নথিতে ‘মাংস বিক্রি’ হওয়া ব্রাহমা গরুগুলো জীবিত মিলল মোহাম্মদপুরে!

নিষিদ্ধ ব্রাহমা প্রজাতির ১৫টি গরু নিলামে দেওয়া হয়েছিল ২৮০ টাকা কেজি দরে। গরুগুলো কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামার থেকে নিলামে নেয় বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন। শর্ত ছিল গরুগুলো জবাই করে ন্যায্য মূল্যে মানুষের কাছে বিক্রি করার।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নথিপত্রের তথ্য বলছে, নিলামে বিক্রি করা ১৫টি গরু জবাই করে ৩০০ টাকা কেজি দরে মাংস সাধারণ মানুষের মাঝে বিক্রি করা হয়েছে। তবে বুধবার দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিমের অভিযানে ছয়টি ব্রাহমা প্রজাতির গরু উদ্ধার করা হয়েছে, যেগুলো সরকারি কাগজে কলম অনুযায়ী ‘জবাই হওয়া’।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের নবীনগর এলাকায় সাদিক এগ্রো থেকে নিষিদ্ধ ছয়টি ব্রাহমা প্রজাতির গরু উদ্ধার করে দুদক। গরুগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ছিল। দুদকের এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।
আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা মোহাম্মদপুরের সাদিক এগ্রোতে অভিযান চালিয়ে ছয়টি ব্রাহমা প্রজাতির গরু উদ্ধার করেছেন। তিনি নিশ্চিত করেন, কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামার থেকে নিলামে নেওয়া ১৫টি গরুর মধ্যে এই ছয়টি গরু।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, জব্দকৃত গরুগুলো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। দুদকের এনফোর্সমেন্টের অভিযানের তথ্য প্রমাণাদি দুদক কমিশনে দেওয়া হবে। এরপর কমিশন পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন।
অভিযান শেষে উদ্ধার হওয়া দানবাকৃতির ছয়টি গরু হস্তান্তর করা হয় প্রানীসম্পদ অধিদপ্তরের কাছে। বর্তমানে মোহাম্মদপুর সাদিক এগ্রো থেকে গরুগুলো নিতে আসেন কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের পরিচালক ডা. মো মনিরুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বাসনা আক্তার।
গরু নিতে এসে সাংবাদিকদের জেরার মুখে পড়েন কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের পরিচালক ডা. মো. মনিরুল ইসলাম। এসময় তিনি বলেন, প্রায় তিন মাস আগে গরুগুলো সুলভ মূল্যে মাংশ বিক্রির উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের কাছে ২৮০ টাকা কেজি মূল্যে বিক্রি করা হয়। কথা ছিল তারা এসব গরুর মাংস ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করবে। তবে তারা তা করেনি।
মনিরুল ইসলাম বলেন, গো প্রজনন কেন্দ্রের দ্বায়িত্ব ছিল গরুগুলো সরবরাহ করা, আমরা তাই করেছি। দুদকের অভিযানে গরুগুলো উদ্ধার হওয়ায় আমরা এখান থেকে প্রজনন কেন্দ্রে গরুগুলো নিয়ে যাবো। পরবর্তীতে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাদিক এগ্রো জালিয়াতি করে এখানে (মোহাম্মদপুরে) গরুগুলো এনেছে। এতে গো প্রজনন কেন্দ্রের গাফিলতি আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান পরিচালক ডা. মো মনিরুল ইসলাম।
(ঢাকাটাইমস/০৩জুলাই/এইচএম/কেএম)

মন্তব্য করুন