লিবিয়ায় দালালের অত্যাচারে ভৈরবের যুবকের মৃত্যু

লিবিয়ায় দালালের অত্যাচারে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের সোহাগ মিয়া (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ৩০ মার্চ মৃত্যুর খবর পায় নিহতের পরিবার।
লিবিয়ায় নিহত সোহাগের রুমমেট দেলোয়ারের মাধ্যমে খবর পেয়ে তথ্য নিশ্চিত করেন নিহতের বড় ভাই সুজন মিয়া।
জানা যায়, পরিবারে তিন ভাইদের মধ্যে সোহাগ দ্বিতীয়। সোহাগের বড় ভাই সুজন ইতালী প্রবাসী। সোহাগ দীর্ঘ ৮ বছর কাতারে অবস্থান করছিলেন। ১ বছর আগে দেশে এসে বিয়ে করেন। দেশে থেকেই নরসিংদীর বেলাবো’র বারৈচা এলাকার সেন্টু মিয়ার মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকার চুক্তিতে ইউরোপের দেশ ইতালি যেতে লিবিয়ায় পাড়ি জমান সুজন মিয়া। ১ মাসের ভেতর ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইতালি পৌঁছার কথা থাকলেও দীর্ঘ ৭ মাস যাবত তাকে লিবিয়ায় আটকে রাখা হয়। এর মধ্যে সোহাগকে মানসিক ও শারীরিকভাবে অত্যাচার করে আসছে দালাল চক্র। এ অত্যাচারের ফলে ১ সপ্তাহ আগে অসুস্থ্য হলেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করায়নি দালালরা। গত ৩০ মার্চ রবিবার রাত ২টায় গুরুতর অসুস্থ হলে লিবিয়ার একটি হাসপাতালে তাকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ভাই সুজন মিয়া বলেন, ‘আমি ইতালিতে দীর্ঘদিন যাবত অবস্থান করছি। আমার ভাই কাতারে ভালো অবস্থানে ছিল। ১ বছর আগে দেশে এসে বিয়ে করে। তার পরিবারে নুসাইবা নামে ৩ মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ৭ মাস আগে দালালের সাথে ১৬ লাখ টাকা চুক্তিতে লিবিয়া যায় আমার ভাই। প্রথমে ৫ লাখ টাকা দেয়ার পর ১ মাস পর ইতালিতে পৌঁছানোর কথা বলে পুরো ১৬ লাখ টাকা নেই আমার কাছ থেকে। কিন্তু টাকা দেয়ার ৬ মাস অতিবাহিত হলেও আমার ভাইকে ইতালিতে পাঠায়নি। দালালের সাথে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করলেও কোনভাবেই যোগাযোগ করতে পারিনি। এদিকে আমার ভাইকে না খাইয়ে বিভিন্ন সময় মারধর করে ও নানাভাবে অত্যাচারে করে দালাল চক্র। আমার ভাই অসুস্থ হওয়ার পর তাকে চিকিৎসা করায়নি। আজ চিকিৎসার অভাবে আমার ভাই ওইখানে মৃত্যুবরণ করেছে।’
নিহতের স্ত্রী লিজা বেগম বলেন, ‘দালালের অবহেলায় আমার স্বামী মারা গেছে। আমি আমার তিন মাসের সন্তান নিয়ে কোথায় যাব। আমার পরিবারের কি হবে।’
স্বামীর লাশ ফিরে পেতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। এদিকে দালাল চক্রের বিচারের দাবিও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে দালাল সেন্টু মিয়ার সাথে (+২১৮০৯৪৪৬০২৮৯০) মোবাইল ফোনে কথা বলতে চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন জানান, সরকারিভাবে যদি নিহত যুবক প্রবাসে গিয়ে থাকে তাহলে বিষয়টি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও শ্রম কল্যাণ মন্ত্রণালয় দেখবে। নিহতের পরিবার আমার কাছে আসলে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা করবো।
নিহতের পরিবার যাতে মরদেহ ফিরে পাই সেই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
(ঢাকা টাইমস/০৬এপ্রিল/এসএ)

মন্তব্য করুন