টিউলিপের মতো পদত্যাগে বাধ্য হতে পারেন পুতুলও: দ্য প্রিন্ট

ঢাকা টাইমস ডেস্ক
  প্রকাশিত : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৮| আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৪৯
অ- অ+

যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত টিউলিপ সিদ্দিক। একই পথে হাঁটতে হতে পারে তার খালাতো বোন সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকেও। তাকে ছাড়তে হতে পারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালকের পদ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টের এক প্রতিবেদন সে কথাই বলছে। পত্রিকাটিতে একটি নিবন্ধ লিখেছেন কলকাতাভিত্তিক সাংবাদিক মনদ্বীপা ব্যানার্জি। প্রতিবেদনে তিনি বাইবেল থেকে একটি উদ্ধৃতি দিয়েছেন।

মনদ্বীপা বলেছেন, ‘বাবার পাপের দায় ছেলের ওপর পড়ে। তবে এক্ষেত্রে শেখ হাসিনার পাপের দায় পড়েছে তার বোনের মেয়ে টিউলিপের ওপর। যার কারণে টিউলিপ পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। এবার এই দায় পড়তে যাচ্ছে তার নিজ মেয়ে পুতুলের ওপর। যিনি ২০২৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হয়েছিলেন।’

অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপেই যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পদ বাগিয়ে নেন তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। সে কারণে এবার পুতুলও চাপের মুখে পড়তে যাচ্ছেন বলে দ্য প্রিন্টের ওই নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন মনদ্বীপা ব্যানার্জি।

ওপার বাংলার এই সাংবাদিক স্বাস্থ্য বিষয়ক জার্নাল ল্যানসেটের ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের একটি সম্পাদকীয় প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ওই প্রতিবেদনে পুতুলের প্রার্থিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। তারা অভিযোগ করেছিল, মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করা পুতুল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হওয়ার যোগ্য না। অভিজ্ঞ ও যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে শুধু স্বজনপ্রীতির কারণে তিনি মনোনয়ন পান। এমন স্বজনপ্রীতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট করবে।

এছাড়া ২০২৩ সালে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসও পুতুলের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। এতে বলা হয়, আঞ্চলিক পরিচালক পদের জন্য সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সঙ্গে আরেকজন প্রার্থী ছিলেন নেপালের শম্ভু আচার্য। তিনি ছিলেন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, যিনি ৩০ বছর যাবৎ সেখানে কাজ করছেন। এছাড়া জনস্বাস্থ্যের ওপর তার পিএইচডি ডিগ্রি রয়েছে।

অন্যদিকে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে কাজ করতেন। তার বেশিরভাগ কাজ ছিল অটিজম নিয়ে। তিনি স্কুল সাইকোলজিস্ট হিসেবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং একটি দাতব্য ও গবেষণা সংস্থা দেখাশোনা করেন। একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় বড় বাজেট নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা তার নেই।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আঞ্চলিক পরিচালক হওয়ার আগে পুতুল তার মা ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিভিন্ন সফরে যেতেন।

দ্য প্রিন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করেছে যে, পুতুল কিভাবে চাকরি পেলেন। তার নিজের যোগ্যতার ভিত্তিতে নাকি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার মায়ের হস্তক্ষেপ। তাই সবার দৃষ্টি এখন পুতুলের দিকে। এখন দেখার বিষয় পুতুলও তার বোন টিউলিপের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে বাধ্য হন কিনা।’

২০২৩ সালের ১ নভেম্বরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান পুতুল। টিউলিপের পদত্যাগের পর থেকেই সবার নজর এখন তার দিকে।

এর আগে গত মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে টিউলিপের পদত্যাগের খবর প্রকাশ করে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। এরপর নিজের এক্স (টুইটার) হ্যান্ডেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন টিউলিপ।

শেখ রেহানা-কন্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বড়োসড়ো দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার খালা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক আওয়ামী লীগ নেতার কাছ থেকে লন্ডনে ফ্ল্যাট উপহার পাওয়া নিয়েও বিতর্কের কেন্দ্রে চলে আসেন।

এসব অভিযোগের জেরে টিউলিপকে বরখাস্ত করতে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানায় প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভা অফিসের ন্যায় ও নৈতিকতা দল। এরপরই পদত্যাগ করেন টিউলিপ।

(ঢাকাটাইমস/১৮জানুয়ারি/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে এবার ছিটকে গেলেন গাজানফার
উপদেষ্টা নাহিদ-আসিফ যে আয়নাঘরে ছিলেন, দেখুন আইয়ামে জাহেলিয়া
বীভৎস দৃশ্য, নৃশংস অবস্থা, এটা কি আমাদেরই জগৎ: আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে প্রধান উপদেষ্টা
সচিবালয় ঘেরাওয়ে গিয়ে পুলিশের বাধায় সড়কে বসে পড়লেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা