সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ও কয়েকটি মেডিকেল টিম। ঈদ জামাতে জায়নামাজ ছাড়া আর কিছু সঙ্গে না আনতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ঈদ জামাতের জন্য ঈদগাহ মাঠের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে।
শোলাকিয়া মাঠ পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, র্যাব-১৪ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আলিমুজ্জামান বিপিএম-সেবা, র্যাব-১৪, সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার, স্কোয়াড্রন লিডার মো. আশরাফুল কবির, মাঠ পরিচালনা কমিটির সম্পাদক ইউএনও আবু রাসেলসহ জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, ঈদের জামাতকে ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ওয়াচ টাওয়ার ছাড়াও সাদা পোশাকে থাকবে পুলিশ। মেটাল ডিটেক্টর, আর্চওয়ের মাধ্যমে চেকিং হয়ে মুসল্লিরা মাঠে প্রবেশ করবেন। কাউন্টার টেরোরিজমসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। শোলাকিয়া মাঠের রেওয়াজ অনুযায়ী ঈদের জামাত শুরুর আগে শটগানের ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হবে। জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে ৩টি, ৩ মিনিট আগে ২টি এবং ১ মিনিট আগে ১টি গুলি ছুড়ে নামাজের জন্য মুসল্লিদের সংকেত দেওয়া হবে। আশা করি, নিরাপদে নির্বিঘ্নে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করে ঘরে ফিরতে পারবেন।
ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, ঈদ জামাত আয়োজনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মুসল্লিদের নিরাপত্তা ও জামাত নির্বিঘ্ন করতে যা যা করার সবই হয়েছে। পৌরসভা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ, জেলা চেম্বার অব কমার্সসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহ সচেতন থাকবে। মাঠে অজু, গোসল ও প্রবেশ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখাসহ সার্বিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
(ঢাকা টাইমস/১৬জুন/প্রতিনিধি/এসএ)

মন্তব্য করুন