দোসরদের প্রতি দয়া নয়, বয়কট করুন: নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:০৬
অ- অ+

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী বলেছেন, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলগুলোকে বলবো, দোসরদের প্রতি দয়া দেখাবেন না। সামাজিক, পারিবারিকভাবে তাদের বয়কট করুন। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের একমাত্র সমাধান হলো, তাদের বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। যারা খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

এসময় তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আমরা যদি আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলে এ নির্বাচনের আগেই সচেষ্ট না হই, তাহলে জনগণের সামনে গভীর সংকট অপেক্ষা করছে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশকে একটি গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে।

শুক্রবার সকালে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বৈরতান্ত্রিক ভিত্তি: জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ শঙ্কা প্রকাশ করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক কমিটি।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে খুনের দায়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দ্রুত তাদের নিবন্ধন বাতিল করুন। কারণ, খুনি হাসিনার বিচার এবং আওয়ামী লীগের ব্যানার এই দুটির সমাধান যদি আগামী নির্বাচনের আগে আমরা না করতে পারি, তাহলে মানুষগুলো শহীদ হয়ে যে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চেয়েছিল, সেই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে ফেরার কোনো পথ নেই।

তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালে আমাদের একটি ভূখণ্ডের লড়াই ছিল, একাত্তর সালে একটি জনআকাঙ্ক্ষার লড়াই ছিল। কিন্তু প্রতিটি লড়াইয়ে আমাদের পরবর্তীতে বিভিন্ন দল, গোষ্ঠী, পক্ষের দলদাস হয়ে থাকতে হয়েছে। আমাদের সামনে ১৯৯০ সালেও একটি সুযোগ এসেছিল, তিনটি দল নিজেদের মধ্যে একটি চুক্তি করেছিল। কিন্তু সেই চুক্তি থেকেও আমরা দেশের মানুষকে আকাঙ্ক্ষার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা নতুন একটি স্বপ্ন পেয়েছি। বাংলাদেশে যে স্বৈরতান্ত্রিক সংবিধানের কারণে আমরা আমাদের ২ হাজার ভাইকে হারিয়েছি, ৫০ হাজারের ওপরে ভাইদের অঙ্গহানি হয়েছে, তারা এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। আমরা আগামীতে বাংলাদেশে এ ধরনের কোনো রক্তপাত আর চাই না।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র সমাজের উদ্যোগের জাতীয় নাগরিক কমিটির যে দল আসছে, সেটি একটি মধ্যপন্থার দল হবে। যে দলটির কোনো বাইনারি প্রসেসের মধ্যে থাকবে না, মতাদর্শভিত্তিক বিভাজন থাকবে না। আমাদের সামাজিকভাবে ঐক্যের জায়গাটা গড়তে হবে। রাজনৈতিকভাবে এই ঐক্যের ওপর ভিত্তি করে যে মানুষগুলো আহত হয়েছে, শহীদ হয়েছে তাদের বিচারের দাবিতে রাজপথে আমাদের অবস্থান নিতে হবে। এই গণঅবস্থানের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলে দাবিতে আমাদের রাজপথে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ে শামিল হতে হবে।

আলোচনা সভায় বিচারপতি (অব.) এ এফ এম আবদুর রহমান বলেন, স্বৈরতন্ত্রের প্রবহমান অবস্থা আমরা ১৯৭২ সাল থেকেই দেখে আসছি। আমরা স্বৈরাচার বিতাড়ন করতে পারি কিন্তু স্বৈরতন্ত্রটা বিতাড়ন করতে পারি না। এটা আমাদের ব্যর্থতা। কেন ব্যর্থতা? ব্যর্থতা হচ্ছে আমাদের স্বৈরতন্ত্রটা সংবিধানের মধ্যেই আছে। কোন সংবিধানে? যে সংবিধানটা ১৯৭২ সালে প্রণয়ন করা হয়েছিল পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্যদের দ্বারা। সেটি একজন ব্যক্তিকে সামনে রেখেই প্রণয়ন করা হয়েছিল। আপনি সংবিধানটাকে যদি বিশ্লেষণ করেন তাহলে দেখবেন এই সংবিধানটাকে কোনোভাবেই একটা লিগ্যাল ডকুমেন্ট বলা যায় না। বলতে হবে একটা পরিবারকে প্রতিষ্ঠিত করতে কতগুলো লিখিত বিধান।

তিনি বলেন, এই ৭২ সংবিধানের প্রেমটা আমরা আপনাদের বুক থেকে সরিয়ে দিতে পারছি না। এই প্রেমটাকে সরিয়ে দিতে না পারলে বিপদ হবে। যদি সংবিধানের মধ্যেই আপনি থাকেন তাহলে কীভাবে এগোবেন?

এতে আরও বক্তব্য রাখেন, নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক তাজনূভা জাবীন, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, সদস্য টিনা নন্দী প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/১৪ফেব্রুয়ারি/এলএম/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আ. লীগকে ৫ আগস্ট দেশের জনগণ নিষিদ্ধ করেছে: আবু হানিফ 
ধানমন্ডিতে মিছিলের চেষ্টা, মহিলা লীগের নেত্রীসহ আটক ৩
বার্সেলোনায় যোগদানের সম্ভাবনা ছিল হামজার, ব্রিটিশ গণমাধ্যম
মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করলো ইলন মাস্কের ‘এক্স’
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা