‘পতন’ থামিয়ে আমেরিকাকে ‘নবযুগে’ নিতে চান ট্রাম্প

‘আমেরিকার পতন’ থামিয়ে পরাশক্তিধর দেশটির নবযুগের সূচনা করতে চান নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি দ্বিতীয় মেয়াদে সোমবার শপথ নিতে চলেছেন।
রবিবার ওয়াশিংটনে ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প একটি উচ্ছ্বসিত ক্যাম্পেইনধর্মী সমাবেশে হাজির হন। সেখানে তিনি আমেরিকাকে পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। অভিবাসনের ওপর কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
ট্রাম্প তার সমর্থকদের বলেন, ‘সোমবার দুপুরে আমেরিকার দীর্ঘ চার বছরের পতনের যবনিকাপাত হবে। আমরা আমেরিকার শক্তি ও সমৃদ্ধির এক নতুন যুগ শুরু করব। আমি ঐতিহাসিক গতিতে এবং শক্তি দিয়ে কাজ করব এবং আমাদের দেশের প্রতিটি সংকট সমাধান করব।’
ইলন মাস্কের উপস্থিতি: প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক এ সমাবেশে ট্রাম্পের সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যয় হ্রাস কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন। মাস্ক বলেন, ‘আমরা আমেরিকাকে শতাব্দীর জন্য শক্তিশালী করে তুলব।’
ট্রাম্প তার বক্তব্য শেষে জনপ্রিয় গানের দল ভিলেজ পিপলের সঙ্গে নাচেন। তারা সত্তুর দশকের বিখ্যাত গান ওয়াইএমসিএ পরিবেশন করেন, যা ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার অঘোষিত সংগীতে পরিণত হয়েছিল।
অভিবাসন এবং নিরাপত্তা নিয়ে বার্তা: ট্রাম্পের ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্যে অভিবাসন ছিল কেন্দ্রীয় বিষয়। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সীমান্তে অনুপ্রবেশ বন্ধ করব।’ তিনি দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক দিনের মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুরও প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রথম দিন থেকেই নির্বাহী আদেশ: ট্রাম্প তার দায়িত্বের প্রথম দিন থেকেই বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশ জারির ঘোষণা দেন। এর মধ্যে রয়েছে স্কুল থেকে ট্রান্সজেন্ডার ইস্যু এবং সমালোচনামূলক জাতিতত্ত্ব নিষিদ্ধ করা এবং নারীদের ক্রীড়ায় ট্রান্সজেন্ডার অ্যাথলেটদের অংশগ্রহণ বন্ধ করা। এছাড়া ট্রাম্প জন এফ. কেনেডি, ববি কেনেডি ও মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যা সংক্রান্ত নথি প্রকাশ করারও ঘোষণা দেন।
ইতিহাসের অংশ হওয়ার আকাঙ্ক্ষা: তুষারবর্ণ আবহাওয়া সত্ত্বেও সমর্থকরা দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করেন। কানেকটিকাটের ২১ বছর বয়সী ছাত্র অ্যালান ম্যাকনিলি বলেন, ‘আমি আমার চোখের সামনে ইতিহাসের উন্মেষ দেখতে চেয়েছিলাম।’
এর আগে, ট্রাম্প আরলিংটন ন্যাশনাল সিমেট্রি সফর করেন। সেখানে আমেরিকার যোদ্ধাদের কবরস্থান রয়েছে। তিনি অজ্ঞাতনামা সৈনিকের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত জে.ডি. ভ্যান্স এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।
উপস্থাপনা পরিবর্তন: তুষারপাত এবং হিমশীতল আবহাওয়ার কারণে সোমবার ক্যাপিটল ভবনের বাইরের অনুষ্ঠানের পরিবর্তে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের স্থান রোটুন্ডায় স্থানান্তর করা হয়েছে। শেষবার এই স্থানে শপথ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৪০ বছর আগে, রোনাল্ড রিগানের সময়।
সোনালি যুগের ঘোষণা: ট্রাম্পের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, ‘আপনি তার উদ্বোধনী ভাষণে শুনবেন যে আমরা আমেরিকার একটি সোনালী যুগে প্রবেশ করছি।’
বিদায়ী প্রেসিডেন্টের আহ্বান: বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রোববার সাউথ ক্যারোলিনায় মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র দিবস উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তিনি আমেরিকানদের প্রতি 'ভবিষ্যতের প্রতি আস্থা' রাখার আহ্বান জানান এবং বলেন, ‘আমি এখনও আছি।’
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রভাব: ট্রাম্প তার প্রশাসনের আগে থেকেই আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছেন। টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে তিনি একটি চুক্তি সম্পাদনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া, গাজায় ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি ও যুদ্ধবিরতিতে বিদায়ী বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে ট্রাম্প ও তার দল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
(ঢাকাটাইমস/২০জানুয়ারি/ডিএম)

মন্তব্য করুন