সহকর্মীকে পেটানো সেই প্রকৌশলীকে মাগুরা থেকে বদলি
মাগুরায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী শিমুল হোসেনকে বিবস্ত্র করে মারধর করে অজ্ঞান করার ঘটনায় অভিযুক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আতিক উল্লাহকে বদলি করা হয়েছে।
সোমবার জনস্বার্থে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এ আদেশ জারি করে।
বদলি আদেশে বলা হয়েছে, জনস্বার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাকে সওজ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে সংলগ্ন ছুটি, প্রশিক্ষণ ও প্রেষণজনিত সৃষ্ট সংরক্ষিত (সিভিল) পদে বদলি করা হয়েছে।
একই সঙ্গে ৯ অক্টোবরের মধ্যে তাকে স্থানীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে নিজ দায়িত্বভার হস্তান্তরের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে । অন্যথায় আগামী ১০ অক্টোবর থেকে তাৎক্ষনিকভাবে অবমুক্ত হিসেবে গণ্য হবেন।
গত রবিববার দুপুরে মাগুরায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী শিমুল হোসেনকে বিবস্ত্র করে মারধর করে অজ্ঞান করে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠে একই অফিসে কর্মরত নির্বাহী প্রকৌশলী আতিক উল্লাহর বিরুদ্ধে। এ সময় সাংবাদিকেরা ছবি তুলতে গেলে বাধা দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। পরে আহত উপসহকারী প্রকৌশলীকে উদ্ধার করে সহকর্মীরা মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদরহাসপাতালে ভর্তি করে।
নির্যাতনের শিকার উপসহকারী প্রকৌশলী শিমুল হুসাইন এবং সহকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাহী প্রকৌশলী আতিক উল্লাহ গত ১৪ জুলাই মাগুরাতে যোগদান করেন। তিনি অধিকাংশ সময় জেলার বাইরে অবস্থান করেন। আজও (সোমবার) বিকালেও তার অফিস বন্ধ পাওয়া। অফিসের কেউ বলতে পারেন না তিনি কোথায়। ফলে সড়ক ও জনপদ বিভাগের উন্নয়ন সংস্কার কাজে এবংদাপ্তরিক কাজকর্মে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হচ্ছে। অফিসের অন্য কর্মকর্তা কর্মচারীরা তার কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না। ববং নানা দুর্ব্যবহার ও অসদাচরণের শিকার হচ্ছেন।
ধারাবাহিক এমন অনিয়ম ও দুর্ব্যবহারের প্রেক্ষিতে কর্মরত অধঃস্তন কর্মকর্তারা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গত ২ অক্টোবর জনপদ বিভাগে নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি ঘোষণা দেন। পাশাপাশি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর ২৩ কর্মকর্তা কর্মচারী স্বাক্ষরিত গণবদলির আবেদন করেন। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এসব কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ এনে রবিবার শিমুল হোসেনের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে।
চিকিৎসাধীন সহকারী প্রকৌশলী শিমুল হোসেন বলেন, সকালে অফিসে গিয়ে নিজের পক্ষে বসে কাজ করছিলাম। দুপুরে ১২টার দিকে একই অফিসে কর্মরত আব্দুল আজিজ, (সড়ক শ্রমিক মাষ্টার রোল) মো. মমিন (সড়ক শ্রমিক মাষ্টার রোল) এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর ভাড়াটিয়া সন্ত্রাস হিসেবে পরিচিত সিরাজ সহ ৮/১০ জন আমাকে কিল-ঘুষি মারতে মারতে নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে উপস্থিত নির্বাহী প্রকৌশলী আতিক উল্লাহ আমার জামা কাপড় খুলে অফিসের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা নির্দেশ দিলে তারা মারতে মারতে আমার জামা এবং প্যান্ট খুলে ফেলে। এ সময় হাতজোড় করে সম্মানহানি না করতে অনুনয় করলে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে অফিসের সহকর্মীরা আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আতিক উল্লাহ বলেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী শিমুল হোসেন অফিসের বেশ কিছু গোপনীয় কাগজপত্র রাজশাহীতে মাগুরার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশিকুল ইসলামের কাছে প্রেরণ করেন। তিনি বিষয়টি জানতে পেরে ১ অক্টোবর শিমুল হোসেনকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। আর এ কারণে শিমুল হোসেন আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করছে।
(ঢাকাটাইমস/০৭অক্টোবর/এসআইএস)