যেভাবে গ্রেপ্তার হলো ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের প্রধান হোতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৫ জুলাই ২০২৪, ১৫:২২
অ- অ+

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে একটি ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের প্রধান হোতাকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের পালপাড় বটতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব-১০ এর সহকারী পরিচালক এএসপি এম জে সোহেল এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মো. আল আমিন (২৫)।

গত ২৩ জুন সকাল আটটায় পুলিশ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার কোন্ডা ইউনিয়নের জাজিরা বোটঘাট সংলগ্ন ব্রিজের নিচে একটি বড় ট্রাংকের ভেতর তোশকে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করে ওই হত্যাকাণ্ডের মরদেহটি।

এএসপি এম জে সোহেল জানান, এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ধারে তার নেতৃত্বাধীন একটি দল সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় কয়েকজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে সমর্থ হয় এবং তাদের সন্ধানে অভিযান চালাতে থাকে।

ইতোমধ্যে পুলিশ ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে। নিহত ব্যক্তি পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার দেবেন্দ্র হাওলাদারের ছেলে দীপঙ্কর হাওলাদার ওরফে দিপু হাওলাদার ওরফে মো. সুমন (৩৪)।

পরে সুমনের মা মিনতি হাওলাদার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন।

এএসপি এম জে সোহেল বলেন, দীপঙ্কর হাওলাদার বছর পাঁচেক আগে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ ও মো. সুমন নাম ধারণ করেন। তিনি সুবর্ণা ওরফে পারভিন নামের একজন মুসলিমকে ইসলামি শরিয়তমতে বিয়ে করেন। এতে পরিবারের সঙ্গে তার সম্পর্কচ্ছেদ ঘটে।

পারভিনের মাধ্যমে সুমনের মা জানতে পারেন, আরিফ ও বাবু নামের দুই ব্যক্তির সঙ্গে সুমনের পরিচয় ছিল এবং তাদের বাসায় যাতায়াত করতেন।

গত ১৮ জুন সুমন তার দুই বন্ধু আরিফ ও বাবুর সঙ্গে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করে। পরদিন তার ঢাকায় পৌঁছার কথা ফোনে স্ত্রী পারভিনকে জানান। এরপর থেকে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি পারভিন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব-১০ এর একটি দল ৪ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুরের পালপাড় বটতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন মো. আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে।

আল আমিনকে প্রিাথমিক জিঞ্জাসাবাদের সূত্রে র‌্যাব জানায়, সুমন, আরিফ, বাবু ও আল-আমিন পেশায় ট্রাকচালক। এই পেশার আড়ালে তারা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। সাত-আট বছর ধরে দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে ইয়াবা ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে পটুয়াখালী, কেরানীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করতেন।

মাদক বিক্রির সিন্ডিকেট এবং টাকার ভাগাভাগি নিয়ে সুমনের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয় আল-আমিন, আরিফ ও বাবুর। এর জেরে তারা সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী সুমনকে পটুয়াখালী থেকে ঢাকায় নিয়ে আসেন আল-আমিন, আরিফ ও বাবু। কেরানীগঞ্জে আল-আমিনের ভাড়া বাসায় রাত ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে তারা সুমনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। লাশ গুম করার জন্য সেটি তোশক দিয়ে মুড়িয়ে ভরা হয় বড় ট্রাংকে। পরে একটি ট্রাকে করে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার জাজিরা বোটঘাট ব্রিজ সংলগ্ন একটি রাস্তার পাশে ট্রাংকটি ফেলে যায়।

পরদিন সকালে স্থানীয় লোকজন ট্রাংকটি দেখে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ এসে সেটি উদ্ধার করে এবং এর ভেতর তোশকে মোড়ানো মরদেহটি পায়।

(ঢাকাটাইমস/৫জুলাই/এইচএম/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
পাকিস্তানে ভারতের হামলায় নিহতের সংখ্যা কত? যা জানালো সেনাবাহিনী
ভারতীয় সেনারা সীমান্তে ‘সাদা পতাকা’ উড়িয়ে পালালো
কুবির বিজয়-২৪ হলে মাদকবিরোধী অভিযানে মাদকদ্রব্য উদ্ধার
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে দাম কমে গেল ভারতীয় রুপির
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা