অবৈধ সম্পদ: চট্টগ্রামে স্ত্রীসহ সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

চট্টগ্রামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে ৭৩ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্ত্রীসহ সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার দুদক চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত-১ কার্যালয়ে মামলা দুটি করেন দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত-২ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুসাব্বির আহমেদ।
আসামিরা হলেন— চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবুল হাশেম (৬১) ও তার স্ত্রী তাহেরিনা বেগম (৫১)। এর মধ্যে তাহেরিনা বেগমের আয়ের উৎস হিসেবে বুটিকের ব্যবসা দেখানো হলেও দুদককে সেই ব্যবসার কোনো লাইসেন্স দেখাতে পারেননি তারা। আবুল হাশেম ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবর আবুল হাশেম চাকরি থেকে অবসর নেন।
দুদক চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত-২ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুসাব্বির আহমেদ এই তথ্য জানিয়ে বলেন, দুদক আইনের উল্লিখিত ধারায় সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে।
মো. আবুল হাশেম চট্টগ্রামের রাউজান থানার গশ্চি গ্রামের গুরা মিয়া সেক্রেটারি বাড়ির বাসিন্দা। এই দম্পতি নগরীর খুলশী থানার পলিটেকনিক্যাল কলেজ রোডের রূপসী হাউজিংয়ে বসবাস করেন।
দুদকের করা এজাহার অনুযায়ী, মো. আবুল হাশেমের দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৯৬২ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১৮ লাখ ৬০ হাজার ২৯৪ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলে রাখার তথ্য উঠে এসেছে। এ কারণে দুদক আইন ২০০৪-এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় তিনি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
অপর মামলার এজাহারে তাহেরিনা বেগমের দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৩৬৬ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করা এবং জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৪৩ লাখ ৩২ হাজার ৪৫৬ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলে রাখার তথ্য পাওয়া গেছে। এ কারণে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় তিনি অপরাধ করেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
একইভাবে মো. আবুল হাশেম পুলিশে চাকরিরত অবস্থায় অসাধু উপায়ে অর্জিত অর্থ দিয়ে পারস্পরিক যোগসাজশে স্ত্রী তাহেরিনা বেগমের নামে সম্পদ অর্জন ও সম্পদ স্ত্রীর ভোগ দখলে রাখতে সহযোগিতা করার দায়ে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় হাশেম ও তাহেরিনার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলার তদন্তকালে অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তা আমলে নেওয়া হবে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
দুদক থেকে পাওয়া তথ্যমতে, হটলাইনে ২০১৭ সালের শুরুতে আসা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের এই দম্পতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পরে ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর আবুল হাশেম ও তার স্ত্রী তাহেরিনাকে সম্পদের বিবরণ দাখিলের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। দুদকের নোটিশের পর একই বছরের ২৭ নভেম্বর সম্পদের বিবরণ দাখিল করেন তারা। অবশেষে স্ত্রীর বুটিকসের ব্যবসা দেখিয়েও দুদকের জালে আটকা পড়েন পুলিশের সাবেক এই কর্মকর্তা।
(ঢাকাটাইমস/০৪জুলাই/এসআইএস)

মন্তব্য করুন