অধ্যক্ষপুত্রের বিয়ে, কর্মচারীদের থেকে ৫০০ টাকা করে চাঁদা চেয়ে নোটিশ!

​​​​​​​সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৫ জুলাই ২০২৪, ০০:৪২| আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৪
অ- অ+

অধ্যক্ষপুত্রের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাধ্যতামূলক চাঁদা চেয়ে নোটিশ দিয়েছেন সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের প্রধান সহকারী মামুন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকে সমালোচনা করছেন।

আগামী ১২ জুলাই রাজধানীর বেইলি রোডস্থ অফিসার্স ক্লাবে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহসীন কবিরের ছেলের বিবাহোত্তর সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে কলেজের প্রধান সহকারীর সাক্ষরিত নোটিশের মাধ্যমে কলেজের সব কর্মচারীকে আগামী জুলাইয়ের মধ্যে বাধ্যতামূলক ৫০০ টাকা শুভেচ্ছা উপহার চেয়ে একটি নোটিশ দেওয়া হয়। এই টাকা কলেজের ক্যাশ সরকার মো. আবুল হোসেনের কাছে জমা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, এতদ্বারা অত্র কলেজের সব কর্মচারীর অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ‘আগামী ১২ জুলাই ২০২৪ তারিখ সন্ধ্যা .০০টায় নগরীর বেইলী রোডস্থ অফিসার্স ক্লাবে মাননীয় অধ্যক্ষ মহোদয়ের পুত্রের বিবাহোত্তর সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে উক্ত আয়োজনে আপনি নিমন্ত্রিত উপলক্ষ্যে সকল কর্মচারীকে শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে বাধ্যতামূলকভাবে ৫০০/-(পাঁচশত টাকা মাত্র) অত্র কলেজের ক্যাশ সরকার জনাব মো. আবুল হোসেনের নিকট আগামী ০৫/০৭/২০২৪ তারিখ বৃহস্পতিবারের মধ্যে জমাদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।’

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এই নিয়ে শুরু হয় তুমুল তর্ক-বিতর্ক নাম গোপন রেখে সোহরাওয়ার্দী কলেজ পরিবার গ্রুপে পোস্ট দিয়ে একজন বলেন, অধ্যক্ষ মহোদয়ের ছেলের বিবাহোত্তর সংবর্ধনায় সাধারণ কর্মচারী থেকে বাধ্যতামূলক ৫০০ টাকা নিবেন আর কত ছোট লোকি কাজ করবেনএকজন স্টাফ ৭০০০/৮০০০ টাকা বেতন পায়, তার থেকে আপনি বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাবদ টাকা নেনযেদিন থেকে আপনি কলেজে যোগদান করছেন সেদিন থেকে কলেজের রেজাল্ট ভালো নামহসিন স্যার পারলে গরীব স্টাফদের মুক্তি দেন, না হয় পদত্যাগ করেন

এ বিষয়ে কলেজের একজন কর্মচারী নিজেকে নিরীহ বলে দাবি করে বলেন, ‘ভাই উনারা বলেছেন টাকা না দিলে নাকি আমাদের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হবে আমরা কী করবো! আমাদের করার কিছু নেই!’ কথাগুলো বলার সময় তার চোখে মুখে ছিল অসহায়ত্বের ছাপ।

আরেক কর্মচারীকে ফোন দিলি বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান এবং বলেন এ বিষয়ে প্রধান সহকারীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে আরেক কর্মচারী বলেন নোটিশে বাধ্যতামূকল কথাটি লেখা ঠিক হয়নি কলেজের অধ্যক্ষ স্যারের ছেলের বিয়েতে আমাদের দাওয়াত করেছে, আমরা তো এমনিই খুশি এখানে ৫০০ টাকা কোনো বিষয় না

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে প্রধান অফিস সহকারী মামুন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আপনি কি আমদের স্টুডেন্ট, আসেন কলেজ এখানে কথা বলি আসলে এটা তো সামাজিক প্রথা, সাধারণত করপোরেটে এ রকম হয়

ব্যাধ্যতামূলক ৫০০ টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে মামুন বলেন, আসেন কলেজে সামনাসামনি কথা বলি। টেলিফোনে এতো কথা বলতে রাজি না। এই বলে ফোন রেখে দেন তিনি তারপর তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেনি

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মোহসীন কবির বলেন, আমি মাত্রই বিষয়টি জানতে পেরেছি এবং সাথে সাথে প্রধান সহকারীকে জিজ্ঞেস করেছি যে কেনো এমন নোটিশ দেওয়া হলো? উত্তরে প্রধান সহকারী বলেন, আমরা প্রায় প্রতিটি অনুষ্ঠানেই এমন করে থাকি, যারা পারে তারা দেয়! বাধ্যতামূলক দিতে হবে এমন লেখার বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, এটা হয়তো তার ভুল হয়েছে, তবে আগামীকাল অফিসে গিয়ে আমি তাকে শোকজ করবো এবং জানতে চাইবো কেনো সে এমনটি করেছে! সে যদি এ বিষয়ে কারো কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় করে তাহলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে

ছেলের বিয়ের বিষয়ে অধ্যক্ষ উল্টো প্রশ্ন করে বলেন আপনার কি মনে হয় আমি ৫০০ টাকার জন্য আমার ছেলের বিয়ের আয়োজন করেছি? অবশ্যই না উল্টো সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বিয়েতে আশার সময় কেউ যাতে কোনো উপঢৌকন না নিয়ে আসে

(ঢাকাটাইমস/০৫জুলাই/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পাকিস্তানে ভারতের হামলায় নিহতের সংখ্যা কত? যা জানালো সেনাবাহিনী
ভারতীয় সেনারা সীমান্তে ‘সাদা পতাকা’ উড়িয়ে পালালো
কুবির বিজয়-২৪ হলে মাদকবিরোধী অভিযানে মাদকদ্রব্য উদ্ধার
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে দাম কমে গেল ভারতীয় রুপির
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা