ঈদযাত্রায় সদরঘাটে নেই চিরচেনা সেই ভিড়

দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা। আর বাকি মাত্র ৩ দিন। এরইমধ্যে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে ঘরমুখো মানুষ। বাস, ট্রেন-লঞ্চযোগে নীড়ে ফিরছে ঈদ উদযাপনে। তবে ঈদযাত্রায় বাস-ট্রেনে মানুষের ব্যাপক ভিড় হলেও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের চিত্র পুরোপুরি উল্টো। সদরঘাটে নেই সেই আগের মতো চিরচেনা দৃশ্য। ফাঁকা টার্মিনালে নেই লঞ্চ স্টাফদের হাক-ডাক। যাত্রী খরায় ভুগছে দক্ষিণবঙ্গগামী লঞ্চগুলো।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল গিয়ে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।
সাধারণত এই সময়ে ঘরে ফেরা মানুষের চাপে সদরঘাটে পা ফেলার জায়গা থাকে না। তবে এবারের চিত্রটা একেবারেই আলাদা।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এক সময় বৃহত্তর দক্ষিণবঙ্গের প্রধান যাতায়াত স্থল ছিল। তবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু হওয়ার পর টার্মিনালে এখন আর আগের মতো সেই ভিড় হয় না ঈদযাত্রায়। দেখা মেলে না কেবি ও লঞ্চের ডেকে জায়গা রাখা নিয়ে প্রতিযোগিতা।
গত দুই বছরের মতো এবারও ঈদে যাত্রী খরায় ভুগছে সদরঘাট থেকে দক্ষিণাঞ্চলে চলাচলকারী লঞ্চগুলো।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে চাঁদপুরগামী লঞ্চ মূয়ুর-১০ এর পরিচালক মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, ‘আগে শুক্র-শনিবারে যে পরিমাণ যাত্রী হতো এখন ঈদেও তেমন।’
বেলা ১২টা ৩০মিটের দিকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ময়ূর-১০ লঞ্চটি ছেড়ে যায় । ছেড়ে যাওয়ার আগে লঞ্চের ভেতরে গিয়ে দেখা যায় যাত্রীর তেমন ভিড় নেই।
লঞ্চ পরিচালক মোহাম্মদ দিদারুল আলম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘পদ্মা সেতু হওয়ার আগে লঞ্চে শুক্র-শনিবারে যেমন যাত্রী হতো এখন ঈদেও তেমন হয়। আগে দক্ষিণ অঞ্চল মানুষের একমাত্র যাতায়াত মাধ্যম ছিল এই সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল। কিন্তু এখন পদ্মা সেতু হওয়ার ফলে আমরা যাত্রীর খরায় ভুগতেছি।’
‘তারপরেও চাঁদপুরের বেশিরভাগ মানুষ এই লঞ্চেই যাতায়াত করে। কিন্তু সদরঘাট আসার যে রাস্তা, এটিতে এতো জ্যাম থাকে, যেখানে গুলিস্তান থেকে ঘাটে আসতে সময় লাগার কথা ১৫মিনিট কিন্তু জ্যামের কারণে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। তাই মানুষ এতো জ্যাম ঠেলে না এসে অন্য জায়গা দিয়ে সহজে তার নিজ গন্তব্যে চলে যাচ্ছে’ বলেন, দিদারুল আলম।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৩ জুন ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল থেকে বিশেষ লঞ্চ চলাচল শুরু করেছে। দক্ষিণাঞ্চলের ৪১টি রুটে চলাচলের জন্য শতাধিক লঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে। তবে নৌপথে লঞ্চের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কেবিনের অগ্রিম টিকিটের জন্য যাত্রীদের মধ্যে তেমন আগ্রহ নেই।
অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাপ) সংস্থার ঢাকা নদীবন্দরের আহ্বায়ক মামুন অর রশিদ বলেন, ‘আগের তুলনায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীর চাপ নেই এবং নৌপথে যাত্রী কমে যাওয়ায় অগ্রিম টিকিটের জন্য যাত্রীদের আগ্রহও কম।’
বিআইডব্লিউটিএর নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ঈদুল আজহা উপলক্ষে আজ (১৩ জুন) থেকে বিশেষ লঞ্চ চলাচলের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে যাত্রীদের উপস্থিতির ওপর নির্ভর করে বিশেষ লঞ্চ চলাচল করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাত্রীবাহী নৌযানের নিরাপদ ও হয়রানিমুক্ত চলাচল নিশ্চিত করার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় শতভাগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’
(ঢাকাটাইমস/১৩জুন/এআই/এসআইএস)

মন্তব্য করুন