কিশোরীদের এইচপিভি টিকা কী? কেন নেওয়া জরুরি

নারীদের একটি অন্যতম সমস্যা জরায়ুমুখ ক্যানসার। প্রতি বছর বিশ্বে বহু নারী এই ক্যানসারে মারা যান। জরায়ুমুখ ক্যানসারের অন্যতম কারণ হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)। এর প্রতিষেধক হিসেবে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সি শিশু এবং কিশোরীদের টিকা দেওয়া হয়, যা এইচপিভি টিকা নামে পরিচিতি।
গত বছরের এই অক্টোবর থেকে ইউনিসেফ, দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স-গ্যাভি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় বাংলাদেশে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। উদ্দেশ্য হলো- মেয়েদেরকে জরায়ুমুখ ক্যানসার থেকে রক্ষা করার মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্য ও ভবিষ্যত সুরক্ষিত করা।
এই টিকা নেওয়া কেন জরুরি
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার বিবেচনায় জরায়ুমুখ ক্যানসারের অবস্থান দ্বিতীয়। দেশে ক্যানসারজনিত মৃত্যুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় এই জরায়ুমুখ ক্যানসারে। বাংলাদেশে প্রতি বছর জরায়ুমুখ ক্যানসারে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার রোগী শনাক্ত হয়। যার মধ্যে ৪,৯০০ জন মারা যান।
এক্ষেত্রে এইচপিভি টিকা জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর টিকাগুলোর মধ্যে একটি। এইচপিভি দ্বারা সৃষ্ট ৯০ শতাংশের বেশি ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে এই টিকা।
এইচপিভি ত্বক থেকে ত্বক বা যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর সংক্রমণ এতটাই সাধারণ যে, প্রায় সব নারীরই তাদের জীবনের কোনো না সময়ে অন্তত এক ধরনের এইচপিভি হয়ে থাকে। বেশিরভাগ সংক্রমণ দুই বছরের মধ্যে নিজ থেকে চলে যায়। কখনো কখনো দীর্ঘস্থায়ী হয়। যা পরবর্তীতে জরায়ুমুখ ক্যানসারের সৃষ্টি করে।
সে কারণে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সি শিশু-কিশোরীদের নিয়মিতভাবে এইচপিভি টিকা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়, যাতে তারা এই ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার আগেই সুরক্ষিত থাকতে পারে। শুধু শিশু-কিশোরী নয়, ২৬ বছর বয়স পর্যন্ত যুবতীদেরও প্রত্যেককে এই টিকা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। ক্ষেত্র বিশেষে ২৭ থেকে ৪৫ বছর বয়সিদেরও এই টিকা দেওয়া যেতে পারে।
যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে
এইচপিভি টিকা নেওয়ার পর ওই স্থানে ব্যথা, লালভাব বা ফোলাভাব হতে পারে। কেউ কেউ সাময়িক সময়ের জন্য অচেতন হয়ে যেতে পারে। এছাড়া মাথা ঘোরা এবং কানের মধ্যে শব্দ হতে পারে। অন্য টিকার মতো অ্যালার্জির সমস্যাও বাড়তে পারে। এসব সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই টিকাপ্রদানকারীকে জানাতে হবে।
টিকা নেওয়ার পর যদি কারও অ্যালার্জির সমস্যা গুরুতর হয় এবং আমবাত, মুখ ও গলা ফুলে যাওয়া, শ্বাস নিতে অসুবিধা, দ্রুত হৃদস্পন্দন এবং মাথা ঘোরা ও দুর্বলতার মতো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে রোগীকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তাতেই কাটবে বিপদ।
(ঢাকাটাইমস/২৪অক্টোবর/এজে)

মন্তব্য করুন